দু’বছরের জন্য ‘বিশেষ ছুটি’ নিয়ে একটি পুরসভার চেয়ারম্যান হয়েছিলেন তিনি। সাধারণ ভাবে যে পদের মেয়াদ পাঁচ বছর। সেই ছুটির মেয়াদ ফুরোনোর সময় এগিয়ে আসতেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। রাজ্য সরকার তাঁকে অবিলম্বে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ বার চাকরি না চেয়ারম্যান পদ কোনটা রাখবেন তা নিয়ে বেজায় ফাঁপরে পড়েছেন কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান সিপিএমের তমাল দে।
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, চেয়ারম্যান থাকতে গেলে চাকরি ছাড়তে হবে। নতুবা ছুটির মেয়াদ শেষ হলেই অবিলম্বে চাকরিতে যোগ দিতে হবে। পুর দফতর সূত্রে খবর, তমালবাবু দু’বছরের জন্য বিশেষ ছুটির (এক্সট্রাঅর্ডিনারি লিভ) আবেদন করেন। তৎকালীন রাজ্য সরকার তাঁর ছুটি মঞ্জুর করে। তবে সেই ছুটির মেয়াদ শীঘ্রই শেষ হচ্ছে। এ বারেও তিনি বিশেষ ছুটির আবেদন করেছেন। কিন্তু বিষয়টি সরকারের শীর্ষস্তরের সিদ্ধান্ত। তাই ওই ছুটি মঞ্জুরের বিষয়টি দফতরের এক্তিয়ারে পড়ে না।
২০১০-এর পুর-নির্বাচনের পরে সিপিএম কাউন্সিলর তমাল দে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি ওই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা। তমালবাবু পেশায় ভাটপাড়া পুরসভার টাইপিস্ট। চেয়ারম্যান হয়ে ২০১০-এর ১ জুলাই থেকে তিনি ২ বছরের জন্য চাকরি থেকে ছুটি নেন। ৩০ জুন সেই ছুটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
পাঁচ বছরের চেয়ারম্যান পদের জন্য দু’বছরের ছুটি কেন? তমালবাবু বলেন, “বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। আগে বুঝিনি এমন সমস্যায় পড়তে হবে।” মঙ্গলবার ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের অর্জুন সিংহ বলেন, “তমালবাবুকে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য আজ চিঠি পাঠিয়েছি। জুলাই থেকেই ওঁকে কাজে যোগ দিতে হবে।” পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “তমালবাবুকে হয় চাকরি করতে, নয় ইস্তফা দিতে হবে। রাজনীতি করতে গিয়ে কোনও কর্মী কাজের ক্ষতি করবেন তা আর মানা হবে না।” তমালবাবু বলেন, “দু’বছর বিনা বেতন ছুটিতে ছিলাম। এখন পরিবারকে দেখার জন্য চাকরিই বেশি দরকার। চেয়ারম্যানের বিষয়টি নিয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে।”
তবে তমালবাবুর চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টি মানতে নারাজ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বামফ্রন্ট নেতৃত্ব। বামফ্রন্টের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মানস মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। তখন ছুটি মঞ্জুর হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়, বুঝতে পারছি না। তমালবাবু ১ জুলাই কাজে যোগ দেবেন। সঙ্গে চেয়ারম্যানও থাকবেন। বাধা এলে প্রথমে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলার চেষ্টা হবে। না হলে আইনের পথে যাব।” |