চিরন্তন রায়চৌধুরী • কলকাতা |
দিদির ছবি সাঁটা ভাইয়ের পাসপোর্টে, ভাইয়ের ছবি দিদিরটায়!
সেই গেরোয় বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ ‘হাতছাড়া’ হল হাওড়ার শিবপুর এলাকার মন্দিরতলার বাসিন্দা, বছর কুড়ির ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া শ্রেয়াংশ দুগারের। সমস্যার সুরাহায় পাসপোর্ট অফিসে হত্যে দিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেঙ্গালুরুর কলেজ থেকে চিনের একটি সংস্থায় ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়েছিলেন ওই কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শ্রেয়াংশ। তাঁর বাবা বিজয় দুগার জানান, গত বছর জুলাই মাসের শেষ দিকে ছেলে-মেয়ের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন তাঁরা। দু’জনের পাসপোর্ট পৌঁছয় এ বছর মার্চে। খাম খুলে হতবাক দুগার পরিবার। দেখা যায়, শ্রেয়াংশের ছবি ও স্বাক্ষর রয়েছে জ্যোতির পাসপোর্টে। আর শ্রেয়াংশের পাসপোর্টে রয়েছে জ্যোতির ছবি। অভিযোগ, ‘ভ্রম সংশোধন’-এর জন্য পাসপোর্ট অফিসে গেলে তাঁদের ফের নতুন করে আবেদন করতে বলা হয়। কোন তরফের ভুলে পাসপোর্টে ওই সমস্যা হয়েছে, তা জানাতেও অস্বীকার করা হয়। জ্যোতি বলেন, “আমরা ওঁদের অনুরোধ করেছিলাম, ভুলটা কী ভাবে হল, সেটা জানাতে। ফাইল দেখলেই সেটা বোঝা যেত।”
|
ভাই-বোনের পাসপোর্টে ছবি অদল-বদল। —নিজস্ব চিত্র |
তালেগোলে সময় কেটে গিয়েছিল। পাসপোর্টের ভুল থেকেই যায়। অভিযোগ, সেই কারণে চিনের সংস্থায় কাজের প্রশিক্ষণ নিতে যেতে পারেননি শ্রেয়াংশ। তিনি জানান, চিনা সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে তাঁর কথা হয়ে গিয়েছিল। পাসপোর্ট থাকলে মে মাসেই ওই সংস্থায় ইন্টার্নশিপ শুরু করতে পারতেন তিনি।
এ বিষয়ে সোমবার ভারপ্রাপ্ত ‘রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসার’-এর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। উত্তর দেননি ‘এসএমএস’-এরও। পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের ২৩ নভেম্বর থেকে চালু ব্যবস্থায় আবেদনকারীর ছবি, আঙুলের ছাপ সব পাসপোর্ট অফিসেই নেওয়া হয়। সমস্ত নথির ‘স্ক্যান’ও হয় সেখানেই। এ ক্ষেত্রে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু পুরনো নিয়মে আবেদনকারীকেই তাঁর ছবি ফর্মে লাগাতে হত। সে ক্ষেত্রে ভুল হলে পাসপোর্টে ‘গলদ’ থেকে যেতে পারে।
বিজয়বাবুর অভিযোগ, কলকাতার রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসারের কাছে এ বিষয়ে ২০ মার্চ এবং ২৫ মে দু’টি ই-মেল পাঠান তিনি। ই-মেলে ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠরত শ্রেয়াংশের বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাসপোর্টটি জরুরি বলেও উল্লেখ করেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন, নতুন পাসপোর্ট পাওয়ার নিয়মকানুন। কিন্তু, কোনও জবাব মেলেনি বলে অভিযোগ পেশায় জীবনবিমার এজেন্ট ও কর-পরামর্শদাতা বিজয়বাবুর। তিনি বলছেন, “ভুল ওঁদের বা আমাদের তরফেও হতে পারে। সেটা জানতে পারলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হত।” |