গাড়ির উপরে ভারী কিছু আছড়ে পড়ার শব্দে চমকে উঠেছিলেন আশপাশের লোকজন। আওয়াজ পেয়েই ছুটে এসে তাঁরা দেখেন, নিজাম প্যালেসের সব চেয়ে উঁচু বহুতলের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা সিবিআইয়ের পুলিশ সুপারের ইনোভা গাড়ির ছাদ দুমড়ে, উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে ভিতরে পড়ে আছেন রক্তাক্ত ও অচৈতন্য এক যুবক। ট্যাক্সিতে তুলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ। |
পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম রাজকুমার গ্রো (২৬)। বাড়ি রাজস্থানের জয়পুরে। এ বছর ১৫ মার্চ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগে (সাবসিডিয়ারি ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো) ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স’ অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। কর্মসূত্রে থাকতেন বনগাঁয়। অফিসের কাজে এ দিন নিজাম প্যালেসে যান তিনি। তার পরেই ওই ঘটনা। হাসপাতালে তাঁর পকেট থেকে একটি ‘সুইসাইড নোট’ও পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, তাতে ইংরেজিতে ওই যুবকের মা-বাবাকে উদ্দেশ্য করে লেখা রয়েছে, ‘‘আমাকে ক্ষমা করো। আমি আর এই যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না।’’ তবে ‘যন্ত্রণা’ বলতে তিনি পেশাগত অসুবিধা, নাকি ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বোঝাতে চেয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্ত চলছে।
নিজাম প্যালেসের ওই বহুতলের যে তলায় রাজকুমারের অফিস, সেখানকার কর্মীরা জানান, এ দিন তাঁকে ওই তলায় কেউ দেখতে পাননি। নিজাম প্যালেসের ১৮তলা ওই ভবনে কেন্দ্রীয় সরকারের বেশ কিছু দফতরের অফিস রয়েছে। কাজের দিনে সব ক’টিতেই ভিড় ছিল। কোন তলা থেকে ওই যুবক নীচে পড়েছেন, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই বহুতলের প্রায় কোনও জানলাতেই গ্রিল নেই।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক নিরাপত্তাকর্মী বলেন, “হঠাৎ প্রচণ্ড জোর শব্দ। ভেবেছিলাম, উপর থেকে ভারী কিছু পড়েছে। ছুটে গিয়ে দেখি, গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে রক্তাক্ত অবস্থায় এক জন পড়ে রয়েছেন। সামনের দু’টো সিটের মাঝখানে ওঁর মাথাটা ঢুকে ছিল। সারা শরীর রক্তে ভাসছিল। একটা পা ছিল উইন্ডস্ক্রিনের উপরে, আর একটা ভিতরের সিটে। হাত দু’টোর হাড় দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছিল। আশপাশের গাড়িগুলির উপরেও রক্তের দাগ ছিটকে যায়।” ঘটনার পরে এসআইবি দফতরের কর্মীরাই রাজকুমারকে ট্যাক্সিতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যান। |