ভিড়ের চাপে দরজা-বিভ্রাট, অফিসটাইমে বন্ধ মেট্রো
রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের ভিড়ের চাপে মেট্রোর দরজা বন্ধ হচ্ছে না, এ ছবিটা চেনা। কিন্তু সাধারণ কাজের দিনে অফিসটাইমের ভিড়েই মেট্রোর দরজার এমন দশা আগে দেখেনি শহর। মঙ্গলবার যা দেখল অফিসের ব্যস্ত সময়ের ভিড়ে ঠাসা দমদম মেট্রো স্টেশন।
সকাল ৯টা ২০। প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো ট্রেনটায় তখন এত লোক যে, কার্যত তার নড়ারই ক্ষমতা নেই। কারণ, ভিড়ের চাপে দরজাই বন্ধ করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেন, ‘বেশি ভিড় হয়ে গিয়েছে। দরজা বন্ধ হচ্ছে না। কিছু লোক নেমে যান।’ কিন্তু কে কার কথা শোনে? ট্রেন চলবে না জেনেও কারও হেলদোল নেই। সবাই ভাবছেন, কেউ না কেউ তো নামবে। ঠিক যেন ঘণ্টা বাঁধার গল্প। সময় যাচ্ছে, ঘোষণাও চলছে। নাছোড়বান্দা যাত্রীরাও। ভাবখানা যেন, কষ্ট করে এক বার যখন উঠেই পড়েছি, তখন আর নামব কেন?
ওই ট্রেনটির ছাড়তে দেরি হওয়ায় গোটা মেট্রো-পরিষেবাই বিঘ্নিত হয়। এ হেন সমস্যায় কী করা উচিত, তা নিয়েও কিছুক্ষণ ধন্দে ছিলেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। এক অফিসারের কথায়, “জোর করে তো আর যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া যায় না। তাই বারংবার বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি।” সকাল ৯টা ২০ থেকে প্রায় ২৪ মিনিট এ ভাবেই কাটে। ততক্ষণে গড়িয়া থেকে দমদমের মাঝে সব স্টেশনগুলিতে উপচে পড়া ভিড়। এই ঘটনার জেরে পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পরিষেবা। অফিসটাইমে মেট্রো বন্ধ থাকায় রীতিমতো বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। কালীঘাট স্টেশনে অপেক্ষারত এক যাত্রীর অভিযোগ, “ট্রেন বন্ধ থাকার কারণটাও সময়ে ঘোষণা করেননি কর্তৃপক্ষ। এতে মানুষের অসুবিধা আরও বেড়েছে।”
এমন ঘটনা ঘটল কী করে? মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রত্যুষ ঘোষ জানান, অফিসটাইমে দমদম থেকে প্রতিদিনই হাজারখানেক যাত্রী মেট্রোয় চড়েন। তাঁদের অনেকেই এসি কোচে যেতে পছন্দ করেন। এ দিন দমদমের ডাউন প্ল্যাটফর্ম থেকে কবি সুভাষ স্টেশনমুখী একটি এসি কোচ ছাড়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। সিঁড়ি দিয়ে উঠেই সামনে যে কামরা পড়ে, সেটিতেই বেশি ভিড় ছিল। ৯টা ২০ নাগাদ ট্রেনটি ছাড়ার সঙ্কেত পায়। কিন্তু ‘অতিরিক্ত’ যাত্রী ওঠায় দরজা বন্ধ করা যায়নি। তিন বার দরজা বন্ধ করার চেষ্টা করেও বিফল হতে হয়। ফলে চালানোই যায়নি ট্রেনটি। এর পরে কিছু যাত্রীকে নেমে যাওয়ার অনুরোধ করেও কোনও ফল হয়নি। প্রায় ২৪ মিনিট পুরোপুরি বন্ধ থাকে মেট্রো চলাচল।
প্রত্যুষবাবু জানান, দমদম থেকে ট্রেন ছাড়তে না-পারায় পুরো পরিষেবাই ভেঙে পড়তে থাকে। খবর আসে প্রতিটি স্টেশন যাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা। ওই অবস্থায় তখন দমদমের আপ প্ল্যাটফর্মে যে ট্রেন ঢুকেছিল, সেটিকেই ডাউনে চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো সমস্ত যাত্রীরা ওই প্ল্যাটফর্মে পৌঁছনোর পরে ৯টা ৪৪ মিনিটে ফের ট্রেন চলে। প্রত্যুষবাবু জানান, যাত্রীদের ধাক্কায় ডাউন প্ল্যাটফর্মের ট্রেনটির দরজা খারাপ হয়ে যাওয়ায় সেটি নোয়াপাড়া কারশেডে পাঠানো হয়। মেট্রো সূত্রের খবর, এই ঘটনার জেরে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বিপর্যস্ত হয় পরিষেবা। দমদমের আপ প্ল্যাটফর্ম থেকে ডাউনের ট্রেন চলায় আপ লাইনের ট্রেনগুলিকে বেলগাছিয়া, শোভাবাজার, গিরিশ পার্ক-সহ নানা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। যদিও প্রত্যুষবাবু জানান, যাত্রীদের অসুবিধার কথা ভেবে ওই সময়ে ৬ মিনিটের পরিবর্তে ৪ মিনিট অন্তর ট্রেন চলে। তাতে যাত্রীর চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে তাঁর দাবি। তিনি আরও জানান, ১০টা ৩৩ মিনিট থেকে দমদমের ডাউন প্ল্যাটফর্ম থেকে ফের ট্রেন চালানো শুরু হয়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.