ঘোষণা সার, কোনও আইনই নেই ফড়ে নিয়ন্ত্রণে
শুধুই তর্জন-গর্জন! লড়াইয়ে নামার জন্য দরকারি অস্ত্রই নেই হাতে।
খোলা বাজারে সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণে ফড়েদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। অভিযোগ, এই মধ্যস্বত্বভোগী ফড়েরাই কৃত্রিম ভাবে দাম বাড়িয়ে চলেছেন। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা কোন আইনে? অরূপবাবুর দফতরই এই প্রশ্ন তুলেছে। দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন, ফড়েদের জন্য দাম বাড়ছে জেনেও সরকারের বিশেষ কিছু করার নেই। কারণ প্রয়োজনীয় আইনই নেই প্রশাসনের হাতে।
বাজারে জিনিসপত্রের দামে আগুন লাগলে মাঝে মাঝে ফড়েদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেওয়ার হুমকি দিতেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত। কিন্তু বাম আমলে এক জন ফড়ের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এমন কোনও সরকারি তথ্য নেই। এখন অরূপবাবুও ফড়েদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন। কিন্তু কীসের ভিত্তিতে তা সম্ভব, সেই প্রশ্ন তুলেছে তাঁরই দফতর।
গোটা রাজ্যে সব্জির বাজারে লাগামছাড়া দাম বেড়ে চলেছে। মঙ্গলবার মহাকরণে কৃষি বিপণন মন্ত্রী সাংবাদিকদের হাতে পাইকারি ও খুচরো বাজারে জুন মাসের সব্জির দামের যে তথ্য পেশ করেছেন, তাতেও এই ছবি উঠে এসেছে। এখন উত্তরবঙ্গে বর্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও বর্ষার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে ‘প্রকৃত অবস্থা’ বুঝতে বাজারে টাস্ক ফোর্স-কে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি নিজেও গ্রাম এবং বাজারে যাবেন বলে জানিয়েছেন। মন্ত্রী অবশ্য দেরির কথা স্বীকার করেছেন। তবে তাঁর যুক্তি, “বিধানসভা চলছে বলে ব্যস্ত রয়েছি। তাই শুরু করা যায়নি।”
বাম আমলের শেষ দিকে খোলা বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার নিজেই আলু বেচতে শুরু করেছিল। নতুন সরকারের অবশ্য তার প্রয়োজন নেই। মন্ত্রীর কথায়, “এর কারণ, আলুর ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগী উঠে গিয়েছে। আলু চাষিরা মাঠেই কিলোপ্রতি ৮.৫০ টাকা দাম পাচ্ছেন। এর পর হিমঘর, পাইকারি বাজার হয়ে খোলা বাজারে সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ টাকায়। এটা দাম বৃদ্ধি নয়।” তবে অন্য সব্জির ক্ষেত্রে কম বৃষ্টিপাত, চাষ শুকিয়ে যাওয়া, কৃষি সামগ্রীর জোগানের অভাব ছাড়াও রয়েছে ফড়েদের হাতযশ। তাঁরাই কৃত্রিম ভাবে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
শীতের মরসুমেও কাঁচা আনাজের দাম বাড়া রুখতে টাস্ক ফোর্স নামিয়েছিল সরকার। কিন্তু কী ব্যবস্থা নিয়েছিল তারা? মন্ত্রীর জবাব, “গত বার কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কারণ, টাস্ক ফোর্স অভিযান শুরুর ১৫ দিনের মধ্যে সব্জির দাম পড়ে গিয়েছিল। তাই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হয়নি।” এ বার ফড়েদের দাপট কমাতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। রাজ্যের পাইকারি ও খোলা বাজারে যে সব্জির দাম বেড়েই চলেছে, মন্ত্রীর দেওয়া দু’বছরের দামের তুলনা করলেই তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, খোলা বাজারে গত বছরের জুন মাসে বেগুনের দাম ছিল প্রতি কিলো ২৮ টাকা, এ বার ৪০ টাকা। কাঁচা লঙ্কার দাম ছিল ৫০ টাকা, এ বার ১১০ টাকা। করলা ছিল ২৪ টাকা, এ বার ৪০ টাকা। রসুন ছিল ৫৫ টাকা। এ বার ৬০ টাকা। তবে ঢ্যাঁড়শ, পটল, ঝিঙের মতো কোনও কোনও সব্জির দাম গত জুনের তুলনায় এই জুনে কম বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী। তবে মন্ত্রীর এই হিসাব অবশ্য শিয়ালদহের বৈঠকখানা বাজারের। তথ্যভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য, এই বাজার থেকে কলকাতা ও আশপাশের জেলাগুলির খোলা বাজারে কাঁচা আনাজ যায়। স্বভাবতই স্থানীয় বাজারগুলিতে দাম আরও বেশি। মন্ত্রী আলুর বর্তমান দামে ‘সন্তুষ্ট’ থাকলেও তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাইকারি ও খোলা বাজারে আলুর দাম গত জুন মাসের তুলনায় এ বার প্রায় দ্বিগুন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.