বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ইউসুফ রাজা গিলানি সরে যাওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন রাজা পারভেজ আশরাফ। কিন্তু, পাকিস্তানের বিদ্যুৎ কেলেঙ্কারি ও তাঁর গ্রামের বাড়িতে হেলিপ্যাড তৈরি নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন আশরাফ।পাকিস্তানের বিদ্যুৎ সঙ্কট নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে পাক সরকার। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় পাকিস্তানে। তাই দ্রুত বেশ কিছু কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির সরকার।
কিন্তু, ‘রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট’ হিসেবে পরিচিত এই কেন্দ্রগুলিকে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠে। সব কেন্দ্রের অনুমতি বাতিল করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রাক্তন বিদ্যুৎমন্ত্রী হিসেবে এই তদন্তের মুখে পড়েছেন রাজা পারভেজ আশরাফ।
দুর্নীতির প্রশ্নে প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকেও জেরা করতে পারে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবেলিটি ব্যুরো (ন্যাব)। ন্যাবের মুখপাত্র জাফর খান জানিয়েছেন, আশরাফের বিরুদ্ধে তদন্ত এখনও চলছে। তাঁকে জেরা করতে ডাকা হবে, না কিছু প্রশ্নের জবাব তাঁর কাছ থেকে লিখিত ভাবে চাওয়া হবে তা নিয়ে ন্যাব এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিরোধী দলগুলি এই বিষয় নিয়ে সোচ্চার হতে পারে বলে আশঙ্কা সরকারের।
আদতে রাওয়ালপিন্ডির কাছে সাংগ্রাল গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ। সেই বাড়িতে একটি হেলিপ্যাড তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য, আশরাফ রাওয়ালপিন্ডি থেকে সাংগ্রালে সড়কপথে গেলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা কঠিন হবে। কিন্তু, এই প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। পিএমএল-এন নেতাদের দাবি, দেশের আর্থিক সঙ্কট ও বিদ্যুৎ সমস্যার কথা ভুলে আশরাফ প্রধানমন্ত্রী পদের সুযোগ-সুবিধে নিতেই ব্যস্ত।
তবে সমস্যা নিয়ে যথেষ্টই উদ্বিগ্ন আশরাফ। আজ পাক কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম যোগ দেন তিনি। আশরাফের বক্তব্য, এখন দেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন। তাই সব গণতান্ত্রিক শক্তির উচিত একসঙ্গে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা। জঙ্গিদের কড়া হাতে মোকাবিলা করা হবে বলে জানিয়েছেন নয়া প্রধানমন্ত্রী। বিদেশনীতির ক্ষেত্রে আপাতত ভারসাম্য বজায় রাখতে চান তিনি। আশরাফের দাবি, ভারত, আফগানিস্তান, আমেরিকা, চিন- সব দেশের সঙ্গেই ভাল সম্পর্ক রাখতে চায় তাঁর সরকার। ন্যাটো বাহিনীর হামলায় পাক সেনা নিহত হওয়ার পরে আফগানিস্তানে রসদ সরবরাহের পথ বন্ধ করে দিয়েছিল ইসলামাবাদ। আশরাফের মতে, আমেরিকার উচিত এই বিষয়ে নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করা। |