কলেজে-কলেজে ছাত্র ভর্তি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তথা টিএমসিপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অব্যাহত।
ক’দিন আগেই ফর্ম তোলা নিয়ে বিবেকানন্দ কলেজে গোষ্ঠী সংঘর্ষ হয়েছিল। এ বার ফর্ম জমা ও মেধা তালিকায় নাম তোলার আবেদনপত্র জমা দেওয়া নিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত হলেন সাত ছাত্র। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজ কলেজে পাশকোর্সের ফর্ম জমা ও অনার্সের মেধা তালিকায় এখনও ঠাঁই না পাওয়া প্রার্থীদের আবেদন জমা নেওয়া হচ্ছিল। পার্ট-২ পরীক্ষাও চলছিল। ওই সময়ে একটি ছাত্র পরীক্ষার হলের সামনে দিয়ে গিয়ে অফিসে ঢোকার চেষ্টা করলে ইনভিজিলেটর বাধা দেন। সে সময়ে টিএমসিপি নেতা সুবায়ু সাহার অনুগামী বলে পরিচিত অভিজিৎ ধীবর ছাত্রটিকে চড় মারেন বলে অভিযোগ।
সুবায়ুর বিরোধী টিএমসিপি নেতা সন্তোষ সিংহের গোষ্ঠীর লোকজনকে খবর দেয় ছাত্রটি। এর পরেই সন্তোষ বহিরাগত লোকজন নিয়ে কলেজে ঢুকে সুবায়ু গোষ্ঠীর মহম্মদ আজিজ, পিঙ্কু ক্ষেত্রপাল, অভিজিত ধীবরকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। |
সুবায়ু গোষ্ঠীর ছাত্রেরাও সন্তোষের ছেলেদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। রড লাঠি নিয়ে মারপিট চলে। সন্তোষ-গোষ্ঠীর সিদ্ধার্থ রায় ও ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি আভোরকিশোর লাহিড়ি-সহ পাঁচ জন আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে দুই গোষ্ঠীর লোকেদের কলেজ থেকে বের করে দেয়।
টিএমসিপি-র রাজ কলেজ ইউনিট সভাপতি রাজা ঘোষ ও পর্যবেক্ষক নরুল আলম বলেন, “ওই ছেলেটি জোর করে ঢুকতে গিয়ে অন্যায় করেছে। তাকে বারবার নিষেধ করা হয়েছিল। সে ইনভিজিলেটরকে হেনস্থা করায় অভিজিৎ ধীবর তাকে বাধা দেয়। তবে দুই গোষ্ঠীর এ ভাবে সংঘর্ষে জড়ানো উচিত হয়নি।” সুবায়ু গোষ্ঠীর মহম্মদ আজিজের অভিযোগ, “সংঘর্ষ কলেজের ভিতরেই সীমাবদ্ধ ছিল। সন্তোষ বহিরাগতদের নিয়ে এসে কলেজের পরিবেশ নষ্ট করে।” সন্তোষের পাল্টা বক্তব্য, “অভিজিৎ ধীবরেরা আদৌ কলেজের ছাত্র নয়। তবুও কলেজে এসে দাদাগিরি করে। আমাদের ছেলেদের মারধর করে প্রমাণ করল, ওরা শান্তি চায় না।” টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অশোক রুদ্রও দাবি করেন, এটা ছাত্রদের সংঘর্ষ নয়। বহিরাগতেরা কলেজ দখল করতে যাওয়াতেই এই ঘটনা।
রাজ কলেজের অধ্যক্ষ সুভাষচন্দ্র নন্দীর বক্তব্য, “আমি নিজে ঘটনাটি দেখিনি। জরুরি বৈঠকে ছিলাম। তবে কিছু বহিরাগত পেশিশক্তি ব্যবহার করে গোলমাল বাধিয়েছে।” পুলিশ জানায়, অধ্যক্ষ অভিযোগ দায়ের না করার এই সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। অধ্যক্ষ বলেন, “কলেজে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ও ভর্তির প্রক্রিয়া চলছে। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনের কাউন্সেলিং। তাই আপাতত পুলিশে কিছু জানাইনি। পরীক্ষা মিটলে অবশ্যই অভিযোগ দায়ের করব।” |