|
|
|
|
অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে উদ্যোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শহরে অবৈধ নির্মাণ ভাঙা নিয়ে শিলিগুড়ি পুরসভায় কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের মেয়র পারিষদদের মতানৈক্যের জেরে সেই কাজ বারবার থমকে পড়ছে। এ বার তাই সেই দায়িত্ব পুর কমিশনারের উপর ছাড়তে চাইছেন তাঁরা। শুক্রবার মেয়র পারিষদের বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। যে সমস্ত অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দায়িত্ব এ বার তুলে দেওয়া হচ্ছে কমিশনারের উপরেই। পাশাপাশি ‘প্ল্যান’ পাশের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে সমস্ত কাজ হচ্ছে বলে লিখিত বয়ান দিতে হবে ‘লাইসেন্স বিল্ডিং সার্ভেয়ার (এলবিএস)-দের। কোন ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা এমনকী লাইসেন্স বাতিল করার কথাও ভাবছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভারই একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই শতাধিক ক্ষেত্রে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ নিয়ে তালিকাও তৈরি করেছে বিল্ডিং বিভাগ। অভিযান চালিয়ে সেগুলি ভাঙার কাজ শুরু করাও হয়েছিল। প্রথম দফায় কিছু অবৈধ নির্মাণ ভাঙার পর তা বন্ধ হয়ে যায়। কাউন্সিলের একাংশ দাবি তোলেন কোনও বিশেষ ওয়ার্ডে সমস্ত অবৈধ নির্মাণ একবারে না ভেঙে বিভিন্ন ওয়ার্ড মিলিয়ে একটি দুটি করে ভাঙা হোক। পরবর্তীতে সেবক রোডে একটি নার্সিংহোমের একাংশে অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হলে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আসে। অভিযান বন্ধ হলে তা নিয়ে প্রকাশেই পুরসভার সমালোচনা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। এর পর ২৯ টি অবৈধ নির্মাণের তালিকা তৈরি করে সেগুলি আগে ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। মূলত ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা ওই সমস্ত অবৈধ নির্মাণ দ্রুত ভাঙার দাবি তোলেন। তা নিয়ে বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদের সঙ্গে মতানৈক্য দেখা দেয়। তাতে ফের বন্ধ হয়ে পড়ে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ। এর পর বিল্ডিং বিভাগ-সহ কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মেয়র পারিষদদের নেতৃত্বে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে অভিযান হয়। মহাবীরস্থানে এক প্লাস্টিক ব্যবসায়ীর দোকানে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গেলে তিনি বাধা দেন বলে অভিযোগ জানানো হয় পুলিশে। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হলে থানায় গিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ায় কংগ্রেসের মেয়র পারিষদ এবং কাউন্সিলরদের একাংশ। তা নিয়ে ক্ষমতাসীন জোটের দুই শরিক কংগ্রেস, তৃণমূলের মধ্যে চাপান উতোর তুঙ্গে ওঠে। তার জেরেই কয়েক মাস ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ। বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি এবং শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে বার অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠলে জেনে বুঝেও পুর কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেননি। ভোট-বাক্সের কথা ভেবেই কোনও পক্ষকে তাঁরা যে চটাতে চাইছেন না তা স্পষ্ট বলেই মনে করছেন বাসিন্দাদের একাংশ। এ দিন বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বর্ষায় নিকাশি সাফাইয়ের কাজে ১৫০ জন বাড়তি কর্মী ৩ মাসের জন্য কাজে লাগানো হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে এমনিতেই গড়ে ২০ জন করে কর্মী কাজ করেন। তার সঙ্গে ৫টি বরোতে বাড়তি কর্মী ভাগ করে দেওয়া হবে। বর্ষায় বিভিন্ন রাস্তায় গর্ত হলে বা আগে থেকে গর্ত থাকলে বিশেষ পদ্ধতিতে দ্রুত তা মেরামত করা হবে। এমনিতে বর্ষায় রাস্তা সংস্কারের কাজ করা যায় না। বিশেষ ওই পদ্ধতিতে সমস্যা হবে না বলেই এক আধিকারিক জানিয়েছেন। |
|
|
|
|
|