|
|
|
|
ধসে রাস্তা বন্ধ ছাঙ্গু, নাথু লা-র |
কৌশিক চৌধুরী • শিলিগুড়ি |
একের পর এক ধসের জেরে রাস্তা বসে যাওয়ায় সিকিমের ছাঙ্গু, নাথুলা যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে সাধারণ বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটকদের চলাচল ওই রাস্তায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সিকিম প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ১৩ জুন থেকে গ্যাংটক থেকে ছাঙ্গু হয়ে নাথুলা যাওয়ার ওই জহরলাল নেহেরু মার্গটি বন্ধ রয়েছে। ওই রাস্তার গ্যাংটক থেকে ৮ মাইল অবধি পাহাড়ি রাস্তা মোটামুটি ভাল থাকলেও ৯ মাইল থেকে ১৭ মাইল অবধি রাস্তায় ছোটবড় পাঁচটি জায়গায় ধস নেমেছে। পাশাপাশি, রাস্তাটি চওড়া করার কাজও বর্ষার জেরে ব্যাহত হয়ে পড়েছে। সেনা বাহিনীর ছোট গাড়ি পাহাড়ি রাস্তায় দিয়ে কোনও ক্রমে চলাচল করছে। সেনা বাহিনীর তরফে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (বিআরও) রাস্তাটি দেখভালের দায়িত্বে আছে। তবে কবে ওই রাস্তা খুলতে পারে তা নিয়ে ওই রাজ্যের প্রশাসন, বিআরও কেউ কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না। শুক্রবার পূর্ব সিকিমের জেলাশাসক আনন্দন বলেন, “ভারত-চিনের সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির ধসের জেরে আপাতত বন্ধ রয়েছে। টানা বৃষ্টিতে ধস সরিয়ে রাস্তা সারাইকে কাজে সমস্যা হচ্ছে। আমরা প্রতিদিনই খোঁজখবর নিচ্ছি। দুর্যোগের মধ্যেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিআরও-র কর্মীরা চেষ্টা চালাচ্ছে।” গত ২৯ মে ওই রাস্তায় ধস নেমে আটকে পড়েন প্রায় আড়াই হাজার দেশি বিদেশি পর্যটক। রাতভর লাগোয়া সেনা ছাউনিতে পর্যটকদের রাখা হয়। পরেরদিন রাস্তা খুলে পর্যটকদের গ্যাংটকে ফিরিয়ে আনা হয়। গ্যাংটক থেকে ৫৬ কিলোমিটার ভারত-চিনের নাথুলা সীমান্ত। নাথুলা ছাড়াও ওই এলাকায় বাবা মন্দির, ছাঙ্গু লেক রয়েছে। ওই সমস্ত এলাকায় পৌঁছানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটকদের জহরলাল নেহেরু মার্গকেই ব্যবহার করতে হয়। রাস্তাটি বন্ধ থাকায় পর্যটকেরা তো বটেই বাসিন্দারাও সমস্যা পড়েছেন। গত ১৩ জুন থেকে পর্যটকদের ছাঙ্গু, নাথুলা যাওয়ার ‘পারমিট’ও বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এতে আগাম পরিকল্পনা করেও সিকিমে এসে সমস্যায় পড়েছেন পর্যটেকরা। নাথুলা, ছাঙ্গু এবং বাবা মন্দিরের মত এলাকাগুলিতে যেতে না পেরে তাঁরা গ্যাংটককে কেন্দ্র করে আশেপাশের এলাকায় ঘুরছেন। পূর্ব সিকিম প্রশাসনের কয়েকজন আধিকারিক জানান, সাধারণ প্রতি বছর ১৫ জুন নাগাদই সিকিমে বর্ষা ঢুকে পড়ে। শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী ৩১-এ জাতীয় সড়কটি ছাড়াও সিকিমের বিভিন্ন সড়কে ছোট বড় ধস নামে। যত দ্রুত সম্ভব তা সারিয়ে রাস্তাও খোলা হয়। বিষয়টি জানার পরেও গরমের একেবারে শেষ পর্যটন মরশুমে সিকিমে আসেন অনেকে। কিন্তু নাথুলার রাস্তাটির মত পরিস্থিতি এ বারই প্রথম তৈরি হয়েছে। তার উপরে গত বছর সেপ্টেম্বরে ভূমিকম্পের জেরে বহু পাহাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি হলেই ওই সমস্ত এলাকা দিয়ে পাথর, মাটি গড়িয়ে রাস্তায় পড়ছে। পূর্ব সিকিমের জেলাশাসক জানান, সেবক থেকে নাথু লা অবধি ‘ডবললেন’ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই রাস্তায় ধস, বৃষ্টিতে কাজ করা যাচ্ছে না। সিকিমের ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লুকেন্দ্র রসইলি এবং ইস্টার্ন হিমালয়্যান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “বর্ষার সিকিমের পাহাড়, ফুলের জন্য কিছু পর্যটক আসেন। তবে রাস্তা বন্ধ থাকায় পর্যটকদের হতাশ হতে হচ্ছে। নাথুলা, ছাঙ্গু তাঁরা যেতে পারছেন না।” |
|
|
|
|
|