প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের দরজায় ঘুরছেন অন্তঃসত্ত্বা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বসিরহাট |
স্বামীর অত্যাচারের প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের দরজার দরজায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন সন্তানসম্ভবা এক মহিলা। উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার ফতুল্যপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার নাম রেশমা বিবি। চাহিদামতো নগদ টাকা-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র দেওয়া সত্ত্বেও আরও যৌতুকের দাবিতে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। রেশমা বিবি জানান পুলিশের কাছে তিনি যে অভিযোগ করেছেন তা তুলে না নিলে তাঁকে খুন করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রসবের জন্য তিন দিনের মধ্যে রেশমাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন চিকিৎসক। এই পরিস্থতিতে অসহায় রেশমা তাঁর মাকে নিয়ে চিকিৎসার খরচ জোগাড় এবং স্বামীর কাছে বিচারের আসায় পুলিশ প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরছেন।
বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার বলেন, “মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁরা বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। প্রধান অভিযুক্ত রেশমার স্বামী রাজু মণ্ডলের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তবে ওই মহলা আমাদের কাছে আবেদন করলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করা হবে।” |
|
রেশমা বিবি।—নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক বছর আগে রেশমাকে দেখে পছন্দ হয়ে যাওয়ায় বাদুড়িয়ার পশ্চিম জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা রাজু মণ্ডল তাঁকে বিয়ে করে। স্বামীর মৃত্যুর পরে তিন মেয়ে এবং ছোট ছোট দুই ছেলেকে নিয়ে কোনও রকমে অনেক কষ্টে সংসার চালাচ্ছিলেন রমিশা বিবি। দুই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পরে সামান্য যে জমি ছিল তা বন্ধক দিয়ে রাজুর সঙ্গে ছোট মেয়ে রেশমার বিয়ে দেন রমিশা। রমিশার দাবি, মেয়ের বিয়েতে তিনি নগদ ৭০ হাজার টাকা, সাইকেল-সহ জামাইয়ের চাহিদামতো অন্যান্য জিনিসপত্র দিয়েছিলেন। রমিশার অভিযোগ, বিয়ের তিন মাসের মধ্যে স্বমূর্তি ধরে রাজু। একটি দোকান করে দেওয়ার জন্য স্ত্রীর উপরে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে সে। রেশমা বলেন, “আমাদের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে মা জামাইয়ের এই আবদার মেটাতে পারেননি। সে জন্য সে আমার উপরে শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করে।” পুলিশের কাছে অভিযোগে রেশমা জানিয়েছেন অন্ত্বসত্তা হয়ে যাওয়া পরে তাঁর সন্তানকে নষ্ট করে তাঁকে মুম্বই নিয়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন। সেই ভয়েই রাজু মণ্ডলের ঘর ছেড়ে চলে আসেন রেশমা। রাজু মণ্ডলের বাবা ওয়াজেদ অবশ্য বলেন, “আমার ছেলের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা ও সাজানো।” |
|