গ্রীষ্মের পরে এ বার নির্মলচরের আতঙ্ক বর্ষা
র্ষায় বানভাসি আর গ্রীষ্মে জলকষ্ট। বাংলাদেশের সীমানা লাগোয়া পদ্মার দু’টি শাখা নদী বরাবর জেগে ওঠা প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের নির্মলচরের এটিই বারোমাস্যা।
গ্রীষ্মের পরে এ বার তাঁদের আতঙ্ক বর্ষাও।
কিন্তু আষাঢ় চলে এলেও দু’এক পশলার বেশি বৃষ্টি হয়নি নির্মলচরে।
তাই গরমের কষ্টের জের এখনও রয়ে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গরমে পাট ও তিল চাষের খুব ক্ষতি হয়েছে। তার প্রভাব থাকবে সারা বছরই।
ডিহি ডুমুরিয়া, দক্ষিণ জাজিরা, জাজিরা, চর ডুমুরিয়া, ঝাউবোনা-সহ মোট ৬টি মৌজা নিয়ে গঠিত নির্মলচর। জনসংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। নির্মলচর লাগোয়া ইসলামপুর থানা এলাকার চর দৌলতপুরে বাস করেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অনন্ত মণ্ডল। তিনি বলেন, “ওই দুর্গম এলাকার বাসিন্দাদের জন্য রয়েছে মাত্র একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সেটিও সপ্তাহে এক দিন খোলা হয়। ফলে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে গরুর গাড়িতে করে ৮ কিলোমিটার বালির চর পার হয়ে মূল ভূখণ্ডে পৌঁছে আরও দু’কিলোমিটার যাওয়ার পরে মিলবে নশিপুর গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র।” এখনও সেখানে তৈরি হয়নি পাকা রাস্তা। আসেনি বিদ্যুৎ।
আর সেই সঙ্গে রয়েছে পদ্মা পারের এই এলাকায় ভাঙনের ভয়।
প্রায় সাড়ে তিন দশক আগে ভগবানগোলার আখরিগঞ্জ ও চর কুঠিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত দু’টিতে সর্বগ্রাসী পদ্মার ভাঙন শুরু হয়। মাত্র বছর পাঁচেকের ভাঙনে মুর্শিদাবাদ জেলার মানচিত্র থেকে চর কুঠিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতটিই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ফলে এ জেলার ২৫৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত কমে দাঁড়ায় ২৫৪টিতে। লাগোয়া আখরিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চেয়েতের অনেক বসতিও ওই সময় পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। অন্য দিকে, বাংলাদেশের রাজসাহি জেলার সীমানায় পদ্মার বুকে জেগে ওঠে নির্মলচর। পদ্মার শাখা নদী দিয়ে চারদিক বেষ্টিত নির্মলচর। সেখানে বসতি গড়ে চর কুঠিবাড়ি ও আখরিগঞ্জ থেকে পদ্মার ভাঙনে ছিন্নমূল হওয়া উদ্বাস্তু পরিবারের লোকজনেরা। নদী পাড়ের মূল ভখণ্ড থেকে নির্মলচরের দূরত্ব পদ্মার উত্তাল জলপথেও ৮ কিলোমিটার। গ্রীষ্মের তপ্ত বালিতেও ৮ কিলোমিটার। সেই তুলনায় বাংলাদেশের রাজসাহি কিছুটা কাছে। ৪-৫ কিলোমিটার দূরে। নির্মলচর গ্রীষ্মে কেবল ধূ ধূ বালি। আর বর্ষায় জলবেষ্টিত বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। সেই দ্বীপের অর্থকরী ফসল কলাই, ধান, পাট, করলা ও পটল। আখরিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ফরওয়ার্ড ব্লকের সারথি মণ্ডলের বাড়ি নির্মলচরে। তাঁর স্বামী ধরণী মণ্ডল বলেন, “গ্রীষ্মে জমিতেই পুড়ে নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে পাট, করলা, পটল ও তিলের চাষ। সঙ্গে পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট।”
কিন্তু গ্রীষ্মের আতঙ্ক যখন এখনও কাটেনি, সামনে এসে পড়েছে বর্ষার উদ্বেগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, পদ্মা ফুঁসে উঠলে তাঁদের আবার বাড়ি-জমি ডুববে।
জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “মাঝখানে পদ্মা থাকায় প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনায় রাস্তা করা যাচ্ছে না। সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পে রাস্তা করার জন্য পঞ্চায়েত সমিতি যদি প্রস্তাব দেয়, তা হলে আমরা যত তাড়াতাড়ি তা অনুমোদন করা যায়, তা দেখব।” তাঁর কথায়, “ওই এলাকায় বিদ্যুদয়নের জন্য সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে কথাবার্তা এগিয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.