একটা টিম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। শেষ ইউরোও তাদেরই পকেটে। কিন্তু সে সব সত্ত্বেও শুনতে হচ্ছে সমালোচনা। প্রশ্ন উঠছে কোচের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে।
অন্য টিমটার আবার অন্য সমস্যা। মাত্র একটা হারেই ড্রেসিংরুম রীতিমতো অগ্নিগর্ভ। টিমের সিনিয়র প্লেয়ার প্রকাশ্যে তুলোধোনা করে যাচ্ছেন বাকি সতীর্থদের। সে দেশের কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান পর্যন্ত সব দেখেশুনে হাল ছেড়ে দিয়েছেন দেশ নিয়ে।
অল্প কথায়, শনিবার স্পেন বনাম ফ্রান্স শেষ চারের যুদ্ধের নির্যাস এটাই।
রেকর্ডবই ধরলে, ‘ল্যে ব্লুজ’-কে বাকি ইউরোপের হিংসে করা উচিত। স্পেনের বিরুদ্ধে তাদের দুর্ধর্ষ রেকর্ডের জন্য। আজ পর্যন্ত কোনও বড় টুর্নামেন্টে ফ্রান্স হারেনি স্পেনের কাছে। কিন্তু সুইডেন ম্যাচের পর আচমকা পাল্টে গিয়েছে সব কিছু। মালৌদা ঢালাও আগুনে বিবৃতি দিয়েছেন টিমমেটদের বিরুদ্ধে। দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপ চলছে নিয়ম মেনে। এবং ইউরোপের কোনও কোনও সংবাদপত্রে শনিবারের যুদ্ধের যা পূর্বাভাস, তা দেখে ফ্রান্স কোচ লরা ব্লাঁ-র মুখ গোমড়া হওয়ারই কথা। |
ব্লাঁ তবু মচকাচ্ছেন না। বরং বলে দিচ্ছেন, “স্পেনের চেয়ে বেশি বল পজেশন রাখতে পারলে ভাল। কিন্তু তাতে তো আর জয় আসবে না। যা সুযোগ পাব, নিতে হবে। আমাদের বিশ্বাস করতে হবে সুইডেন ম্যাচের পরেও আমরা কিছু লোককে আনন্দ দিতে পারি।” যদিও রক্ষণ নিয়ে তাঁর যথেষ্ট দুশ্চিন্তা থাকবে। কারণ কার্ড সমস্যার জন্য এই ম্যাচে নেই মেক্সেস। বদলি হিসেবে নামবেন লরা কসাইলিঁ, যাঁর কি না ইউরোতে এটাই প্রথম ম্যাচ। ব্লাঁ তবু উপায় বাতলে দিচ্ছেন। বলছেন, “স্পেনের বিরুদ্ধে জিততে গেলে ভিতরের আবেগকে কাজে লাগাতে হবে।”
মস্তিষ্ক নয়, কোয়ার্টার ফাইনালের লড়ইয়ে হৃদয় চাইছেন ব্লাঁ। বিপক্ষের ‘হৃৎপিন্ড’ আবার ডাক দিচ্ছেন স্প্যানিশ আর্মাডাদের জেগে ওঠার।
‘হৎপিন্ড’ বলতে আন্দ্রে ইনিয়েস্তা। যিনি পরিষ্কার বলে দিচ্ছেন, সেই সব সমালোচনাকে পাত্তা দেবেন যার মধ্যে সারবত্তা আছে। বলছেন, “দেখুন, শেষ ইউরো এবং বিশ্বকাপ জেতার পরেও যে সব সমালোচনা এখন হচ্ছে, আমার মনে হয় তাতে পাত্তা দেওয়ার দরকার নেই। ধরে নিতে হবে সাফল্যের পিছু পিছু এসবও আসবে।” ইঙ্গিতটা পরিষ্কার, কোচ দেল বস্কির স্ট্র্যাটেজি নিয়ে যে সব প্রশ্ন উঠছে তা অর্থহীন। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে জয় পেতে এত কষ্ট কেন করতে হল? ইনিয়েস্তা উত্তর দিচ্ছেন, “ওই ম্যাচে আমরা জানতাম যে ড্র করলেই চলবে। তাই গোল না পাওয়ার টেনশনটা আমাদের ছিল না।” আর ফ্রান্স? স্পেনের ‘হৃদয়’ বলছেন, “কঠিন ম্যাচ। ওরা বলের দখল রাখতে চাইবে। আমাদের চেনা খেলাটা ফেরাতে হবে।”
মহাযুদ্ধের মেজাজটা বোঝা যাচ্ছে? যাবতীয় সমালোচনা ঝেড়ে দুই শিবিরই কোথাও যেন নতুন ভোরের অপেক্ষা। প্রশ্ন একটাই। শনিবার মাঝরাতে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে কী পড়ে থাকবে? নীল-জার্সির বিপ্লব? নাকি লাল-জার্সির রোম্যান্টিকতা?
|
ক্লাবের সতীর্থরা আজ প্রতিপক্ষ |
• দাভিদ সিলভা বনাম সমীর নাসরি (দু’জনেই ম্যাঞ্চেস্টার সিটির)। নাসরির পাশে থাকবেন গেল ক্লিচিও।
• ফের্নান্দো তোরেস বনাম ফ্লোরেন্ট মালুদা (দু’জনেই চেলসির)।
• করিম বেঞ্জেমা বনাম সের্খিও রামোস (দু’জনেই রিয়াল মাদ্রিদের)। রামোসের সঙ্গে থাকছেন জাবি আলন্সো, ইকের কাসিয়াস এবং রাউল আলবিয়ল।
• আদিল রামি বনাম খোর্দি আলবা (দু’জনে ভালেন্সিয়ার) |
|