কাবুলে তখন রাত সাড়ে এগারোটা। মূল শহর থেকে সামান্য দূরে কারঘা লেকের পারে স্পুজমাই হোটেলে জমে উঠেছে জন্মদিনের পার্টি। চলছে নাচ-গান। লেকের পারে খোশগল্পে মেতেছেন কেউ কেউ। কিন্তু এ সব ‘ইসলামবিরুদ্ধ’ কাজ তালিবান জঙ্গিদের না-পসন্দ। তাই হঠাৎ শুরু গুলিবৃষ্টি। কিছু বোঝার আগেই মাটিতে পড়ে গেল কয়েকটা দেহ। রক্ত চুঁইয়ে গিয়ে পড়ল পুলের জলে। ডাইনিংয়ের সাদা চাদর তখন লাল। মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে তোবড়ানো বিরাট কেক। কেমন করে যেন অক্ষত রয়ে গিয়েছে ‘শুভ জন্মদিন’ লেখাটা।
ঘটনায় কয়েক মিনিটের মধ্যেই তালিবান জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ গিয়েছে ১৫ জন সাধারণ নাগরিকের। তাদের হাতে বন্দি হয়ে পড়েছেন ৩৫ থেকে ৪০ জন অতিথি। কী করবেন বুঝতে না পেরে হোটেলের পুলের জলে নেমে লুকিয়েও পড়েছেন অনেকে। বৃহস্পতিবার রাতে এই ভয়াবহ হামলার খবর পেয়ে ভোরে অভিযানে নামে পুলিশ ও আফগান সেনারা। আকাশে কপ্টার উড়িয়ে অভিযানে সাহায্য করেছে ন্যাটো বাহিনীও। দীর্ঘ ১১ ঘণ্টার সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে সাত জঙ্গি, এক পুলিশ অফিসার ও তিন নিরাপত্তাকর্মীর। সব মিলিয়ে মারা গিয়েছেন ২৬ জন। বন্দিরা অবশ্য মুক্ত হয়েছেন। পুলের জলে নেমে কোনও মতে বেঁচে গিয়েছেন যাঁরা, উদ্ধার করা হয়েছে তাঁদেরও।
হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছেন তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। তিনি বলেন, “ওখানে মদ খাওয়া, মেয়েদের নাচ, দেহব্যবসা কী না চলে! এই সব ইসলামে নিষিদ্ধ। যারা এ সব করে তাদের শিক্ষা দিতেই হামলা।” বিদেশিরা ‘কুকর্ম’ করতেই এই সব রিসর্টে আসে বলে জানান মুজাহিদ। সঙ্গীদেরও সতর্ক করেছেন তিনি।
কাবুলের পুলিশ প্রধান জেনারেল আয়ুব সালাঙ্গি জানিয়েছেন অভিযান শুরুর খানিক পরেই তাঁরা হোটেলের প্রায় ৩০০ জনকে বের করে নিয়ে আসেন। সংঘর্ষে জঙ্গিদের মৃত্যুর পর তাদের হাতে বন্দি ৪০ জনকেও বের করে আনা গিয়েছে। লেকের পাড়ের হোটেলটিকে ঘিরে রয়েছে প্রচুর গাছ। সে জন্য জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই চালাতে বেশ অসুবিধা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সালাঙ্গি। কিন্তু, সরকারি দফতরগুলিতে হামলা না চালিয়ে হোটেলে কেন? নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন সরকারি ভবনগুলিতে যে রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে তেমনটা হোটেলে থাকে না। তাই হামলা করা সহজ। আবার, কাবুলের এত কাছে এমন হানা দিয়ে তালিবান জঙ্গিরা সরকারকে বার্তা দিতে চেয়েছে।
|
এখনও নিখোঁজ ৯০ নৌকাযাত্রী
সংবাদসংস্থা • জাকার্তা |
ইন্দোনেশিয়ার ক্রিসমাস আইল্যান্ডের কাছে ডুবে যাওয়া জেলে নৌকার প্রায় দু’শো জন যাত্রীর মধ্যে ৯০ জন এখনও নিখোঁজ। বেশ কিছু যাত্রীকে অবশ্য উদ্ধার করা গিয়েছে। দেহ মিলেছে মাত্র তিনটি। ইন্দোনেশিয়া ও অষ্ট্রেলিয়ার একাধিক রণতরী ও বিমান অনবরত এই অঞ্চলে নজরদারি চালাচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার সেনাবাহিনীর বক্তব্য, নৌকায় সম্ভবত ২০৬ জন যাত্রী ছিলেন। |