পাওনা আদায়ের জন্য এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে লোক পাঠিয়ে তাঁর স্ত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল অপর এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমান শহরের বড়নীলপুরের ঘটনা। পুলিশ এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী ইয়াকুব হোসেন অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বড়নীলপুরের পূর্বপল্লির বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী সুজিত ঘোষের স্ত্রী মিঠুদেবী বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ চার জন লোক জোর করে তাঁদের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন। বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করলে তাঁকে মারধরে করে তারা। গোলমাল শুনে ঘর থেকে তিনি বেরিয়ে এলে তাঁকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ মিঠুদেবীর। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর চিৎকারে পাড়ার লোকজন ছুটে এসে ওই চার জনকে ঘিরে ফেলে। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ এসে ওই চার জনকে ধরে নিয়ে যায়।
পুলিশের দাবি, ধৃত চার জন জেরার মুখে স্বীকার করেছে, ইয়াকুব হোসেনের নির্দেশেই ওই বাড়িতে গিয়েছিল তারা। বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কেউ কারও কাছ থেকে টাকা পেতেই পারেন। তা বলে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে গোলমাল করা অপরাধ। ঘটনার তদন্ত চলছে।”
সুজিতবাবুর দাবি, ওই ব্যবসায়ীকে দেওয়া তাঁর একটি চেক কিছু দিন আগে বাউন্স করে। তার পরেই পুরো বিষয়টি নিয়ে ইয়াকুব হোসেন তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। সেই মামলা চলছে। তার নিষ্পত্তি না হওয়া পযর্ন্ত তাঁর পক্ষে টাকা ফেরত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু ওই ব্যবসায়ী তাঁকে টাকা শোধ করার জন্য বারবার চাপ দিচ্ছেন। নানা রকম হুমকিও দিচ্ছেন বলে তাঁর অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে ইয়াকুব হোসেনের পাল্টা দাবি, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। সুজিত ঘোষের কাছ থেকে আমার ৩৫ লক্ষ টাকা পাওনা আছে। সেই টাকা যাতে না দিতে হয়, সেই উদ্দেশ্যেই এই সব ষড়যন্ত্র করছেন তিনি।” বর্ধমান থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, ধৃত চার জনকে শুক্রবার বর্ধমানের এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। ভবিষ্যতে এই ধরনের গোলমাল করবে না, এই মর্মে তাদের থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। আইসি জানান, বর্ধমানে জিটি রোডে ইয়াকুব হোসেনের একটি হোটেল রয়েছে। সেখানে নানা দুষ্কর্ম হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০০৫ সাল থেকে ইয়াকুব হোসেনের বিরুদ্ধে পাঁচটি ‘ইম্মরাল ট্রাফিক অ্যাক্ট’ সংক্রান্ত মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলাগুলিতে তিনি জামিন নিয়েছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। |