সঙ্গীত সমালোচনা...
পরিবেশনায় সাবলীল
দুই প্রথিতযশা শিল্পী সরোদিয়া শ্যাম গঙ্গোপাধ্যায় এবং সেতার শিল্পী কাশীনাথ মুখোপাধ্যায়ের স্মরণে সঙ্গীতানুষ্ঠান। আয়োজক ভবানীপুর সঙ্গীত সম্মেলন। সূচনায় সেতারে রাগেশ্রী বিন্যস্ত করেন দীপশঙ্কর ভট্টাচার্য। তরুণ সেতারির সঠিক বাদনশৈলীতে রাগরূপটি পূর্ণ সৌন্দর্য নিয়ে উপস্থিত হয়। গতে তান ছন্দ ঝালাতে পারদর্শিতার পরিচয় পাওয়া যায়। তবলায় সুসঙ্গত করেন দেবব্রত গুপ্ত। আসরের শেষ শিল্পী মালিনী মুখোপাধ্যায় চয়ন করেন মারু বেহাগ। বিস্তার পর্বটি আমির খানের ভাব-ভাবনায় সমৃদ্ধ। পরবর্তী নিবেদন আড়ানা। মধ্যলয়ের খেয়ালে তান সরগমের পরিবেশনায় সাবলীলতার পরিচয় মেলে। তবলায় সংযত সঙ্গত করেন বিশ্বজিৎ দেব।

তোমারই গাওয়া
সম্প্রতি অরবিন্দ ভবনে ভক্তিগীতি নিবেদন করলেন নূপুরছন্দা ঘোষ। অতুলপ্রসাদ, রজনীকান্ত, দ্বিজেন্দ্রলাল সহ অন্যান্য ভক্তিগীতি তাঁর কণ্ঠে এক অন্য মাত্রা পায়। আবেগের মাত্রায় সুর-তাল-লয়-ছন্দ যেন একাকার হয়ে যায় বিভিন্ন গানের পরিবেশনে। ১৪টি গান বেছেছিলেন তিনি। তার মধ্যে ‘তোমারই গাওয়া’ গানটি বহু দিন মনে থাকবে। এ ছাড়াও ‘পূজা আমার সাঙ্গ হল’ সে দিনের অনুষ্ঠানের শ্রেষ্ঠ নিবেদন বলা যায়। এ ধরনের অনুষ্ঠানে ইদানীং শ্রোতারাও বিভিন্ন গানের অনুরোধ করে থাকেন। শিল্পী সে দিন যথার্থ গুরুত্ব দিয়েই সেই গানগুলি শোনালেন।

শুধুই নজরুল
ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট মঞ্চে কবি নজরুলকে নিয়ে গান ও কবিতার আয়োজন করেছিলেন সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। বিভিন্ন শিল্পীরা অংশ নিয়েছিলেন। তার মধ্যে ছিলেন ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়, শঙ্কর ঘোষাল, চন্দ্রাবলী রুদ্রদত্ত, শঙ্খ মিত্র, সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ব্রহ্মচারী, শুভেন্দু দাস, সুদীপ্ত মিত্র প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন হীরালাল শীল, সুমিত চট্টোপাধ্যায়, সুজাতা ধর।

পুরোপুরি মন ভরল না
সম্প্রতি শিশির মঞ্চে ‘চারুকণ্ঠ’ আয়োজন করেছিল গান ও পাঠের আসর। সুমিতা ঘোষের সূচনা সঙ্গীতের পর সাথী ভট্টাচার্য শুরু করেন ‘বনে যদি ফুটলো কুসুম’, তনুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আয় তব সহচরী’। কবিতা পাঠে ঈশিতা দাস অধিকারীর ‘দেবে তুমি মোর দেবে’ কবিতায় প্রাণ ছিল না। কাজল সুর যেন মুখস্থ পড়লেন ‘আনিলাম অপরিচিতের নাম’। কেশবরঞ্জন তাঁর সুকণ্ঠে ‘সবার রবীন্দ্রনাথ, প্রতিদিন রবীন্দ্রনাথ’ পাঠ করে প্রশংসা পেলেন। কেশবের কবিতা-পাঠে এক অন্য ধরনের মাধুর্য আছে।
অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন উষশী সেনগুপ্ত, অনিন্দিতা মিত্র, মধুছন্দা তরফদার, কৃষ্ণকলি বসু প্রমুখ।
গানের আসরে তানিয়া দাস শোনালেন ‘কী সুর বাজে আমার প্রাণে’। সুন্দর গেয়েছেন তানিয়া। অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে অনেকেরই গানের মান নিয়ে সন্দেহ জাগে।
গান নির্বাচনেও ত্রুটি ছিল। এ দিন অন্যান্য যে সব শিল্পী ছিলেন তাঁরা হলেন সাথী দাশগুপ্ত, মালবিকা সুর, কাকলী দাস, শিখা দত্ত, শাশ্বতী সেনগুপ্ত প্রমুখ। তবে দক্ষতার সঙ্গে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী ও রুবি চট্টোপাধ্যায়।

মধুর ছন্দনীড়
সম্প্রতি দীর্ঘ সঙ্গীতজীবনের অভিজ্ঞতাকে পাথেয় করে ‘বিধাননগর ছন্দনীড়’-এর প্রতিষ্ঠাতা তৃপ্তি সেন যে সন্ধ্যাটি উপহার দিলেন তা এক কথায় অনবদ্য। পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে ৭০-৭৫ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এবং সুপরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করানো সত্যিই দুর্লভ। রবীন্দ্রগান ছাড়াও এ দিনের উপস্থাপনার বিষয় ছিল দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সার্ধশতবর্ষে এটি ছন্দনীড়-এর প্রথম প্রয়াস। একক গানে মিতা পোদ্দার, অন্তরা দাশগুপ্ত উজ্জ্বল সম্ভাবনার দাবি রাখেন। গলায় বার্ধক্যের ছাপ থাকলেও অতিথি শিল্পী বুলু বসুর তিনটি গানই শ্রোতাদের আপ্লুত করেছে। তৃপ্তি সেনের গলায় ‘ডেকেছেন প্রিয়তম’ গানটি বহু দিনের চর্চার প্রমাণ দেয়। এ ছাড়া সুছন্দা ঘোষ তাঁর সুগভীর কণ্ঠস্বরে মুগ্ধ করেছেন। সুছন্দার তিনটি গানেই বসন্তের আবেগ মনকে ছুঁয়ে যায়। সব শেষে রবীন্দ্রনাথের বসন্তের গানেই অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।

মনে থাকবে
ঐন্দ্রিলা জাতীয় সঙ্গীত অ্যাকাডেমি এ বছরেও আয়োজন করেছিল তিন দিনের গান ও পাঠের আসর। জীবনকৃতি সম্মান দেওয়া হয় সুমিত্রা সেন সহ আরও অনেককে। অবশ্য শুরুতেই ‘রবীন্দ্রনাথ, স্বামী বিবেকানন্দ ও সঙ্গীত’ নামে সেমিনারে অংশ নিয়েছিলেন সুখেন্দুশেখর রায় ও গৌতম নাগ। তিন দিনের আসরে গানে ও পাঠে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন রাজেশ্বর ভট্টাচার্য, সুধীন সরকার, সৈকত মিত্র, জয়তী চক্রবর্তী, স্বপন বসু, শঙ্কর রায়, রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুশীলা বসু, গীতা চৌধুরী প্রমুখ। শেষ দিনে দেবাশিসকুমার বসু ‘বৃদ্ধাশ্রম’ কবিতাটি শোনালেন, যা শ্রোতাদের অনেক দিন মনে থাকবে।

তুমি যে সুরের আগুন
সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে ‘নির্ঝরিণী’-র অনুষ্ঠানে শুরুতেই ছিল ‘প্রথম আদি তব শক্তি’ এবং ‘আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে’। এ ছাড়াও এই অনুষ্ঠানে এ দিন গান ও কবিতা শোনালেন বিভিন্ন শিল্পী। অপর্ণা মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে শোনা গেল ‘তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে মোর প্রাণে’। এ দিনের অনুষ্ঠানে এই গানটি অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। তাঁর সুরেলা কণ্ঠের প্রশংসা না করলেই নয়। এ ছাড়াও শ্রোতাদের গান শুনিয়ে মুগ্ধ করলেন রচয়িতা রায়, শাশ্বতী বসুমল্লিক প্রমুখ।

শুনতে হলে
অল টাইম গ্রেটস্
উৎপলা সেনের কণ্ঠে আধুনিক ও
বাংলা ছায়াছবির গান। সারেগামা।


ফিরে দেখা
নজরুলগীতি মনোময় ভট্টাচার্যের কণ্ঠে।
তবলায় পণ্ডিত দেবজ্যোতি বোস। সিডি। আশা।


এ জার্নি উইথ টেগোর
পিয়ানোয় রবীন্দ্রসঙ্গীত। শিল্পী শান্তনু বসু।
১২টি গান। সিডি। রাগা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.