নয়াচরে কেমিক্যাল হাব হয়নি। এ বার সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়া নিয়েও আইনি জটিলতা তৈরি হল। বংশী জানা নামে এক ব্যক্তি ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির প্রতিবাদ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থের মামলা ঠুকে দিয়েছেন। আবেদনকারীর বক্তব্য, ইতিমধ্যে বেসরকারি সংস্থা সেখানে নির্মাণকাজ শুরু করেছে। তার ফলে মৎস্যজীবীদের উচ্ছেদের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাঁদের বাঁচানোর ব্যবস্থা করা দরকার। তা ছাড়া পরিবেশের স্বার্থেই ওখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়তে দেওয়া যায় না বলে আবেদনকারীর অভিমত।
নয়াচরে কেমিক্যাল হাব গড়তে ২০০৭ সালে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার ওই এলাকাকে ‘কোস্টাল রেগুলেশন জোন (১)’ থেকে বদল করে ‘জোন (৩)’ করার অনুমোদন চেয়ে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানায়। ‘জোন (১)’-এর অন্তর্গত এলাকায় কেমিক্যাল হাব গড়া যায় না। পরিবেশ মন্ত্রকের অনুমোদন পাওয়া গেলেও নয়াচরে কেমিক্যাল হাব গড়া যায়নি। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ঠিক হয়, নয়াচরে একটি বেসরকারি সংস্থা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়বে। নতুন মামলায় সেই বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ার উদ্যোগ নিয়েই জটিলতার সৃষ্টি হল।
আবেদনকারী বংশীবাবুর আইনজীবী কৌশিক চন্দ বিভিন্ন সরকারি তথ্য পেশ করে বলেন, উপকূল রক্ষা আইন অনুযায়ী নয়াচরে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণই করা যায় না। কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকও এখনও বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ার ছাড়পত্র দেয়নি। তা সত্ত্বেও বেসরকারি সংস্থা সেখানে নির্মাণ কাজ শুরু করেছে।
রাজ্য পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আইনজীবী নয়ন বিয়ানি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের অফিসারেরা নয়াচরে গিয়েছিলেন। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। সেখানে আদৌ বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়া যাবে কি না, তা পরীক্ষা করেন ওই প্রতিনিধিরা। কিন্তু এখনও তাঁরা কোনও রিপোর্ট দেয়নি। অর্থাৎ নয়াচরে বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়া যাবে কি না, সেই বিষয়ে কেন্দ্র এখনও হ্যাঁ বা না কিছুই বলেনি।
এ দিন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল এবং বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। বিচারপতি চক্রবর্তী জানতে চান, আবেদনকারী যে-সব সরকারি তথ্য আদালতে পেশ করেছেন, সেগুলো তিনি কী ভাবে পেলেন? হলফনামা দাখিল করে তা জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয় আবেদনকারীকে। আদালতের বাইরে আবেদনকারীর কৌঁসুলি কৌশিকবাবু বলেন, দেশের নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্যাদি ছাড়া বর্তমানে তথ্য জানার অধিকার আইন অনুযায়ী সব কিছুই জানা যায়। |