ট্রেন থেকে নামিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে কেতুগ্রামের চাকটা থেকে রেজাউল মির্জা নামে ওই যুবককে ধরা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, রেজাউলকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ধর্ষণ-কাণ্ডে জড়িত অভিযোগে ওই রাতেই স্বপন শেখ নামে আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কাটোয়া-আমোদপুর লাইনে পাঁচুন্দি ও গোমাই স্টেশনের মাঝে ট্রেন থামিয়ে এক দল দুষ্কৃতী লুঠপাট চালায়। সেই সময়ে ট্রেন থেকে নামিয়ে এক মহিলাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। ওই মহিলা কাটোয়া জিআরপি-র কাছে অভিযোগে জানান, তাঁর ১১ বছরের মেয়ের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে দুষ্কৃতীরা তাঁকে ট্রেন থেকে নামায় ও রেললাইনের পাশে ধর্ষণ করে। পরে রেল পুলিশের থেকে ঘটনার তদন্তভার যায় রাজ্য পুলিশের হাতে। গত ৩০ মে কেতুগ্রাম থানার তরফে ধর্ষণ-কাণ্ডের চার্জশিট পেশ করা হয়। তবে রেলপুলিশ এখনও লুঠপাটের ঘটনায় চার্জশিট জমা দেয়নি। |
ঘটনার পরে পুলিশ বীরভূমের চৌহাট্টা গ্রামের নয়ন শেখ ও ফরিদ শেখ এবং কাটোয়ার নুর মহম্মদ ও সেন্টু শেখ নামে চার জনকে গ্রেফতার করে। পাশাপাশি, অভিযোগকারিণীর বর্ণনা অনুযায়ী দুষ্কৃতীদের ছবি আঁকায় পুলিশ। সেই ছবি দেখে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার রেজাউল মির্জা এবং বীরভূমের নানুরের কালাম শেখকে চিহ্নিত করা হয়। তাদের খোঁজ করতে গিয়ে ওই ঘটনায় জড়িত হিসেবে কেতুগ্রামের কায়েশ শেখের নাম উঠে আসে। ২৩ মে এই তিন জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। ২৮ মে তাদের নামে হুলিয়া জারি হয়। পুলিশ তিন জনের সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করেছিল।
কাটোয়া আদালতে পেশ করা চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারিণীর বয়ান অনুযায়ী, রেজাউল মির্জাই ধর্ষণ করেছে বলে তাদের অনুমান। দ্বিতীয় বার ধর্ষণের চেষ্টা হলে নয়ন ও ফরিদ বাধা দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়ঞার কুলি চৌরাস্তা গ্রামে বাড়ি রেজাউলের। বছর খানেক আগে পাশের বদুয়া গ্রামে এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার পরে বাড়ি ছেড়ে বীরভূমের চৌহাট্টায় নয়ন, ফরিদের প্রতিবেশী হয়ে থাকতে শুরু করে সে।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে মুর্শিদাবাদ থেকে এক আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার সময়ে কেতুগ্রামের চাকটা বাসস্টপের কাছে রেজাউলকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, তাকে জেরা করে জানা যায়, কেতুগ্রামের কাজিপাড়ার স্বপন শেখও ওই ঘটনায় যুক্ত ছিল। পুলিশ তাকেও গ্রেফতার করে ধর্ষণের মামলা রুজু করেছে। রেজাউলের কাছ থেকে একটি দামী মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার কাটোয়া আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, শনিবার টিআই প্যারেড হওয়ার কথা। এই ধর্ষণ-কাণ্ডে এখনও দুই প্রধান অভিযুক্ত অধরা। পুলিশ জেনেছে, রেজাউল ও কালাম সম্পর্কে ভায়রাভাই। স্বপন তাঁদের শ্যালক। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “বাকি অভিযুক্তদেরও ধরা হবে।” |