|
|
|
|
ডেকে নিয়ে গিয়েই
ছেলেকে খুন ইট্যায়, নালিশ পরিবারের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাটোয়া |
‘গণরোষে’ নয়, বরং ছেলেকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ‘পরিকল্পিত ভাবে’ খুন করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারের কাছে এমনই অভিযোগ করলেন মঙ্গলকোটের নিগন গ্রামের রণজিৎ সিংহরায়।
গত ১৩ মে রাতে মঙ্গলকোটের ইট্যা গ্রামে পিটিয়ে মারা হয় রণজিৎবাবুর ছেলে অনুপ সিংহরায়কে। অভিযোগ, ওই গ্রামে এক যুবতীর বাড়িতে রাতে চড়াও হয়েছিলেন অনুপ। সোজা চলে যান যুবতীর ঘরে। সেখানে তখন ওই যুবতী ও তাঁর মা ছিলেন। ঘরের বাইরে তাঁর বাবা শম্ভুনাথ মণ্ডল, কাকা ও দাদা ঘুমোচ্ছিলেন। ওই যুবতীকে তাঁর সঙ্গে বাড়ি ছাড়তে বলেন অনুপ। কিন্তু ওই যুবতী অনুপকে চলে যেতে বলেন। যুবতীর পরিবারের অভিযোগ, অনুপ একটি দেশি রিভলবার বের করে গুলি চালালে মৃত্যু হয় শম্ভুনাথবাবুর। হাতে গুলি লেগে জখম হন যুবতীও। পুলিশ জানিয়েছিল, এর পরে গুলির শব্দে লোকজন জড়ো হয়। অনুপের হাত-পা বেঁধে বাড়ির মধ্যেই শুরু হয় গণপিটুনি। পুলিশ খবর পেয়ে উদ্ধার করে অনুপকে। কাটোয়া হাসপাতালের পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ঘটনার পরে পুলিশ দাবি করেছিল, অনুপের সঙ্গে ওই যুবতীর ‘সম্পর্ক’ ছিল। তবে বেশ কয়েক মাস ধরে সম্পর্ক তিক্ত হতে থাকে। তার পরেই এমন ঘটনা। কিন্তু সম্প্রতি বর্ধমানের পুলিশ সুপার মহম্মদ সৈয়দ হোসেন মির্জার কাছে রণজিৎবাবু অভিযোগ দায়ের করেছেন, অনুপকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে লাঠি, রড দিয়ে পিটিয়ে খুন করে তাঁর প্রেমিকা ও বাড়ির লোকেরা। ওই যুবতীর মা, ভাই ও কাকার নামে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।
রণজিৎবাবুর আরও অভিযোগ, মঙ্গলকোটের কৈচর ফাঁড়ি থেকে ১৩ মে সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ তাঁদের ঘটনার খবর দেওয়া হয়। সেখানে যাওয়ার পরে পুলিশ একটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নেয়। রণজিৎবাবুর মেয়ে কণিকা দেবী বলেন, “ওই কাগজে বাবাকে দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে, ‘জনতা সন্দেহবশত’ অনুপকে মারধর করে এবং পরে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।” তিনি আরও বলেন, “ওই ভাবে অভিযোগ নেওয়া হয়েছে জানার পরে বাবা নতুন করে অভিযোগ করতে গেলে মঙ্গলকোটের কৈচর ফাঁড়ির ইনচার্জ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন। তখন আমরা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হই।”
পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু হয়েছে। অনুপের পরিবার আমার কাছে নির্দিষ্ট কয়েক জনের নামে লিখিত অভিযোগ করেছেন। মঙ্গলকোটের ওসি-কে তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে।” ওই যুবতীর পরিবার অবশ্য এই অভিযোগের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। মঙ্গলকোটের ওসি দীপঙ্কর সরকার বলেন, “রণজিৎবাবুরা কৈচর ফাঁড়িতে গিয়েছিলেন কি না জানা নেই। বিষয়টি দেখছি।” |
|
|
|
|
|