বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কাল ভোরে সূর্যের
বুকে চলন শুক্রের

সূর্যের গায়ে এক প্রান্তে কালো একটা বিন্দু। স্থির নয়। ধীরে ধীরে যেন হেঁঁটে চলেছে অন্য প্রান্তের দিকে।
বিন্দুটি হল শুক্রগ্রহ, যা কিনা শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা বলেও পরিচিত। আগামিকাল, বুধবার ভোর থেকে কয়েক ঘণ্টা ধরে সূর্যের বুকে তার ‘চলনের’ (ট্রানজিট অফ ভেনাস ওভার দ্য সান) ওই বিরল মহাজাগতিক দৃশ্য অবলোকনের সুযোগ মিলবে। কেন্দ্রীয় পজিশনাল অ্যাস্ট্রনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন জানিয়েছেন, এমনটা ফের ঘটবে ২১১৭-র ১১ ডিসেম্বর, অর্থাৎ সাড়ে ১০৫ বছর বাদে। শেষ বার হয়েছিল ২০০৪-এর ৮ জুন।
এটা হয় কেন? সঞ্জীববাবু জানিয়েছেন, সূর্য-শুক্র-পৃথিবী প্রায় এক সরলরেখায় অবস্থান করার দরুণ ঘটনাটি ঘটবে। যেমন ভাবে সূর্য-চাঁদ-পৃথিবী প্রায় এক সরলরেখায় এলে সূর্যগ্রহণ হয়, সূর্য ঢাকা পড়ে যায় চাঁদের আড়ালে। অন্তত মানুষের চোখে তেমনই মনে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে চাঁদের বদলে শুক্রগ্রহ থাকলেও সূর্যগ্রহণ হবে না।
সোমবারেই চোখ আকাশে। কলকাতায় দেশকল্যাণ চৌধুরীর তোলা ছবি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবী থেকে শুক্রের দূরত্ব চাঁদের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় ভূপৃষ্ঠ থেকে শুকতারা বা সন্ধ্যাতারাকে চাঁদের তুলনায় অনেক ছোট দেখায়। আর তাই সূর্যের উপরে ‘চলনের’ সময়ে বিন্দুবৎ শুক্র সূর্যের ব্যাসের মাত্র ১/৩২ ভাগ ঢাকতে পারে, পুরোটা নয়। ফলে সূর্যগ্রহণও হয় না।
কাল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে ভোর ৪টে ৫২ মিনিট থেকে সকাল ১০টা ২১ মিনিট পর্যন্ত দৃশ্যটি দেখা যাবে। উত্তরবঙ্গে ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোয় আরও আগে থেকে, কারণ সেখানে সূর্যোদয় হবে আগে। তবে বিজ্ঞানীরা হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন, খালি চোখে তো নয়ই, এক্স-রে প্লেট কিংবা সাধারণ ঘষা কাচের ভিতর দিয়েও সূর্যের দিকে তাকাবেন না। চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। শুক্রের চলন দেখতে হলে ১৪ নম্বর শেডের ওয়েল্ডিং গ্লাস, অ্যালুমিনাইজড মাইলার ফিল্টার অথবা পলিমার কোটেড লেন্স ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
পজিশনাল অ্যাস্ট্রনমি সেন্টার-সহ কয়েকটি সংস্থা আমজনতাকে দৃশ্যটি দেখাতে উদ্যোগী হয়েছে। সঞ্জীববাবু জানান, বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে সংস্থার সেক্টর ফাইভের অফিসের ছাদে টেলিস্কোপের মাধ্যমে শুক্রের চলন দেখানো হবে। বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়াম (বিআইটিএম)-এর টেকনিক্যাল অফিসার গৌতম শীল বলেন, কাল সকাল সাড়ে ছ’টা থেকে তাঁরা এটি দেখাবেন। টেলিস্কোপের পাশাপাশি অডিটোরিয়ামেও আলাদা ব্যবস্থা থাকছে। কসবা রাজডাঙার জগদীশ বোস ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চের ছাদে প্রদর্শনের আয়োজন করেছে স্কাই ওয়াচার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লবকুমার দে জানান, তাঁদের টেলিস্কোপ সকাল ছ’টা থেকে দশটা পর্যন্ত তৈরি থাকবে। সাধারণ মানুষ যাতে বিরল মহাজাগতিক ঘটনাটির সাক্ষী হতে পারেন, পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চও তার বন্দোবস্ত করেছে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.