আবাসনে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু
বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে শিলিগুড়ি থানার সুভাষপল্লির এক বহুতল আবাসনে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সৌম্যদীপ সাহা (২২) ওরফে পিকু। তাঁর বাড়ি বেলঘরিয়ার ২০/১ ভার্নার লেনে। তিনি শিলিগুড়ি লাগোয়া শালবাড়ির একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ‘ইলেকট্রনিক্স এবং ইনস্ট্রুমেন্টাল’ বিষয় নিয়ে চতুর্থ বর্ষে পড়ছিলেন। চলতি মাসেই পরীক্ষা, প্রজেক্টের কাজ শেষ করে তাঁর একটি বহুজাতিক সংস্থায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল। পড়াশুনোর সুবাদে তিনি ওই আবাসনের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
পুলিশ জানায়, রাতে আবাসনের তিন তলার ফ্ল্যাট থেকে সৌম্যদীপকে অচৈতন্য অবস্থায় তাঁর বন্ধুরা উদ্ধার করে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজা বলেন, “একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই ছাত্রের বন্ধু, আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।” বুধবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পর সৌম্যদীপের দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের সন্দেহ, মদের সঙ্গে কোনও নেশার দ্রব্য মিশিয়ে খাওয়াতেই সৌম্যদীপের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এই সম্পর্কে কিছু তথ্যও মিলেছে। তবে সুইসাইড নোট জাতীয় কিছু মেলেনি। দুই ভাইয়ের মধ্যে সৌম্যদীপ ছোট। তাঁর দাদা উত্তরপ্রদেশে চাকরি করেন। মা বেলঘরিয়ার বাড়িতে থাকেন। বাবা সুশান্ত সাহা পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার। পুরুলিয়ায় কর্মরত। খবর পেয়েই এ দিন দুপুরে শিলিগুড়ি এসে পৌঁছন সুশান্তবাবু। তিনি বলেন, “আমার মানসিক অবস্থা ঠিক নেই। কী ভাবে কী হল, কিছুই বলতে পারব না।”
সুভাষপল্লির একটি পার্ক লাগোয়া এলাকায় আবাসনটি রয়েছে। এক বছর আগে সৌম্যদীপ ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। তাঁর সঙ্গে মা-ও থাকতেন। তাঁর শরীর খারাপ হওয়ায় গত জানুয়ারি মাসে বেলঘরিয়া চলে যান। পুলিশ জেনেছে, ‘হোম ডেলিভারি’র কর্মী ছাড়া হাতে গোনা কয়েকজন বন্ধু সৌম্যদীপের ফ্ল্যাটে আসতেন। মঙ্গলবার প্রজেক্টের কাজ থাকলেও তিনি কলেজে যাননি। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ দাদার সঙ্গে টেলিফোনেও কথা বলেন।
সৌম্যদীপের পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা সুপর্ণা সরকার বলেন, “সৌম্যদীপ মাঝেমধ্যে খাবার জল বা ‘হোম ডেলিভারি’ কর্মীর রেখে যাওয়া খাবারের প্যাকেট আমাদের ঘর থেকে নিত। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ফ্ল্যাটের দরজা ভেজানো ছিল। সন্দেহ হওয়ায় বাইরে থেকে কয়েকবার ডাকাডাকি করি। সাড়া না দেওয়ায় আর খোঁজ করিনি। রাতে ওঁর কয়েকজন বন্ধু এসে আমাদের ডেকে তোলে। পরে পুলিশ আসে।” ওই আবাসনের আর এক বাসিন্দা অভিষেক মালাকার বলেন, “দেরি হলে আমাকে বলে যেত। ভাল কথাবার্তা বলত। কোনও সময় অস্বাভাবিক কিছু দেখিনি।”
বেলঘরিয়ার বাড়িতে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন সৌম্যদীপের মা। সৌম্যদীপের জেঠা রতন সাহা জানান, “মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শিলিগুড়ি হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফোন আসে। বলা হয়, সৌম্যদীপের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওর বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। বন্ধুরা জানায়, বন্ধ ঘরের মধ্যে সৌম্যদীপের সংজ্ঞাহীন দেহ মিলেছে।”
তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, সারাদিন কলেজ না-যাওয়ায় তাঁর বন্ধুরা মোবাইলে ফোন করে। সাড়া না-মেলায় তাঁরা রাতে ফ্ল্যাটে এসে দেখেন, বিছানায় পড়ে আছেন সৌম্যদীপ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.