আনন্দপুরে পাট্টা বিলি
নোনাডাঙায় সন্ত্রাসবাদী ডেরা নিয়ে হুমকি মমতার
নোনাডাঙার সঙ্গে মাওবাদী-যোগসূত্র ফের সামনে এনে ‘হুঁশিয়ারি’ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নোনাডাঙা থেকে স্বল্প দূরত্বে কসবার আনন্দপুরে মঙ্গলবার উদ্বাস্তুদের জমির পাট্টা বিলির অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ফের বলেছেন, “নোনাডাঙা নিয়ে কেউ কেউ নুন খেতে শুরু করেছেন! কোথায় ছিলেন এই সব মানুষ? ওখানে সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানা বানানোর চেষ্টা হচ্ছে!” কিন্তু সেই ‘প্রচেষ্টা’ যে তিনি বন্ধ করবেন, তা পরিষ্কার জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেউ যদি মনে করে বন্দুক দিয়ে এলাকা দখল করব, তাদের বলছি, মানুষের শান্তি নষ্ট হতে দেব না।”
গোবিন্দপুর রেল কলোনির উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দাদের পুর্নবাসনের জন্য নোনাডাঙায় ফ্ল্যাট করছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই প্রায় দু’হাজার বাসিন্দার পুনর্বাসন হয়েছে সেখানে। আরও কিছু বাসিন্দার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা সেখানে করছে রাজ্য সরকারের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। আনন্দপুরে এ দিনের অনুষ্ঠানে ৩১৮ জনকে ‘নিঃশর্ত দলিল’ বা পাট্টা দেওয়া হয়।
পুনর্বাসন ও জমি বণ্টনের মাধ্যমে নোনাডাঙা ও আনন্দপুরকে এক সূত্রে বাঁধতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “১৯৯২ সাল থেকেই এই জমির পাট্টা দেওয়ার জন্য আমরা আন্দোলন করেছি। কারণ, আমরা গরিব মানুষের পাশে সব সময়েই থাকতে চাই।” গরিব মানুষের ‘খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানে’র ব্যবস্থা যে তাঁর সরকারের লক্ষ্য, ‘পরিবর্তনে’র বর্ষপূর্তিতে আবার তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, “আগামী পাঁচ বছরে বাংলার কোনও গরিব মানুষ যেন বলতে না-পারেন, আমার মাথার উপরে ছাদ নেই।”
আনন্দপুরে পাট্টা বিলির অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সুমন বল্লভ।
তবে নোনাডাঙার ফাঁকা জমি দখল করে বসে-থাকা কিছু ‘বহিরাগত’কে নিয়ে সম্প্রতি সেখানে এক দল ‘শহুরে মাওবাদী’ রাজনীতি করছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ। তাঁর বক্তব্য, “ওই ফাঁকা জমি বা গরিব মানুষের পুনর্বাসনের জন্য নির্ধারিত জমি বিক্রি করা হচ্ছে ৫০ হাজার টাকায়। এ সব জিনিস আমরা করতে দেব না।” মঞ্চে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমকে দিয়েও মমতা বলিয়ে নিয়েছেন, “গরিব মানুষেরাই ওখানে থাকবেন।” আরও এক ধাপ এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গরিবদের জায়গা দখল করে কাউকে গরিব-প্রেমী হতে দেব না!” পাশাপাশি, এ দিন মাওবাদীদের ‘সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসা’র জন্য আবার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য একই “আপনাদের কী চাই বলুন! সব দেব! কিন্তু বন্দুক ছাড়তে হবে। আমার মা-বোনেদের শান্তি নষ্ট হতে দেব না। আমার ভাইদের ভবিষ্যৎ আর নষ্ট হতে দেব না।”
এই সূত্রেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, জমি নিয়ে ফাটকা বাজি যেমন তাঁর সরকার বরদাস্ত করবে না, তেমনই জলাশয় ভরাট করতে দেওয়া হবে না। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, এলাকার বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী জাভেদ খান ও মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের উপস্থিতিতেই মমতা জানান, এই ব্যাপারে ‘কড়া ব্যবস্থা’ নেওয়ার জন্য পুলিশ ও পুরসভাকে তিনি ‘নির্দেশ’ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, “জলাশয় ভরাট করে প্রোমোটিং করতে দেব না। সবুজ না-বাঁচালে, জলাভূমি না-বাঁচালে প্রাণের আশাও থাকবে না।”
আনন্দপুরের অনুষ্ঠানে তপসিয়ার ১০৮, ৬৭, ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ লক্ষ মিলিয়ন গ্যালন জল সরবরাহের জন্য জলাধার নির্মাণের শিলান্যাস ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের জন্য ৪টি গাড়ি এবং অ্যাম্বুলেন্সেরও উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ২১ জন উদ্বাস্তুকে ‘প্রতীকী’ পাট্টা বিলি করেন তিনি। তবে অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে ওই পাট্টা বিলি করাতে গিয়ে কিছুটা অব্যবস্থা হয়। সেই সময়ে পাট্টা দেওয়ার শংসাপত্রের ফাইল নিজের হাতে নিয়ে প্রাপকদের নামের তালিকা মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বিলি করতে শুরু করেন। মিনিট দশকের মধ্যেই সেই কাজ শেষ করে ফেলে তৃপ্তির হাসি-সহ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, “বাকিরাও আজই পাট্টা পেয়ে যাবেন। আমি ববি, জাভেদদের বলে দিয়েছি।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.