দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। রাজ্য ভূমি সংস্কার দফতরের অনুমতি মেলায় অবশেষে শুরু হল রামরাজাতলার বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ।
২০০৮-এ ৩০ অক্টোবর রাজ্যের তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী প্রস্তাবিত জমিতে পিপিপি মডেলে বাসস্ট্যান্ডের শিলান্যাস করেন। এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা জটিলতায় কাজ আটকে যায়। এখন রামচরণ শেঠ রোডে রামমন্দিরের সামনে অস্থায়ী টার্মিনাস রয়েছে। সেখান থেকে ৩৫টি ৫২ নম্বর রুটের বাস এবং আটটি রামরাজাতলা-রাজাবাজার রুটের মিনি চলে। অভিযোগ, বাজার এলাকায় এই বাসস্ট্যান্ডটির জন্য নানা সমস্যা হত। তা ছাড়া দুর্ঘটনাও ঘটত। এখান থেকে বাসস্ট্যান্ড সরানোর দাবিও দীর্ঘ দিনের। স্থানীয় বাসিন্দা অলোক রায় বলেন, “অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডের জন্য অনেক সমস্যা হয়। অল্প জায়গায় বাস ঘোরাতে হয়। |
যানজট হয়ে যায়। নতুন বাসস্ট্যান্ড চালু হলে খুবই সুবিধা হয়।”
পুরসভা সূত্রে খবর, ৩৪ নম্বর রামচরণ শেঠ রোডের যে জমিতে বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ শুরু হয়েছে সেটি এক সময় ব্যক্তিমালিকানাধীন ছিল। সেখানে একটি পুকুর ছিল। পুকুরটি ভরাট করার চেষ্টা হলে ১৯৯০-এর জুলাইয়ে পুরসভা পুকুর ভরাটের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু তত দিনে প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি ভরাট হয়ে গিয়েছিল। ’৯১-এ তৎকালীন ডেপুটি মেয়র সিপিএমের দেবেশ সান্যাল এখানে বাসস্ট্যান্ড তৈরির প্রস্তাব পেশ করেন। তৎকালীন মেয়র স্বদেশ চক্রবর্তীও উদ্যোগী হন। কিন্তু বিশেষ কিছুই হয়নি। পুরসভার সূত্রে খবর, ২০০৭-এ স্থানীয় কিছু বাসিন্দার উদ্যোগে তৎকালীন জেলাশাসক খলিল আহমেদ পুরকমিশনারকে এ ব্যাপারে চিঠি দেন। এর পরে নানা স্তরে আলোচনার পরে পিপিপি মডেলে বাস টার্মিনাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০০৮-এর শেষ দিকে টেন্ডার ডেকে একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মৎস্য দফতরের অনুমতি পাওয়া গেলেও রাজ্য ভূমি সংস্কার দফতরের অনুমতি না মেলায় কাজ আটকে যায়। জেলাশাসক সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ বলেন, “নিয়ম হচ্ছে, কোনও পুকুর ভরাট করে কিছু করলে সমান মাপের অথবা তার চেয়ে বড় মাপের জলাশয় করে দিতে হবে। নিয়ম মেনে পদ্মপুকুর ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মধ্যে জলাশয় তৈরি করে দেওয়ায় রাজ্য ভূমি সংস্কার দফতরের অনুমতি মিলেছে।” |
পুরসভার সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুমিত ভট্টাচার্য বলেন, “দেড়শো পাইলিং করে পাঁচতলা ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি তলা হবে আট হাজার বর্গফুটের। নীচের তলাটি পুরোপুরি বাসস্ট্যান্ডের জন্য বরাদ্দ। এক সঙ্গে আটটি বাস দাঁড়ানোর সুবিধা থাকছে। এ ছাড়াও আইডেল বে-তে বাস দাঁড়ানো ও পার্কিং-এর সুবিধা থাকবে।” যদিও ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের বীথিকা পাঁজা বলেন, “নতুন বাসস্ট্যান্ডে সাধারণ মানুষের কতটা সুবিধা হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।”
মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “প্রায় সাত কোটি টাকার প্রকল্প। চলতি বছরের শেষ দিক সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। বিল্ডিংটিকে আবাসন অথবা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে পুরসভা লিজ বাবদ অর্থও পাবে। জমির মালিকদের পুরো প্রথম তল এবং দ্বিতীয় তলের ২৫ শতাংশ দেওয়া হবে বলে চুক্তি হয়েছে।”
|