দুপুরের পরে ফের রান্না শুরু হয়নি ঠিকই, কিন্তু যে সব হাঁড়িতে বিরিয়ানি রাঁধা চলছিল, সেই রান্না হাসপাতালেই শেষ হয়েছে। ভোজও চলেছে। এমনকী, সন্ধ্যায় কাওয়ালির অনুষ্ঠানও বাদ যায়নি। হাসপাতালের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশ সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ করা যায়নি পিজি-তে। তবে মন্ত্রীর আশ্বাস, হাসপাতাল চত্বরে এমন অনুষ্ঠান আর হবে না।
শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, ম্যাটাডরে পরপর হাঁড়ি উঠছে। রান্নার জায়গা পরিষ্কার করছেন এক দল লোক। সাউন্ড বক্স গুছিয়ে তোলা হচ্ছে। অনুষ্ঠানের পরের দিন কোনও চত্বরের যে চেহারা হয়, রাজ্যের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ছবিটা ছিল সে রকমই। |
অনুষ্ঠান শেষ। ম্যাটাডরে তোলা হচ্ছে বিরিয়ানির হাঁড়ি। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র |
কর্তৃপক্ষ বা মন্ত্রীর নির্দেশেও কেন হাসপাতাল চত্বরে বন্ধ করা গেল না এই অনিয়ম? ফিরহাদের দাবি, তাঁরা হস্তক্ষেপ করার পরে রান্না বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সাউন্ড বক্স ব্যবহার না করে গানবাজনা হয়েছে। তিনি বলেন, “পরের বছর থেকে উৎসবটাই বন্ধ করে দেওয়া হবে। এত বছর ধরে হাসপতালে এই অনিয়ম চলে এসেছে। আমরা বিষয়টা জানতাম না। জানার পরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটাই শেষ বার। এই অন্যায় আর চলতে দেব না।” অধিকর্তা প্রদীপবাবু জানান, হাসপাতাল চত্বরে রান্না বা গানবাজনা বন্ধের ব্যাপারে তাঁরা আগেও চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। বৃহস্পতিবার তাই রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের সাহায্য চান তিনি। তবে এ সব সত্ত্বেও রান্নার শেষাংশ যে হাসপাতালেই হয়েছে তা মেনে নিয়েছেন তিনি।
উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা এক রোগীর আত্মীয় বলেন, “সন্ধ্যায় ওষুধ কিনে ফিরছিলাম। গান আর খাওয়া-দাওয়ার দাপটে এটা যে হাসপাতাল সেটা বুঝতেই অসুবিধা হচ্ছিল। গভীর রাত পর্যন্ত চিৎকার-হইচই চলেছে।” কর্তৃপক্ষ জানান, ওই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা কেউই হাসপাতালের কর্মী নন। যেখানে হাসপাতালে বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য কমানোর উদ্যোগের কথা বারবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হয়, সেখানে বছরের পর বছর এমন অনিয়ম চলছেই বা কীভাবে, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। |