এ বার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংঘর্ষের আঁচ গিয়ে পড়ল পড়ুয়ার উপরেও। স্কুল ভোটে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া নিয়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে লাঠির ঘায়ে জখম হল পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্র।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে তালড্যাংরা থানার রাজপুর হাই মাদ্রাসায়। জখম ছাত্রের নাম নাজমুল মল্লিক। জখম হন দু’পক্ষের এক মহিলা-সহ চার জন। তাঁদের সকলকেই বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় পুলিশ যায়। তবে এ দিন রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। কেউ গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৯ এপ্রিল এই স্কুলে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন রয়েছে। এ দিন স্কুলে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী মনোনয়ন পত্র জমা দেন। ৬টি আসনে ১২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। তা নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। সকাল থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছিল। বেলা ১১টার সময় স্কুলের বাইরে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর শতাধিক কর্মী জমায়েত করে। হঠাৎ তাঁদের মধ্যে বচসা থেকে মারপিট বেঁধে যায়। সেই সময় স্কুলে আসছিল ওই স্কুলেরই কিছু পড়ুয়া। মারপিট শুরু হওয়ায় আতঙ্কে কিছু পড়ুয়া দৌড় লাগায়। মারপিটের মধ্যে পড়ে যায় নাজমুল। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সে বলে, “স্কুলে ভোটের ব্যাপারে কিছুই জানতাম না। সঙ্গীদের সঙ্গে স্কুলে যাচ্ছিলাম। |
স্কুলের গেটের কাছে কয়েকজন হল্লা করছিলেন। ভয়ে দৌড়ে পালাতে যাই। হঠাৎ আমার মাথায় লাঠির বাড়ি এসে লাগে। মাথা ফেটে রক্ত পড়তে শুরু করে। মাটিতে পড়ে গিয়েছিলাম। কে যেন ভিড়ের মধ্যে থেকে আমাকে সরিয়ে নিয়ে যান।” মার খেয়ে জখমদের মধ্যে দু’জন সম্পর্কে নাজমুলের কাকা। তাঁদের এক জন সাবের আলি খান বলেন, “আমাদের দলের দু’টি গোষ্ঠী প্রার্থী দেয়। তা নিয়ে এমন মারপিট হবে ভাবতে পারিনি।”
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আব্দুল গনি দালাল ও আইজুল খান নামের তৃণমূলের দুই নেতা পরস্পরের বিরোধী বলে এলাকায় পরিচিত। এক সময়কার বামফ্রন্ট পরিচালিত এই স্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে এ বার ওই দুই তৃণমূল নেতা নিজেদের পছন্দের প্রার্থী দিয়েছেন। আব্দুলের দাবি, “আমরা পুরনো তৃণমূল কর্মী। সদ্য সিপিএম ছেড়ে আসা আইজুল খানরা তৃণমূলের লোক বলে দাবি করে এলাকার দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে। স্কুল ভোটে আমাদের দলের নাম ভাঙিয়ে প্রার্থীও দিয়েছে। তাই এলাকার বাসিন্দারাই ওদের মারধর করেছেন।” আইজুলের বক্তব্য অবশ্য চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে তৃণমূলের বাঁকুড়া জ়েলা কার্যকরী সভাপতি অরূপ চক্রবতী দাবি করেছেন, “ওটা গ্রাম্য ঝগড়া। এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই।” রাজপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ মণ্ডল বলেন, “স্কুল চত্বরে কোনও গোলমাল হয়নি। আমাদের এক ছাত্র জখম হয়েছে বলে শুনেছি। এমনটা না ঘটলেই ভাল হত।” |