বিদ্যালয়ের অভিভাবক পরিচালন সমিতির নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও সিপিএম সমথর্কদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল বৃহস্পতিবার সকালে। জামুড়িয়ার বেনালি সিকেসিটি উচ্চবিদ্যালয়ের অভিভাবক পরিচালন সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটে। দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে জামুড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। সিপিএমের প্রাক্তন উপ পুরপ্রধান সুজিত দত্ত-সহ ৯ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত চলছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিনয়কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, এ দিন মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার কথা ছিল। ১৩, ১৬, ১৭, ১৮ এপ্রিল সিপিএম ও তৃণমূল সমর্থক মোট ১৪ জন মনোনয়নপত্র তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন তৃণমূল প্রার্থী এ দিন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। |
জমা দেওয়া হল না মনোনয়ন। নিজস্ব চিত্র। |
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ সিপিএমের লোকজন একটি মিছিল করে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে স্কুলে যাচ্ছিলেন। মিছিলে তাঁদের ৬ জন প্রার্থীও ছিলেন। বিদ্যালয়ের কাছাকাছি আসতে তৃণমূল সমর্থকরা তাঁদের বাধা দেন। প্রতিবাদ জানাতে গেলে দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সিপিএম সমথর্করা ইট, পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করেন। তৃণমূলের লোকজন পাল্টা লাঠি, রড নিয়ে মিছিলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রহৃত হন জামুড়িয়ার প্রাক্তন উপ পুরপ্রধান সুজিত দত্ত, ডিওয়াইএফ সদস্য অনির্বাণ দত্ত-সহ ১৬ জন। তাঁদের মধ্যে ৩ জন মহিলা ও সিপিএম প্রার্থী ফারুক মল্লিকও ছিলেন। সুজিতবাবুকে ইসিএলের কাল্লা কেন্দ্রীয় হাসপাতালে ও অনির্বাণবাবুকে আসানসোল মহকুমা হাসপাতালে এবং বাকি ৭ জনকে আকলপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের আকলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, “ঘটনাস্থলে জনা দশেক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও প্রথমে তাঁরা নিষ্ক্রিয় ছিলেন। ঘটনা হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখে পুলিশের বিশাল বাহিনী নিয়ে এসে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করা হয়।” তাঁদের দাবি, তৃণমূলের বাধায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে সিপিএম প্রার্থীরা ফিরে যেতে বাধ্য হন।
সিপিএমের জামুড়িয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক মনোজ দত্তের দাবি, স্থানীয় তৃণমূল নেতা নীলু চক্রবর্তী ও অলক দাসের নেতৃত্বে প্রায় ২৩ জন দুষ্কৃতী সিপিএম সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। তাঁদের বিরুদ্ধে জামুড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান তিনি। সিপিএমের সমর্থক ফারুক মল্লিক, অশোক বাউরি, লেবন বাউরিদের কথায়, “আমরা ভাবিনি গ্রামের উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাইরের লোক ভাড়া করে এনে তৃণমূল পুলিশের সামনে এমন ঘটনা ঘটাবে।”
তৃণমূল কংগ্রেসের জামুড়িয়া ব্লক সভাপতি পূর্ণশশী রায়ের অবশ্য পাল্টা দাবি, সিপিএম তাঁদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে। সিপিএমের ১৮ জন নেতা-সমর্থকের বিরুদ্ধে আক্রমণের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি। |