ঝাড়খণ্ড রাজ্যসভা নির্বাচন |
‘বহিরাগত’ প্রার্থী নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধর্নায় জেএমএম নেতা |
রাজ্যসভার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তা নিয়ে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-র অন্দরে। ‘সাংগঠনিক নৈতিকতা’র প্রশ্ন তুলে প্রার্থী সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে কার্যত জেহাদ ঘোষণা করেছেন জেএমএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুধীর মাহাতো। তাঁর মত যে ব্যক্তিগত নয়, সেই প্রমাণও মিলেছে বিভিন্ন জেএমএম নেতার কথাবার্তায়। বিষয়টিকে সামনে রেখে নিজের শহর, জামশেদপুরে সপার্ষদ ধর্নায় বসেছেন সুধীরবাবু। ফলে রাজ্যে ফের টাকার বিনিময়ে রাজ্যসভার প্রার্থীপদ বিলি হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে।
সুধীরবাবুর বক্তব্য, “দল যাঁকে রাজ্যসভা ভোটে প্রার্থী করেছে তাঁর সঙ্গে আমার কোনও ব্যক্তিগত বিরোধ নেই। আমি ওই প্রার্থীর বিরোধিতা করছি দলীয় সংগঠনের স্বার্থে ও নীতিগত প্রশ্নে। কারণ যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে তিনি আদৌ দলীয় সংগঠনের লোক নন।”
প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “সংগঠনের বাইরের লোককে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে আখেরে দলের কোনও লাভ হয় না। বরং বদনামই হয়। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতাও তো জেএমএম-এর আছে। তবুও সেই একই ভুল কেন বার বার করা হবে?” |
প্রসঙ্গত জেএমএম সহ-সভাপতি জানান, বিগত বছরগুলিতে দু’দফায় রাজ্যসভা নির্বাচনে সংগঠনের বাইরের লোককে (আর কে আনন্দ, কে ডি সিংহ) ভোট দিয়ে দিল্লি পাঠিয়েছেন জেএমএম বিধায়করা। কিন্তু তাতে
সংগঠনের কোনও শ্রীবৃদ্ধি ঘটেনি। ওই সাংসদের ভোট দলের কোনও কাজেই আসেনি। বরং বদনাম হয়েছে। রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আর কে আনন্দ কংগ্রেসের হাত শক্ত করেছেন। আর শিল্পপতি কে ডি সিংহ যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে।
সুধীর মাহাতো বলেন, “ঝাড়খণ্ড আন্দোলনের প্রথম সারিতে থাকা রাজ্যের জেএমএম নেতারা একাধিক বার মুখ্যমন্ত্রী এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। এখনও উপ-মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব পালন করছেন জেএমএম নেতারা।”
তাঁর প্রশ্ন, জেএমএম নেতা-কর্মীরা যখন রাজ্য পরিচালনা করতে পারেন, তখন রাজ্যসভা নির্বাচনে বাইরের লোককে প্রার্থী করা হবে কেন। জেএমএমের অভ্যন্তরেই এই প্রশ্ন ওঠায় বিজেপি রাজ্যসভা নির্বাচনে জেএমএম প্রার্থী সঞ্জয় কুমারকে সমর্থন দেবে কি না, তা নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। এর আগে বহিরাগত শিল্পপতি অংশুমান মিশ্রকে প্রার্থী চেয়ে দলের মধ্যেই বিপাকে পড়েন বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী।
এ দিকে, সর্বসম্মত বিরোধী প্রার্থীর ব্যাপারে লড়ে যাচ্ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা জেভিএম নেতা বাবুলাল মারান্ডি। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে তিনি কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে একটি চিঠি দিয়েছেন। আজ জেভিএম-এর পক্ষে প্রার্থী হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। কংগ্রেস অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্যই করেনি। |