পরস্পরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ জানালেন আসানসোল মহকুমা হাসপাতালের দুই চিকিৎসক। তাঁরা দু’জনেই তৃণমূল প্রভাবিত চিকিৎসক সংগঠনের নেতা। সিপিএম প্রভাবিত রাজ্য কোঅর্ডিনেশন কমিটির দাবি, এই ঘটনায় তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠনের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্বই প্রকাশ পেয়েছে।
ঘটনা সোমবার সকালের। পরে দুই চিকিৎসকই হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাসের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। এক জন আসানসোল (দক্ষিণ) থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেছেন। নিখিলবাবু বলেন, “দু’জনেরই অভিযোগ পেয়েছি। আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করছি।” অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তৃণমূল প্রভাবিত প্রগ্রেসিভ সার্ভিস ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক প্রভাসচন্দ্র মাজির সঙ্গে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ললিত রায়ের বচসা হয়। ললিতবাবুও ওই চিকিৎসক সংগঠনের সদস্য। তবে আগে তিনি সিপিএমের চিকিৎসক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রভাসবাবুর অভিযোগ, সকালে তিনি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক অভিজিৎ দত্তকে নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে সুপারের চেম্বারে যাচ্ছিলেন। দরজার কাছে ললিতবাবু তাঁকে ধাক্কা মারেন। কারণ জানতে চাইলে ‘দেখে নেব’ বলে হুমকিও দেন।
ললিতবাবুর পাল্টা অভিযোগ, হাসপাতালে প্রভাসবাবুর মুখোমুখি হতেই তিনি ঘুষি মারেন। প্রতিবাদ করলে হুমকি দেন। এর পরেই পুলিশে অভিযোগ জানান তিনি। ললিতবাবুর দাবি, তাঁকে ও প্রসূন রায় নামে এক চিকিৎসককে হাসপাতালে সংগঠন বাড়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সে কারণেই তিনি প্রভাসবাবুর চক্ষুশূল হয়েছেন। এর আগেও প্রভাসবাবুর হাতে তিন জন চিকিৎসক নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। ললিতবাবুর মতে, “দীর্ঘদিন ধরেই দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন প্রভাসবাবু।” সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলেও তিনি জানান। যদিও প্রভাসবাবুর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানো হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক আগে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে বদলি করা হয়েছিল ললিতবাবুকে। তাতে তাঁর ধারণা হয়, এই ঘটনার পিছনে প্রভাসবাবুর হাত রয়েছে। অভিযোগ, মাসখানেক আগে আসানসোলে ফের বদলি হয়ে এসে প্রভাসবাবুকে ‘দেখে নেবেন’ বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও সে কথা অস্বীকার করে ললিতবাবু দাবি করেন, “ওঁকে দেখে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ওঁর আচরণে বিরক্ত হয়ে সংগঠন অন্য লোকদের দায়িত্বে আনতে চাইছে। এত দিন সংগঠনের কাজের দোহাই দিয়ে উনি হাসপাতালের কাজে বহু ফাঁকি দিয়েছেন। সেই সুযোগ আর থাকবে না বুঝেই ওঁর জনা কয়েক অনুগামী কুৎসা ছড়াচ্ছে।” ‘লজ্জিত প্রদীপ’। সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্তদের এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এই ঘটনায় তিনি লজ্জিত, এমনটাই জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। সোমবার বর্ধমানে পুলিশ সুপারের অফিসে দাঁড়িয়েই তিনি বলেন, “হাসপাতালে সাংবাদিকদের উপরে হামলায় অভিযুক্তদের পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। তাতে সরকারের জোট সঙ্গী হিসেবে আমি লজ্জিত।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে গ্রেফতারের ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “এই সরকার মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে।” |