ঘর সাফাইয়ের পরে সামান্য ময়লা পড়ে থাকলে চুলের মুঠি ধরে মারধর ছিল নিত্য ব্যাপার। রুটি এত শক্ত কেন? দেওয়ালে ঠুকে দেওয়া হত মাথা।
অভিযোগের এখানেই ইতি নয়। সারাক্ষণের ‘কাজের মেয়ে’ হিসেবে নবদ্বীপে এক পুলিশকর্মীর বাড়িতে থাকতে যাওয়া অনুপ্রিয়া বিশ্বাসকে দিনের পর দিন বাড়িও যেতে দেওয়া হত না। শুক্রবার রাতে আগুনে পুড়ে তাঁর মৃত্যুর পরে বছর বাইশের ওই তরুণীর বাবা শম্ভু বিশ্বাস নবদ্বীপ থানায় এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন।
নবদ্বীপের মহেগঞ্জে অনুপ্রিয়া যে পুলিশকর্মীর বাড়িতে কাজ করতেন, সেই বারীন্দ্র বসু উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশে রয়েছেন। ঘটনার পরেই বাড়ির লোকজন অন্যত্র চলে গিয়েছেন। শনিবার সারা দিন চেষ্টা করেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। নবদ্বীপ থানার আইসি শঙ্কর রায়চৌধুরী বলেন, “ঘটনার পর থেকেই বারীন্দ্রবাবুদের খোঁজ নেই। মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই পুলিশকর্মী ও তাঁর পরিবারের অন্যদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
শম্ভুবাবু বলেন, “শুক্রবার রাতে খবর পেয়ে বারীন্দ্রবাবুর বাড়ি গিয়ে দেখি, ঘরের মেঝেয় মেয়ের পোড়া দেহ পড়ে রয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “ওই বাড়ির সকলে মেয়ের উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত। ঘরে ময়লা পড়ে থাকলে দেওয়া মাথা ঠুকে দেওয়া হত প্রায়ই। রুটি শক্ত হলেও চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হত। বাড়িতেও যেতে দিত না। অত্যাচার সইতে না পেরে মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে।”
অনুপ্রিয়ার বৌদি সুমিত্রাদেবী-সহ অনেকেই কিন্তু ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে মানতে নারাজ। তাঁর অভিযোগ, “শুধু মারধর নয়, অনুর উপরে বিকৃত শারীরিক নির্যাতনও চালাত ওই পুলিশকর্মী। শুক্রবার রাতে তেমনই কিছু করা হয়। তার পরে দোষ ঢাকতে ওকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আত্মঘাতী হওয়ার মেয়ে ও নয়।” পুলিশকর্মীর প্রতিবেশীদের একাংশেরও তেমনই অভিযোগ। তাঁদের মতে, খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে আত্মহত্যার ‘গল্প’ সাজাতেই দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাতেই এলাকার কিছু বাসিন্দা উত্তেজিত হয়ে ওই বাড়িতে ভাঙচুর চালান। পরে নবদ্বীপের বিডিও এ টি আনসারি ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি সামাল দেন। ময়না-তদন্তের জন্য তরুণীর মৃতদেহ নবদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিডিও বলেন, “উত্তেজনা থাকায় ওই পাড়ায় পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে।” নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র জানান, অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর খোঁজে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। |
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু
নিজস্ব সংবাদদাতা • তেহট্ট |
বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল এক ট্রাক চালক ও খালাসির। নাম গৌতম ঘোষ (৫৩) ও মুনিয়া মাঝি (৩০)। শনিবার দুপুরে তেহট্টের পাঁচদাড়া এলাকায় একটি রাসায়নিক সারের দোকানে সার নামানোর পর লরিটিকে রাস্তার একপাশে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলেন গাড়ির চালক গৌতম। সেইসময় লরির ছাদে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় বিদ্যুস্পৃষ্ট হন মুনিয়া। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন গৌতমও। |