|
|
|
|
|
প্লেটে প্লেটে আনন্দসিম্ফনি |
টেবিলে ভাল খাবার দেখলে মুহূর্তেই কত সমীকরণ বদলে যায়।
জীবনটা রূপকথা হয়ে যায়। সেই রূপকথারই কিছু অধ্যায়।
|
|
ক্যাফেইন
মানছি, ক্যাফেইন বেশ কুখ্যাত। কিন্তু সব সময় দোষটাই বা দেখেন কেন? আসলে তো কোনও কিছুরই বেশি ভাল হয় না। মাত্রা অল্প রাখলে ক্যাফেইনও কিন্তু অনেক উপকারে আসে। যেমন ক্যাফেইনের হালকা ডোজে, একটু আধটু মন খারাপ সেরে যায়। তাই বলে আবার মন ভাল করার অজুহাতে নেশা ধরে বসবেন না। দিনে দু-এক কাপ পর্যন্ত ঠিক আছে। তার বেশি চা কফি কিন্তু বিষ। তাতে স্নায়ুর ক্ষতি হয়, একটুতেই বিরক্তি আসে, মাথাও ধরে। |
|
|
প্রোটিন
মাছ, পোলট্রির ডিম, মাংস, কচি পাঁঠার ঝোল প্রোটিন পরিবারের সুস্বাদু চর্ব্যচোষ্য। এ সব খেলেও বড় তৃপ্তি হয়, মন ফুরফুরে লাগে। কারণটা লুকিয়ে প্রোটিনের মধ্যেকার অ্যামিনো অ্যাসিডে। আরও খোলসা করে বলতে গেলে, টাইরোসিন নামের এক বিশেষ অ্যামিনো অ্যাসিডে। তার জোরেই তো ডোপামাইন, নোরেপাইনফ্রাইন, এপিনফ্রাইন’রা চনমনে হয়ে ওঠে। আরে, এদের চিনলেন না? এরাই তো সব নিউরোট্রান্সমিটার। অর্থাৎ যাদের জন্য মাথাটা কেমন ঝরঝরে হয়ে যায়, এনার্জি লেভেলটাও অনেকটা বেড়ে যায়। ফলে আপনি খুশিতে ছটফট করে ওঠেন। তাই যখনই মনটা খারাপ খারাপ লাগবে, ডায়েট-ফায়েট ভুলে এক থালা খাবার নিয়ে বসে পড়ুন। কব্জি ডুবিয়ে খান মাছ, মাংস, ডিম, ছোলা, দুধ, চিজ, দই। দেখবেন, কী ভালটাই না লাগবে! |
|
|
চকলেট
এটা তো সবারই জানা টেকনিক। হয়তো মনটা একটু মেঘলা হল, ধুত্তোরি কিচ্ছুটি আর ভাল লাগে না। ঝটিতি দাওয়াই এক টুকরো চকলেট। তারিয়ে খাও অ্যান্ড দুঃখ তাড়াও। আসলে চকলেট খেলে এন্ডরফিনের মাত্রা বাড়ে। এটাই হল বিখ্যাত ‘হ্যাপি হরমোন’, হাসিখুশির সঙ্গে গভীর যোগসাজশ। তাই চকলেটের প্রতি কামড়ে হৃদয় অমন ধারা ময়ূরের মতো নেচে ওঠে। |
|
|
কার্বোহাইড্রেট
সিরোটোনিন হল ফিল গুড হরমোন। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ডায়েটে রয়েছেন, দু-এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের অনেকেই অবসাদে ভোগেন। লো কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার জন্য এঁদের সিরোটোনিন লেভেল নেমে যায়, সেটাই নাকি এই অবসাদের কারণ। তাই মুড অফ হলেই কার্বোহাইড্রেট ভরা খাবার খান। যেমন হোল হুইট ব্রেড, ভাত, রুটি, পরোটা বা কলা, ন্যাসপাতি, আপেল ইত্যাদি ফল। মন ভাল হবেই, গ্যারান্টি। |
|
|
ডিম
ডিমের উপকার নিয়ে তো এক ডজন বই লিখে ফেলা যাবে। তার মধ্যে একটা অধ্যায় কী হবে বলুন তো? কুসুমে কুসুমে পরমানন্দ বা মন মোর ডিমের সঙ্গী...যাকগে, এ সব যাচ্ছেতাই হেডিং নিয়ে মাথা না চুলকে বরং অধ্যায়টির বিষয়বস্তু বিষয়ে বলা যাক। তাতে থাকবে ডিম ও মনের গভীর প্রেমের কথা। সেই যে একটা বি কমপ্লেক্স ভিটামিন ছিল না, কোলিন নাম। সেটা নাকি অনেকের পুষ্টিতেই বাড়ন্ত। সেটা মেলে উচ্চ কোলেস্টেরল যুক্ত খাবারে। যেমন লিভার, ডিমের কুসুম। সেটা নইলে নাকি মনঃসংযোগ ও স্মৃতিশক্তির ভীষণ বিপদ। তাই ডিমের ওই উপাদেয় হলদে কুসুমটিই খান। নিমেষে চাঙ্গা হয়ে উঠবেন। |
|
|
সুস্বাদু হলেই চলবে
খাবার সময় স্বাদটা বাড়াবাড়ি রকমের ভাল হলেও এন্ডরফিন হরমোনও ভেল্কি দেখায়। আগেই বলেছি, ওর মধ্যেই আনন্দে থাকার রসায়নটা লুকিয়ে। কোনও কোনও মতে, প্রভাবটা অনেকটা মাদকেরই কাছাকাছি। তাই আইন না ভেঙেই, সেই তূরীয় মেজাজটা চাইলে, ভাল ভাল খাবার খান। দারুণ তথ্য না? |
|
|
ফলিক অ্যাসিড
চিকিৎসকরা বিধান দিয়েছেন খাবারে ফলিক অ্যাসিডের অভাব হলে মানসিক অবসাদ হতে পারে। কারণ ফলিক অ্যাসিডের পরিমাণ কম হলে সিরোটোনিনের মাত্রাও নেমে যায়। ব্যস, অমনি মন খারাপের আক্রমণ। তাই, ও রকমটা লাগলেই এক গ্লাস অরেঞ্জ জুস বানিয়ে চোঁচোঁ খেয়ে ফেলুন দেখি। পালংপনিরও খেতে পারেন। এ সবেই ফলিক অ্যাসিড প্রচুর। তাই মন খারাপও
তক্ষুণি ভ্যানিশ। |
|
|
সেলেনিয়াম
নাম শুনেই বুঝেছেন এটি একটি খনিজ লবণ। গবেষণা বলছে মুড অফের দায়ভার নাকি খানিকটা এর ওপরও বর্তায়। কারণ সেলেনিয়াম কমে গেলেই রাজ্যের বিরক্তি, চিন্তা, হতাশা এসে জড়ো হয়। আবার খাবারে সেলেনিয়াম ঠিকঠাক হাজির হলেই সব ওক্কে। মনে স্ফূর্তি একেবারে টগবগ করে উঠবে। তা এই মহাশয়কে পাবেন টুনা মাছ, হোল গ্রেন খাবার, এই সবে। অতএব, স্যান্ডউইচের দোকানে মেনু নিয়ে আর কোনও চিন্তা রইল না। স্রেফ একটা হোল গ্রেন ব্রেড দেওয়া টুনা স্যান্ডউইচ অর্ডার দিয়ে দিন। তার পর মেজাজটা কেমন শরিফ হয়ে যায় দেখুন। |
|
|
|
|
|
|