একটি ব্যঙ্গচিত্রকে কেন্দ্র করে মার খেলেন এক অধ্যাপক। হাজতবাসও করলেন। আর নিউ গড়িয়ায় সেই অধ্যাপককে মারধরের ঘটনাতেও উঠে এল নির্মাণকাজে মালপত্র সরবরাহের যোগ!
স্থানীয় সূত্রের খবর, অম্বিকেশ মহাপাত্র নামে ওই অধ্যাপককে যারা মারধর করেছিল, তারা এলাকায় সক্রিয় তৃণমূলকর্মী বলেই পরিচিত। ওই যুবকেরা এলাকার বিভিন্ন নির্মাণে ইট, বালি, পাথরকুচি সরবরাহ করে। অম্বিকেশবাবুদের আবাসনের এক বাসিন্দা জানান, তাঁদের কয়েকটি নির্মাণকাজেও ইমারতি দ্রব্য সরবরাহ করেছিল তারা। কয়েকটি ক্ষেত্রে ভুয়ো বিল জমা দিয়ে টাকা আদায়ের জন্য আবাসিকদের উপরে চাপ সৃষ্টি করছিল। ভুয়ো বিল দিয়ে টাকা আদায়ের জন্যই তারা অম্বিকেশবাবু এবং আবাসনের সম্পাদক সুব্রত সেনগুপ্তকে চাপে রাখার চেষ্টা করেছিল বলে ওই আবাসিকদের অভিযোগ।
এই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা অরূপ মুখোপাধ্যায়ের নাম উঠে এসেছে। মূলত অরূপের নেতৃত্বেই অম্বিকেশবাবুকে মারধর করা হয় বলে আবাসিকদের একাংশের অভিযোগ। তাঁর নির্দেশে অমিত সর্দার নামে এক তৃণমূলকর্মী থানায় অম্বিকেশবাবুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অরূপ অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি জমি কেনাবেচার কাজ করি। আমাদের একটি সংস্থাও আছে। তবে অনেকেই ওই আবাসনে ইমারতি মালপত্র সরবরাহ করেছে।”
প্রাক্তন সিপিএম মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় শুক্রবার গভীর রাতে অম্বিকেশবাবুকে নিয়ে পূর্ব যাদবপুর থানায় যান। মারধরের ঘটনায় অরূপ-সহ চার জনের নামে এফআইআর করেন অম্বিকেশবাবু। পরে কান্তিবাবু বলেন, “এখানে নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতা দখলের জন্য যত রকম নোংরামি সম্ভব, তা করা হচ্ছে। সুস্থ, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের পক্ষে বোধ হয় আর এ রাজ্যে বসবাস করা সম্ভব হবে না।”
মালপত্র সরবরাহ নিয়ে অভিযোগের পাশাপাশি উঠে এসেছে স্থানীয় রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের কথাও। পুরসভার গত নির্বাচনে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে দখল রেখেছিল সিপিএম। কিন্তু বিধানসভার ভোটে ওই ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী পিছিয়ে ছিলেন। তার পর থেকেই এলাকায় অরূপ এবং তার দলবল ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ।
আবাসন সূত্রের খবর, বিধানসভার নির্বাচনের সময় আবাসনের কয়েক জন বাসিন্দার সঙ্গে ওই যুবকদের বচসা হয়েছিল। তার পর থেকেই ওই আবাসনের বাসিন্দাদের নানা ভাবে হেনস্থা শুরু করে তারা। এক বাসিন্দা জানান, ওই আবাসনের সমবায়ে নির্বাচন আসন্ন। এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে সেই নির্বাচনে অম্বিকেশবাবুদের বোর্ড থেকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করার জন্যই এত কাণ্ড বলে আবাসিকদের একাংশের অভিযোগ। |