|
|
|
|
বিজ্ঞানীকে ‘মিথ্যা’ মামলায় গ্রেফতার করার অভিযোগ |
রোশনী মুখোপাধ্যায় |
নোনাডাঙার বস্তি থেকে উচ্ছেদ-হওয়া গৃহহীনদের ধর্নায় যোগ দেওয়ায় এক বিজ্ঞানীকে পুলিশি হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইএসইআর)’-এ অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, ওই মধ্য তিরিশের বিজ্ঞানীর নাম পার্থসারথি রায়।
আপাতত পার্থবাবু পুলিশ হেফাজতে। গত ৮ এপ্রিল, রবিবার নোনাডাঙার উচ্ছেদ-বিরোধী অবস্থান মঞ্চ থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযোগে বলা হয়েছে, পার্থবাবু গত ৪ এপ্রিল নোনাডাঙার আন্দোলনে হাজির হয়ে সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেন। সেই অভিযোগেই তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির দু’টি জামিন-অযোগ্য ধারা৩৩২ এবং ৩৫৩ প্রয়োগ করেছে পুলিশ। কিন্তু আইআইএসইআর-এ পার্থবাবুর সহকর্মী বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, সে দিন তিনি জীবনবিজ্ঞান বিভাগের বৈঠক এবং অন্যান্য কাজে আইআইএসইআর-এ ব্যস্ত ছিলেন। সেই মর্মে তাঁদের তরফে প্রামাণ্য নথিও আদালতে জমা পড়েছে। পার্থবাবুর মুক্তির দাবিতে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের কাছে গণস্বাক্ষর সংবলিত স্মারকলিপি জমা দিতে চান বিজ্ঞানীদের একাংশ। মঙ্গলবার তাঁদের উদ্যোগে অনলাইনে সই সংগ্রহ শুরুও হয়েছে। তাতে সই করেছেন শিক্ষাবিদ অনিল সদগোপাল, মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা গৌতম নাভালখা, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্তাক্রুজ ক্যাম্পাসের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক রবার্ট ওয়েল-সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। এ দিন আইআইএসইআর-এর ক্যাম্পাসেও পার্থবাবুর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে।
|
পার্থসারথি রায় |
পার্থবাবুর দুই দিদি এ দিন লালবাজারে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের বক্তব্য, লালবাজার সেন্ট্রাল লক-আপে আটক কোনও বিচারাধীন ব্যক্তির সঙ্গে বাড়ির লোককে দেখা করতে দেওয়ার রেওয়াজ নেই। আগামী বৃহস্পতিবার পার্থবাবুর মামলাটি আবার আদালতে উঠবে। এ দিনই আবার নোনাডাঙার উচ্ছেদ-হওয়া মানুষদের পুনর্বাসন এবং ধৃতদের মুক্তির দাবিতে মিছিল করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের ৫১ জন।
গত রবিবার ই এম বাইপাসের অবস্থানে বেশ কিছু বামপন্থী রাজনৈতিক এবং গণ ও মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে পার্থবাবু যোগ দিয়েছিলেন। পুলিশ ৬৯ জনকে গ্রেফতার করে। পরে রাতে ৬২ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। যে সাত জনকে পুলিশ ছাড়েনি, তাঁদেরই অন্যতম পার্থবাবু। তিনি ‘ওয়েলকাম ট্রাস্ট-ডিবিটি ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্স ইন্টারমিডিয়েট ফেলো’ এবং ‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস’-এর অ্যাসোসিয়েটও বটে। বিজ্ঞান জার্নাল ‘নেচার’-এও তাঁর একাধিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত। সোমবার পুলিশ পার্থবাবু-সহ ওই সাত জনকে আলিপুর আদালতে তোলে। বিচারক ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
ধৃতদের পক্ষের অন্যতম আইনজীবী শুভাশিস রায় বিজ্ঞানীদের দেওয়া তথ্য আদালতে জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন। ওই মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী বলে উপস্থিত হয়ে সোমবার বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ও রাজদীপ মজুমদার বলেছিলেন, “নোনাডাঙায় বস্তি উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করেছে নকশালপন্থীরা। পুলিশি তদন্তে এ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তারা ওই এলাকায় অস্ত্রও মজুত করেছে।”
কিন্তু শুভাশিসবাবুর দাবি, “ওই মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন তপন সাহা। পুলিশের এফআইআর-এ কোথাও অস্ত্র বিষয়ক অভিযোগও নেই।” |
|
|
|
|
|