নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ইস্টবেঙ্গল যখন ইরাকে পৌঁছে আরবিলের সঙ্গে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন কলকাতায় ট্রেভর মর্গ্যানের ফতোয়ায় টোলগেদের অনুশীলনে ঢোকা বন্ধ হয়ে গেল সাংবাদিকদের। সোমবার সকাল থেকেই কোচের অলিখিত নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হল ক্লাবের প্রধান গেট। অন্য কোনও জায়গা দিয়ে কেউ টোলগে-গুরপ্রীতদের অনুশীলন দেখতে ঢুকে পড়লেও তাঁদের বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন ব্রিটিশ কোচ। এবং মর্গ্যান এই নিয়ম চালাতে চান আগামী কয়েক দিনও।
গত শুক্রবার অনুশীলন চলার সময় টোলগে এবং গুরবিন্দর নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। কিক বক্সিং থেকে কুস্তিকোনও কিছুই বাদ যায়নি। অনেকক্ষণ ধরে চলে বিশ্রী এবং নজিরবিহীন এই ঘটনা। রাগে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান ইস্টবেঙ্গল কোচ। দুই ফুটবলারকে ডেকে জরিমানা ঘোষণা করেন তিনি। পরে অবশ্য তা আর নেওয়া হয়নি। পুরো ঘটনাই ঘটে মাঠে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে। ইস্টবেঙ্গল কোচ সাংবাদিকদের ‘অনুরোধ’ করেছিলেন, “কেউ যদি এই মারামারির ছবি চ্যানেলে দেখান বা লেখেন তবে তাদের আর মাঠে ঢুকতে দেব না।” সাংবাদিকরা স্বভাবতই পেশার তাগিদে সেই অনুরোধ রাখতে পারেননি। তাতেই প্রচণ্ড চটেছেন মর্গ্যান। রাতে ফোনে ধরা হলে ইস্টবেঙ্গল কোচ বললেন, “আমার অনুশীলনের সময় ভবিষ্যতে কোনও সাংবাদিক বা ক্যামেরাম্যানকে মাঠে ঢুকতে দেব না। কোনও ছবিও তুলতে দেব না। যদি কেউ কথা বলতে চান, তা হলে অনুশীলনের পর গেট খুললে কথা বলতে হবে।”
|
বন্ধ গেটের ওপারে প্র্যাক্টিস। সোমবার ইস্টবেঙ্গল তাঁবুর সামনে। ছবি: উৎপল সরকার |
ময়দানে কোচের সঙ্গে সাংবাদিকদের ঝামেলা নতুন কিছু নয়। তবে সে গুলোর কারণ ছিল টিম বা কোচের সমালোচনা। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া মারামারির ছবি না দেখানোর ‘অনুরোধ’ কোনও কোচ করেননি। এবং তার ফলে ফতোয়ারও শিকার হয়নি সংবাদমাধ্যমও। কোচেরা বিচ্ছিন্নভাবে এক দিন অনুশীলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। মর্গ্যানের মতো টানা নিষেধাজ্ঞা জারি করেননি।
মর্গ্যানের ফতোয়ায় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন ক্লাব কর্তারাও। ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার বললেন, “কোচকে আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। আমাদের মাঠে কাকে ঢুকতে দেব না দেব সেটা আমাদের ব্যাপার। আপনাদের অফিসে কি সবাইকে ঢুকতে দেন?”
মর্গ্যান এ দিন অনুশীলন করেন জনা আটেক ফুটবলারকে নিয়ে। আজ মঙ্গলবার ইরাকের ক্লাব আরবিল এস সি-র সঙ্গে এ এফ সি কাপের ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের। যাদের কাছে ঘরের মাঠে ০-২ হেরেছিলেন টোলগে-পেনরা। মর্গ্যান এবং টোলগে ইরাকে যাননি। রয়ে গিয়েছেন গুরপ্রীতও। পরপর তিন ম্যাচে হেরে ইতিমধ্যেই এই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। ইরাকে মর্গ্যানের বদলে কোচের দায়িত্ব পেয়েছেন রঞ্জন চৌধুরী। সোমবার সন্ধ্যায় মল স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে যাওয়ার আগে আরবিলে ফোনে ধরা হলে রঞ্জন বললেন, “আমরা আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে এসেছি। স্টেডিয়ামে অনুশীলন করে সড়গড় হতে চাই।” ম্যাচের গুরুত্ব না থাকলেও ইস্টবেঙ্গল ফ্যান ক্লাব টাইগার্স অন দ্য ফিল্ডের ছয় সদস্য ম্যাচ দেখতে ইরাক গেছেন।
রবিবার স্টেডিয়ামের পাশে একটি কৃত্রিম টার্ফের মাঠে অনুশীলন করেছিলেন পেন-মেহতাবরা। সেখানে প্রচণ্ড ভিড় হয়েছিল। সেখানে এসেছিলেন কুর্দিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ইদ্রিশ বাজরানি। যিনি আরবিল টিমের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। ইদ্রিশ অনুশীলন দেখতে এসে বলে যান, আজ মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গল জার্সি পরে মাঠে থাকবেন। জানা গিয়েছে, ইস্টবেঙ্গল তিন বিদেশিকে মাঠে নামাবে। এডমিলসনের সঙ্গে ফরোয়ার্ডে খেলতে পারেন রবিন সিংহ। শুরু থেকে নামতে পারেন মেহতাব এবং সুবোধকুমার। আরবিল কোচ নিজার মহরুশ বললেন, “উপভোগ্য ম্যাচ হবে। ইস্টবেঙ্গল তিনটি ম্যাচ হেরেছে। ওরা অল আউট যাবে।” এ দিকে পৈলান অ্যারেজের সাবিথকে নিতে পারে ইস্টবেঙ্গল। মহমেডানের স্টপার সফর সর্দারের লাল-হলুদে আসাও পাকা। |