দুর্ভোগ অসংখ্য যাত্রীর
নতুন সিগন্যাল ব্যবস্থায় শুরুতেই হোঁচট মেট্রোর
শুরু হয়েছিল শনিবার রাতে। রবিবার দুপুর দুটোতেও সেই কাজ শেষ না-হওয়ায় ছুটির দিনে প্রথম থেকেই বিভ্রাট দেখা দিল মেট্রোয়। এ নিয়ে কোনও আগাম ঘোষণা ছিল না। সমস্যা চলাকালীনও কোনও ঘোষণা শোনা যায়নি স্টেশনে স্টেশনে। যার জেরে ছুটির দিনে হয়রান হলেন অসংখ্য যাত্রী।
রবিবার সাধারণত দুপুর দুটো থেকে মেট্রো চলে। কিন্তু এ দিন তা সেই সময়-সারণী অনুযায়ী চলেনি। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত অনিয়মিত থেকেছে ট্রেন চলাচল। যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেন কখন চলবে বা কেন দেরি হচ্ছে, তা নিয়ে কোনও স্টেশনেই ঘোষণা করা হয়নি।
কেন এই সমস্যা? মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (সাধারণ) প্রত্যুষ ঘোষ জানান, এ দিন কবি সুভাষ থেকে মহানায়ক উত্তমকুমার পর্যন্ত সিগন্যালিং ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয় করার কাজ হচ্ছিল। সেই ব্যবস্থা পাকাপাকি ভাবে পরীক্ষা করতে গিয়েই দুপুর দুটোয় প্রথম ট্রেন ছাড়তে পারেনি। কিন্তু তার পরেও মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, এত দিন পুরোটাই সাধারণ সিগন্যাল ছিল। কিন্তু এ দিন একটি অংশে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল চালু হওয়ার পরে, সাধারণ সিগন্যালের সঙ্গে সেটির সমন্বয় করে ট্রেন চালাতে হচ্ছিল। যার ফলে মহানায়ক উত্তমকুমার থেকে দমদমগামী ট্রেন ছাড়তে দেরি হয়েছে। সেই কারণেই দমদম স্টেশন থেকেও কবি সুভাষগামী ট্রেন ছাড়তে দেরি হয়ে যায়। বিকেলের দিকে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় বলে মেট্রো-কর্তৃপক্ষের দাবি।
কিন্তু এ দিন যে কাজ করা হবে, তা আগাম যাত্রীদের জানানো হয়নি। মেট্রো সূত্রের খবর, সিগন্যাল ব্যবস্থায় বদলের কাজ রাতে শুরু হলেও তা যে রবিবার দুপুরেও শেষ হবে না, এটা ভাবতে পারেননি কর্তারা। পাশাপাশি, মেট্রো-বিভ্রাট নিয়ে কোনও স্টেশনেই ঘোষণা করা হয়নি। কর্তাদের কাছেও এর সদুত্তর মেলেনি। এ দিন দমদম স্টেশনে প্রথম মেট্রো ধরতে হাজির হওয়া এক যাত্রী জানান, ট্রেন কেন ছাড়ছে না, তা নিয়ে কোনও তথ্য যাত্রীদের জানানো হয়নি। বেশ কিছুক্ষণ পরে একটি ট্রেন মহানায়ক উত্তমকুমার পর্যন্ত যাবে বলে জানানো হয়। বিভ্রান্তিতে পড়েন দক্ষিণ শহরতলির বাসিন্দারাও। তাঁদের অনেকেই এ দিন গীতাঞ্জলি, কবি সুভাষ বা মাস্টারদা সূর্য সেন স্টেশনে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু ট্রেন পাননি। কেউ কেউ ঠায় অপেক্ষা করেছেন। কেউ বা স্টেশন থেকে বেরিয়ে বাস, ট্যাক্সি নিয়ে গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন। দমদম থেকে এ দিনের প্রথম ট্রেন ছাড়ে দুপুর ২টো ২০ মিনিটে। বিকেল তিনটে নাগাদ কবি সুভাষ থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ে বলে খবর।
এ দিন বিকেল তিনটে নাগাদ গিরিশ পার্ক স্টেশনে মেট্রো ধরতে এসেছিলেন সৌমিতা দাশগুপ্ত। কিন্তু স্টেশনে ঢোকার আগেই নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে ট্রেন না চলার খবর পান। তিনি জানান, তাঁর মতো অনেকেই বেরিয়ে এসে বাস ধরে গন্তব্যে রওনা হন। ছুটির দিনেও মেট্রো এ ভাবে আটকে যাওয়ায় বাসে ভিড় ঠেলেই যাতায়াত করতে হয়েছে যাত্রীদের। এক-একটি মেট্রো স্টেশনের সামনে দাঁড়াতেই পিলপিল করে ভিড় বেড়েছে বাসে। কোথাও কোথাও সুযোগ বুঝে বাড়তি ভাড়া দাবি করেছেন ট্যাক্সিচালকেরাও।
ছুটির দিনে কেন এ ভাবে আটকে গেল মেট্রো? মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সিগন্যাল ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে গেলে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে হত। কিন্তু তা করা যাবে না। তাই, শনিবার রাত থেকেই স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করার কাজ শুরু হয়। এ দিন দুপুর পর্যন্ত সেই কাজ চলে। মেট্রোর এক অফিসারের দাবি, এই সিগন্যাল ব্যবস্থা পরিবর্তন করা সময়সাপেক্ষ। সে কারণে আগে থেকে ঘোষণা করে এ দিন কিছুক্ষণ মেট্রো পরিষেবা বন্ধ রাখা হলে যাত্রীরা এই অসুবিধায় পড়তেন না। কিন্তু পরিষেবা এবং মেরামতির কাজ, দুটো একসঙ্গে করতে গিয়েই সাধারণ মানুষকে এই ফাঁপরে ফেলেছেন কর্তারা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.