নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কলেজে গোলমালের জেরে স্থানীয় কংগ্রেস নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি সুলতান সিংহের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে বেলুড় লালবাবা কলেজে। সুলতান সিংহ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অন্য দিকে, টেস্টে ফেল করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ট ওয়ান পরীক্ষায় বসার দাবিতে এ দিনই দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অধ্যক্ষ-সহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘেরাও করা হয় জয়পুরিয়া কলেজে। টিএমসিপি নিয়ন্ত্রিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ধীরজ সোনকরের নেতৃত্বে এই ঘেরাও হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, লালবাবা কলেজে গোলমাল বাধে প্রথম বর্ষের পরীক্ষার ফর্ম পূরণ ঘিরে। যে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কম, তাঁদের অভিভাবকেরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা না করলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রতিবাদে এ দিন ২০-২২ জন পড়ুয়া অধ্যক্ষের ঘরে বিক্ষোভ দেখান। অধ্যক্ষ দিলীপ বারিক বলেন, “হয় অভিভাবককে দেখা করতে হবে, না হয় মুচলেকা দিতে হবে বলায় ওরা ঝামেলা শুরু করে। নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস কর্মী শচীন্দ্রনাথ কুমার ও তাঁর মেয়ে পিয়াসী কুমার।”
এ নিয়ে বচসা বাধে ছাত্র পরিষদ ও টিএমসিপি সমর্থকদের। বিকেলে কলেজে পৌঁছন সুলতান সিংহ। ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, গেটে দাঁড়ানো শচীন্দ্রনাথবাবুকে আচমকা মারধর করেন সুলতান। শচীন্দ্রবাবুর মেয়ে, হাওড়া জেলা ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পিয়াসী বলেন, “সকাল থেকে কলেজে ছিলাম। বিকেলে বাবা আমাকে ডাকতে গেলে বিধায়ক আচমকাই বাবাকে মারধর করেন।” শচীন্দ্রনাথবাবু বালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সুলতান সিংহ বলেন, “শচীন্দ্রনাথ ও তাঁর মেয়ে কলেজে তাণ্ডব চালাচ্ছিল। ওঁকে কলেজে দেখে জানতে চাই কেন এমন করছেন। মারধর কেন করা হবে?”
এ দিকে, জয়পুরিয়ার অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “২৫ শতাংশের বেশি পড়ুয়া ফেল করায় সাপ্লিমেন্টারি নিয়ে দ্বিতীয় বার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অনেকে তাতে পাশও করেন। কিন্তু একটি দল সাপ্লিমেন্টারি দিতে নারাজ। টেস্টের নম্বরের ভিত্তিতেই পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে।” ধীরজ বলেন, “কাউকে ঘেরাও বা অভব্য আচরণ হয়নি। কেউ ১২ মাস পড়ে টেস্টে পাশ না করলে সাপ্লিমেন্টারিতে কী করে পাশ করবে? এই ব্যর্থতার দায় কলেজের। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে কলেজে পরীক্ষা হয় না। এখানে বেশি কঠিন মূল্যায়ন হয়।”
সাধারণ সম্পাদকের এই অবস্থানে ছাত্র সংসদেই মতভেদ হয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিটের এক নেতা বলেন, “এ ভাবে অধ্যক্ষ-শিক্ষকদের হেনস্থার কোনও মানে নেই।” সাধারণ সম্পাদকের এই কাজে ‘অখুশি’ ওই ছাত্র সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বও। টিএমসিপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তমোঘ্ন ঘোষ বলেন, “সব শুনেছি। দলীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।” |