আলো নেই, নেই ভাড়ার তালিকা
নওদায় নদী পারাপারে ভরসা বাঁশের ভাঙা সাঁকো
দী পার হতে ভরসা বাঁশের সাঁকো। কিন্তু তাতেও সন্ধ্যায় আলো জ্বলে না, ভাড়াও নির্দিষ্ট নয়। এমনই অভিযোগ এলাকাবাসীর। নওদার আমতলার কানাপাড়া ঘাট থেকে জলঙ্গি পেরিয়ে নদিয়ার থানারপাড়া ঘাটে যাওয়ার এক মাত্র পথ ৫০ মিটারের ওই সাঁকো। তবে বহুদিন ধরেই বেহাল সেই সাঁকো। বছর ভর এপার-ওপার করতে ওই সাঁকোই ভরসা। বর্ষার সময় নদীতে জল বাড়লে নৌকা চলাচল শুরু হয়। কানাপাড়া ঘাটের দেখভালের দায়িত্ব নওদা পঞ্চায়েত সমিতির। এলাকাবাসীদের দাবি, ঘাট পারাপারের কোনও পরিষেবা তো নেই উপরন্তু সাঁকো পেরোতে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয় পঞ্চায়েত নিযুক্ত কর্মীদের। এ ছাড়াও বাস থেকে নেমে ঘাট পর্যন্ত পৌঁছনোর রাস্তায় আলো নেই। ঘাটে আলো নেই। রাস্তাও খারাপ। তাঁদের প্রশ্ন, তাহলে কেন ওই পারাপারের টাকা নেওয়া হচ্ছে?
নিজস্ব চিত্র।
এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড় আমতলার নিমতলা থেকে দেড় কিমি দূরে রাজ্য সড়কের উপরে কানাপাড়া মোড়। সেখান থেকে মিনিট পাঁচেকের মোরামের পথ পেরোলেই পৌঁছনো যায় জলঙ্গির ওই ঘাটে। সেখান থেকে থানারপাড়া যেতে হলে পার হতে হয় কয়েকটা দোকান আর বাঁশের সাঁকো। হেঁটে পার হলেও ভাড়া ফাঁকি দেওয়া যায় না অবশ্য। আবার পারাপারের ভাড়াও সব ক্ষেত্রে এক নয়। যেমন, একজনের ভাড়া ২ টাকা, সাইকেল নিয়ে পার হতে ২ টাকা, মোটর সাইকেলের ভাড়া ৫ টাকা, রিকশা ভ্যানের ক্ষেত্রে ২০ টাকা, ছোট লরি ১০০ টাকা, বিয়ের গাড়ি ১২০ টাকা। তবে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নদী পেরোতে একই সঙ্গে ভাড়া দিতে হয় যাওয়া এবং ফেরার জন্য। সে ক্ষেত্রে কেউ যদি শুধু এক পার থেকে অন্য পারে যান সে ক্ষেত্রে অর্ধেক ভাড়া নোয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। এ ছাড়া নতুন লোক দেখলে বেশি ভাড়া নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করলেন অনেকে। স্থানীয় শিক্ষক সামসুল হোসেন বলেন, “আলো নেই। নড়বড়ে মাচার উপর দিয়ে একজন মানুষের যাতায়াত ভাড়া ২ টাকা। এর উপর আছে বাস ভাড়া, রিকশা ভাড়া। সব মিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা। অথচ মুর্শিদাবাদ থেকে করিমপুর যাওয়ার এটাই সবচেয়ে কাছের রাস্তা।” এর ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পরীক্ষার্থীরাও। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শিল্পা খাতুনের কথায়, “স্কুলের পোশাক, অ্যাডমিট থাকলেও নিস্তার নেই। ২ টাকা দিতেই হবে। এ ছাড়া সঙ্গে সাইকেল থাকলে তো আরও বেশি টাকা দিতে হয়।” বেলডাঙা থেকে সপ্তাহে তিন দিন গামছা ফেরি করতে থানারপাড়া, করিমপুর যান নির্মল মণ্ডল। তিনি বলেন, “সারাদিন ফেরি করে সন্ধ্যেয় যখন ফিরি তখন সব অন্ধকার। আলো না থাকায় বাঁশের মাচা পার হতে ভীষণ কষ্ট হয়।” স্থানীয় বাসিন্দা ও নওদা পঞ্চায়েত এলাকার অঞ্চল সভাপতি কংগ্রেসের সুজয় বিশ্বাস বলেন, “ঘাটে আলো নেই। ভাড়ার নির্দেশিকা নেই। বিয়ের গাড়ি দেখলেই রেট এক লাফে রেট অনেকটা বেড়ে যায়। জেলা পরিষদের তরফে নদীর একটা অংশ ২০০৩ সালে ভাঙনের জন্য বাঁধানো হয়েছিল। কিন্তু নদীর যে অংশ দিয়ে নওদা কলেজ, স্কুল, ব্লক দফতরে যাওয়া যায় সেই জায়গাও বাঁধানো প্রয়োজন। অথচ বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও কোনও ফল হয় নি।” তবে নওদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আব্দুল বারি মোল্লা সব অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, “প্রয়োজনের তুলনায় কম হলেও আলো থাকে। সাঁকোর বিপরীতে নদিয়া জেলা কিন্তু ওই পথ নিয়ন্ত্রণ করে নওদা পঞ্চায়েত সমিতি। তাই যাতায়াতের ভাড়া এক সঙ্গে নেওয়া হয়। এ ছাড়া ভাড়ার তালিকা ওখানে টাঙানোর কথা। নিশ্চয় টাঙানো আছে। পঞ্চায়েত সমিতির নজরদারিও রয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.