সচিন তেন্ডুলকর মনে করেন তাঁর শততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙা সম্ভব। তাঁর আরও মনে হচ্ছে, এই প্রজন্মের দুই ভারতীয় ক্রিকেটারের পক্ষেই সেটা ভাঙা সম্ভব।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড যখন রাহুল দ্রাবিড়ের বিদায়ী সংবর্ধনা নিয়ে ব্যস্ত, তখন মুম্বইতে একই সঙ্গে শততম সেঞ্চুরির জন্য সচিনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেই সংবর্ধনার আয়োজন করেন তাঁর আইপিএল টিম মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মালিক মুকেশ অম্বানী। লতা মঙ্গেশকর। অভিষেক বচ্চন-ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন। প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। সলমন খান। আমির খান। কেউ বাদ ছিলেন না যোগ দিতে। |
সেই অনুষ্ঠানে সলমন সচিনকে প্রশ্ন করে বসেন, “কী মনে হচ্ছে তোমার সচিন? সত্যি করে বলো তো কেউ তোমার রেকর্ড ভাঙতে পারবে? আমরা তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই যে, কেউ পারবে না।” হাসিতে ফেটে পড়া সচিন বলেন, “আমার মনে হয় যারা পারবে তারা এই ঘরেই বসে আছে।” সলমন উড়িয়ে দেন, “কোনও চান্সই নেই।” সচিন বলে দেন, “আমি সেই দুই তরুণকে দেখতে পাচ্ছি। বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মা। যদি কোনও ভারতীয় এই রেকর্ড ভাঙে আমি খুশিই হব।”
সলমন এর পর সচিনকে বলেন, “আচ্ছা, ২০০টা সেঞ্চুরি ব্যাপারটা কেমন হতে পারে? ১০০টা তো হয়েই গিয়েছে। এ বার ২০০টা সেঞ্চুরি হয়ে যাক। কত সময় আর লাগতে পারে তোমার!” এর পর চোখ টিঁপে সচিনের দিকে তাকিয়ে তাঁর মন্তব্য, “সচিন তোমার খুব ভাগ্য ভাল যে আমি সারা জীবনটা স্টুডিওতে স্টুডিওতে কাটিয়ে দিলাম। না হলে আজ তোমার জায়গায় আমিই বসে থাকি আর আমার নামের পাশে একশোটা সেঞ্চুরি লেখা থাকে!”
বিরাট কোহলি জানিয়ে দেন, সচিনকে দেখেই তাঁর ক্রিকেট স্বপ্নের শুরু। “সচিন তেন্ডুলকরের জন্যই আজ আমি ক্রিকেট খেলছি। ছোটবেলায় যখন ওঁকে দেখেছিলাম তখন স্বপ্ন ছিল, এক বার ওঁকে সামনা-সামনি দেখব। আর আজ আমি একই ড্রেসিংরুমে থাকতে পারছি ওঁর সঙ্গে। জীবনে এর চেয়ে বেশি আর কী চাইতে পারতাম!”
লতা মঙ্গেশকর গাইলেন ‘মেরা সায়া’-র শীর্ষ সঙ্গীত। যা সচিনের সবথেকে প্রিয় গান। প্রিয়ঙ্কা চোপড়া শুরুতে সচিনকে সম্বোধন করতে গিয়ে বলেন ‘সচিন স্যর’। যা শুনে সচিনের মন্তব্য, “আমি চুলের স্টাইল বদলে ফেললাম যাতে আমার বয়স কম লাগে। এখন দেখছি আমার পরিকল্পনা কাজ করেনি!”
আমির খান বার বার করে বললেন মানুষ সচিন তেন্ডুলকরের কথা। এত সব শৃঙ্গ জয়ের পরেও তিনি কেমন মাটির মানুষ থেকে গিয়েছেন। অভিষেক বচ্চন আবার সবাইকে হাসিয়ে দিলেন এই বলে যে, “আমাদের সকলের অবদান রয়েছে সচিনের কীর্তির পিছনে। কেউ একই খাবার খেয়ে গিয়েছি, কেউ একই পোষাক পরে গিয়েছি, একটা নির্দিষ্ট জায়গা থেকে নড়িনি তুমি যে শততম সেঞ্চুরিটা করতে পারলে সেটা শুধুই আমাদের কুসংস্কারের জন্য।”
সব শুনে-টুনে আবেগপূর্ণ গলায় সচিনও বলে ফেলেন, “৯৯ থেকে ১০০ এই সেঞ্চুরিটা করতে অনেক সময় লেগে গেল। এর জন্য আমি আপনাদের সকলের কাছে দুঃখিত!” |