নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ইস্পাত উৎপাদনে উৎসাহ দিতে এ বার মূলধন সংগ্রহের জন্য নেওয়া ঋণের সুদে ভর্তুকি দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্র। এই শিল্পে গবেষণার কাজ চালানোর জন্য আর্থিক সাহায্য দেওয়ার উদ্দেশে একটি তহবিল গড়ার পরিকল্পনাও করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই যোজনা কমিশনের অনুমোদন মিলেছে। সম্প্রতি কলকাতায় আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ‘ওর টিম’ আয়োজিত সভায় এ কথা জানান কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রকের শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা এ সি আর দাস।
ইস্পাত উৎপাদনের কাঁচামাল পেলেট তৈরির জন্য ব্যাঙ্ক বা অনুমোদিত আর্থিক সংস্থার কাছে ঋণ নিলে সুদে ৫% ভর্তুকি দিতে ইস্পাত মন্ত্রক সুপারিশ করেছে। বিদ্যুৎ খরচ কমানো-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য গবেষণায় উৎসাহ দিতে, এক হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছে মন্ত্রক। কেন্দ্র দেবে ৫০০ কোটি। বাকি ৫০০ কোটি জোগানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ইস্পাত শিল্পকেই। |
দেশে ইস্পাতের ব্যবহার এবং উৎপাদন বাড়ানোর যে রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে, তাতে উন্নত মানের প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেন ইস্পাত মন্ত্রকের মুখ্য অর্থনীতিবিদ এ এস ফিরোজ। তিনি জানান, ভারতে ইস্পাত উৎপাদনকারীদের বেশ কিছু অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়। যেমন, কারখানা তৈরিতে প্রয়োজনীয় মূলধনের ৩০ শতাংশই ব্যায় হয় বর্তমান আইন মেনে পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ের মোকাবিলায়। তাই বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারই একমাত্র উপায় বলে তাঁর দাবি। তা ছাড়া, বিদেশ থেকে উন্নত মানের প্রযুক্তি পাওয়ায় অনেক সমস্যা রয়েছে। তাই দেশের মধ্যেই গবেষণার মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবনে জোর দিতে চায় কেন্দ্র।
পেলেট তৈরিতেই কেন সুদে ভর্তুকি দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, তারও স্পষ্ট যুক্তি দিয়েছে ইস্পাত মন্ত্রক। ইস্পাত উৎপাদনের কাঁচামাল হিসাবে পেলেটের ব্যবহার বাড়ানো জরুরি বলে মনে করছে তারা। ফিরোজের কথায়, ‘‘ইস্পাত উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন লৌহ আকর। কিন্তু উন্নত মানের লৌহ আকর পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। তাই নিম্ন মানের লৌহ আকর দিয়েই পেলেট তৈরি করে তা ইস্পাত উৎপাদনের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করার উপর জোর দিতে হবে।”
ইস্পাত শিল্পের উন্নয়নে যে সব ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ মন্ত্রক করেছে সেগুলি যোজনা কমিশনের সায় পেয়েছে বলে জানান এ সি আর দাস। এখন অপেক্ষা অর্থ-সহ কিছু মন্ত্রকের অনুমোদনের। ওর টিম আয়োজিত ওই সম্মেলনে দেশের নামী ইস্পাত শিল্পের প্রতিনিধি ছাড়াও চিন, ব্রাজিল, জাপান এবং জার্মানির প্রতিনিধিরা যোগ দেন। |