রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রকে অক্সিজেন জোগানো তো দূর, চালু হওয়ার আগেই মুখ থুবড়ে পড়ার দশা পিপিপি মডেলের।
রাজ্যের রুগ্ণ হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির হাল ফেরাতে নতুন সরকার পিপিপি (প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ) মডেল কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কোন কোন হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই মডেল চালু হবে তার একটা খসড়াও তৈরি করা হয়। কিন্তু পরিকল্পনায় ‘বাস্তববোধের অভাব’-এর প্রশ্ন তুলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এখন ওই মডেল ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। ওই সব সংস্থার মনে হয়েছে, সরকারের সঙ্গে হাত মেলালে লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি হবে।
পিপিপি মডেলে যে সব সংস্থা গোড়ায় আগ্রহ দেখিয়েছিল তাদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যভবনের কর্তাদের সঙ্গে জেলা স্তরের স্বাস্থ্যকর্তাদের কোনও সমন্বয়ই নেই। ফলে স্বাস্থ্যভবন যে প্রকল্পের ছাড়পত্র দিচ্ছে, সেটাই আটকে দেওয়া হচ্ছে জেলায়। প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হাতে। কিন্তু স্বাস্থ্যভবনের অনুমোদিত প্রকল্পের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তারা। আর এই জেলা-কলকাতা টানাপোড়েনের জেরে শুরুর আগেই আটকে গিয়েছে সব।
বেসরকারি সংস্থাগুলির অনেকেরই অভিযোগ, আলট্রাসনোগ্রাফি কেন্দ্র খোলার ক্ষেত্রে এই সমস্যা সব থেকে বেশি হচ্ছে। স্বাস্থ্যভবনের কাছে অভিযোগ এসেছে, তারা প্রকল্প মঞ্জুর করায় বেশ কয়েকটি সংস্থা আলট্রাসনোগ্রাফি যন্ত্র কিনেও শেষ পর্যন্ত তা বসাতে পারছে না জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বাধায়। যন্ত্রগুলি বাক্সবন্দি অবস্থাতেই খারাপ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গোল শুধু এখানেই নয়, বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য রাজ্য সরকার যে দর বেঁধে দিয়েছে, আপত্তি উঠছে তা নিয়েও। বিশেষ করে রক্তের জটিল কিছু পরীক্ষার জন্য রাজ্য সরকার যে দর বেঁধে দিয়েছে তাতে তাদের লোকসান হবে বলেই মনে করছেন ওই সব বেসরকারি সংস্থা। স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “পিপিপি প্রকল্প নিয়ে গোড়া থেকেই দফতরের ভিতরে কিছু বিরোধ ছিল। জেলা স্তরে অনেকে যে প্রকল্পটি পছন্দ করছেন না, তা-ও ঠিক। তাঁদের চিহ্নিত করে সরানোর প্রক্রিয়াও
শুরু হয়ে গিয়েছে।” কোথায় প্রকল্পটি আটকে রয়েছে তা মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানাতে চান স্বাস্থ্যকর্তারা।
সমস্যা শুধু জেলা স্তরেই নয়, কলকাতাতেও পিপিপি মডেল চালু করতে সমস্যায় পড়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কাশীপুরের নর্থ সুবার্বান হাসপাতালটি চালানোর জন্য বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে আবেদনপত্র চেয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু তাতে এমন কিছু শর্ত রয়েছে, যাতে কোনও লাভই থাকবে না বলে মনে করছে বেসরকারি সংস্থাগুলি। এই প্রকল্পে তাই সাড়া মিলছে না।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, নর্থ সুবার্বান হাসপাতাল থেকে সরকারি চিকিৎসক, নার্সদের অন্য হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হবে। যে বেসরকারি সংস্থা হাসপাতালের দায়িত্ব নেবে তাদেরই চিকিৎসক, নার্স নিয়োগ করতে হবে ও মাইনে দিতে হবে। সরকার এর জন্য তাদের একটা ‘অপারেশন্যাল অ্যান্ড মেনটেন্যান্স চাজর্র্’ দেবে। যে সংস্থা সরকারের থেকে এই চার্জ সব চেয়ে কম নেবে, তারাই বরাত পাবে। সেই সঙ্গে শর্ত হল, হাসপাতালের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ চালু রাখতে হবে, শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষার ‘চার্জও’ হতে হবে মহকুমা হাসপাতালের মতোই। সর্বোপরি, নিখরচায় চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হবে বিপিএল তালিকাভুক্তদের। স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র অসিত বিশ্বাস বলেন, “হাসপাতালে পরিষেবা বাড়লে লাভও বাড়বে। এর থেকেই লাভ বার করতে হবে। যদি কেউই এতে আগ্রহী না হয়, সে ক্ষেত্রে বেসরকারি অংশীদার মিলবে না। কী করা যাবে?” বেসরকারি সংস্থাগুলির বক্তব্য, “ন্যূনতম লাভ না রেখে আমরাই বা কোন যুক্তিতে এত দায়িত্ব কাঁধে নেব!” এই টানাপোড়েনে মার খাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর রুগ্ণ হাসপাতাল বাঁচানোর পরিকল্পনা। |
সচেতনতা বাড়াতে সাইকেলে পরিক্রমা
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
এডস নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে শনিবার সকালে সাইকেলে শহর পরিক্রমা করল জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র সংসদের সদস্যেরা। এ দিন থেকে কলেজের মাঠে দু’দিনের সাইকেল চালানো প্রতিযোগিতাও শুরু হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ থেকে অন্তত ৪০০ প্রতিযোগী তাতে যোগ দিয়েছেন বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। এডসের মত পালস পোলিও নিয়েও বার্তা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে এই আয়োজন বলে সংসদের সদস্যরা জানান। |