ভুল ট্রেনে স্ত্রী, বোমার গল্পে ধৌলি থামিয়ে শ্রীঘরে যুবক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ফের স্ত্রী-র কারণে বোমার গল্পে ট্রেন থামিয়ে শ্রীঘরে যুবক!
ওড়িশাগামী ধৌলি এক্সপ্রেসে বোমাতঙ্ক ছড়িয়ে ধরা পড়েছিলেন খড়্গপুরের বছর আটত্রিশের যুবক মৃণালেন্দু সরকার। শনিবার রেলওয়ে ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে তিন দিনের জন্য জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
মাসখানেক আগেই ঝগড়া করে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে চেপে বসা স্ত্রীকে আটকাতে শিয়ালদহ জিআরপি-কে ফোনে বোমার গল্প শুনিয়েছিলেন এক যুবক। উত্তর ২৪ পরগনার ঘোলায় বাড়ি তাঁদের। ধরা পড়ার পরে কয়েক দিন জেল হাজতে কাটিয়ে তিনি জামিন পান।
এ বার অবশ্য স্বামী-স্ত্রীতে ঝগড়া-টগড়া হয়নি।
মৃণালেন্দুর দাবি, শুক্রবার সকালে স্ত্রী ভুল ট্রেনে উঠে পড়াতেই তিনি আর মাথার ঠিক রাখতে পারেননি। পশ্চিম মেদিনীপুরেরই চন্দ্রকোনা রোডে একটি স্কুলে পড়ান তাঁর স্ত্রী। রোজই খড়্গপুর থেকে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ধরেন। কিন্তু হঠাৎই গড়বড় হয়ে গিয়েছিল কামরা বাছাইয়ে। |
|
মেদিনীপুর আদালতে মৃণালেন্দু।-নিজস্ব চিত্র |
আপ রূপসী বাংলার সঙ্গে একই ইঞ্জিনে হাওড়া থেকে খড়্গপুর পর্যন্ত যায় আপ ধৌলি এক্সপ্রেস। সেখানে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেসকে বিচ্ছিন্ন করে অন্য ইঞ্জিন দিয়ে পুরুলিয়ার পথে রওনা করানো হয়। সে দিন তাড়াহুড়োয় ধৌলির কামরায় উঠে পড়েছিলেন মৃণালেন্দুর স্ত্রী। একটু বাদেই ভুল বুঝতে পেরে সহযাত্রী এবং টিকিট পরীক্ষককে জানিয়েছিলেন। বিশেষ লাভ না হওয়ায় স্বামীর মোবাইলে ফোন করেন তিনি।
স্ত্রীর ফোন পেয়ে মৃণালেন্দু তো ভ্যাবাচ্যাকা! জেরায় তিনি জানিয়েছেন, কী করা যায় ভাবতে ভাবতেই তিনি মোটরবাইকে চেপে শহরের কাছেই হিজলি-বেনাপুরের মাঝে লেভেলক্রসিংয়ে চলে যান। সেখানে ছিলেন গেটম্যান। মৃণালেন্দু তাঁকেই বলেন, ‘ধৌলিতে বোমা আছে।’ ফোন ছোটে। বোমার গল্পের গুঁতোয় বেলদায় দাঁড়িয়ে পড়ে ধৌলি। যাত্রীদের মাথার চুল খাড়া, রেলকর্তাদেরও। বম্ব স্কোয়াড, স্নিফার ডগ এনে আড়াই ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানো হয়। আগে-পিছে দাঁড়িয়ে পড়ে আরও কিছু ট্রেন।
ইতিমধ্যে মৃণালেন্দুর স্ত্রী নেমে বাস ধরে সুভাষপল্লির বাড়িতে ফিরে যান। হাঁফ ছাড়েন মৃণালেন্দু। কিন্তু তাঁদের স্বস্তি বেশি ক্ষণ টেকেনি।
মৃণালেন্দু খেয়ালই করেননি, লেভেলক্রসিংয়ের গেটম্যান কখন লিখে নিয়েছেন তাঁর মোটরবাইকের নম্বর। সেই সূত্র ধরে রাতেই রেলপুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টির অভিযোগে রেল আইনের জামিন-অযোগ্য ১৫৩ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। যাতে ৫ বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে।
মৃণালেন্দুরা সম্ভবত এই পরিণতির কথা ভাবেননি। পড়শিরা জানান, পুলিশ মৃণালেন্দুকে নিয়ে যাওয়ার পরেই কান্নাকাটি শুরু করেছিলেন তাঁর স্ত্রী। এ দিন সকালেই সুভাষপল্লির পদ্মপুকুরের বাড়িতে তালা দিয়ে তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। পড়শিদের বলে গিয়েছেন, অপরিচিত কাউকে যেন তাঁর মোবাইল নম্বর না দেওয়া হয়।
মৃণালেন্দু কবে বাড়ি ফেরেন, পদ্মপুকুর আপাতত তারই অপেক্ষায়।
|
রেলকর্মীকে গুলি
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
রেলশহর খড়্গপুরে শনিবার সাতসকালে এক রেলকর্মীকে গুলি করে চম্পট দিল দুষ্কৃতী। আহত রেলকর্মী বছর চুয়ান্নর এস দুর্গা রাওকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিটি দুর্গাবাবুর পিঠ দিয়ে ঢুকে পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। দুষ্কৃতীর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। |
|