কলেজে কলেজে ফের অশান্তির ছায়া।
কলেজে বহিরাগতদের ঢোকাকে ঘিরে শুক্রবার এসএফআই এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) ও ছাত্র পরিষদের সংঘর্ষ বাধল রামপুরহাট কলেজে। জখম হলেন চার ছাত্র। এ দিনই টেস্টে না বসা ছাত্রছাত্রীদের পার্ট-১ পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করতে না দেওয়ায় বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজের অধ্যক্ষের ঘরে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে ওই কলেজ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
|
জখম এক ছাত্র।
ছবি: সব্যসাচী ইসলাম। |
মাস দু’য়েক আগেও বহিরাগতদের প্রবেশকে কেন্দ্র করে এসএফআই-টিএমসিপি সংঘর্ষে তেতে উঠেছিল রামপুরহাট কলেজ চত্বর। ভাঙচুর হয়েছিল ছাত্র সংসদ কার্যালয়। ঘটনার পর দিন টিএমসিপি সদস্যদের সঙ্গে বচসার সময় জ্ঞান হারান কলেজের অধ্যক্ষ। সে বারের মতো এ দিনেও টিএমসিপি-র কলেজ ইউনিটের সদস্য অমিত ঘোষালের নাম জড়িয়েছে। আগের বারের মতো এসএফআই পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সফিউল ইসলামের নাম এ বারও রয়েছে অভিযুক্তদের তালিকায়। দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। এ দিন সকালে দু’জন বহিরাগতকে কলেজ থেকে বার করে দিতে যান অধ্যক্ষ শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এক জন চলে গেলেও অন্য জন তাঁকে শাসায় বলে অধ্যক্ষের দাবি। তিনি বলেন, “বহিরাগতদের ভিতরে ঢোকা ঠেকাতে কলেজের গেটে পড়ুয়াদের পরিচয়পত্র দেখার পরেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ছাত্রদের মধ্যেই কেউ কেউ কলেজে বহিরাগতদের ঢোকাচ্ছে। তাই ঝামেলা এড়ানো যাচ্ছে না। কলেজে রোজ পুলিশ মোতায়েন করার জন্য থানায় লিখিত আবেদন করেছি।”
অমিতের অভিযোগ, “এ দিন বিএসসি পার্ট-১ পরীক্ষার ফর্ম পূরণ ছিল। ক্যাশ কাউন্টারের সামনে এসএফআই বহিরাগত এক জনকে রেখেছিল। আমি প্রতিবাদ করায় ওরা মারধর করে। আমাকে বাঁচাতে বন্ধু-বান্ধবেরা এলে তাদেরও বাঁশ, রড দিয়ে মারা হয়।” ছাত্র পরিষদ এবং টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে পাল্টা ছাত্র সংসদ কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছে এসএফআই। সফিউলের দাবি, “ওরাই বহিরাগত এনে ঝামেলা পাকিয়েছে। আমাদের সদস্যদের মারধর করেছে। এক জনের মাথা ফাটে। আমরা ৮ জনের নামে অভিযোগ করেছি।” এসএফআইয়ের অভিযোগ মানেনি ছাত্র পরিষদ। বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজের অধ্যক্ষ সমীর মুখোপাধ্যায় বলেন, “টেস্টে না বসা কিছু ছাত্রছাত্রীকে পার্ট-১ পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করতে দেওয়া হয়নি বলে এ দিন জনা ষাটেক ছেলে আমার ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। চেয়ার-টেবিল উল্টে দেয়।” হামলাকারীরা ছাত্র সংসদের সদস্য বলেও দাবি সমীরবাবুর। এই কলেজের ৩১টি আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে ছাত্র সংসদর দখল করেছে টিএমসিপি। অভিযোগ উড়িয়ে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অর্ঘ্য মণ্ডলের পাল্টা দাবি, “ওই ছাত্রেরা মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখানো সত্ত্বেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের ফর্ম পূরণ করতে দিচ্ছেন না। অথচ, শুক্রবার ছিল ফর্ম পূরণের শেষ দিন। ওই ছাত্রেরা অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি ফোনে আমাদের ডাকেন। পরে উত্তেজিত হয়ে অধ্যক্ষ আমাকে মারধর করেন। তখনই ছাত্রেরা ঘরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখায়।” |