|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
গন্ধমাদন জমাইবার দিন শেষ |
বইপোকা |
মেহগনির মঞ্চ জুড়ি যে গ্রন্থসারিটি এত কাল গৃহস্থের ছাতি বাড়াইয়া তুলিত তাহা আর সশরীরে মিলিবে না। বন্ধ হইল এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা-র গ্রন্থ-সংস্করণ। সংবাদটি অনেকের বক্ষে শেলসম বিঁধিয়াছে। স্বাভাবিক, ‘আমার গৃহে একটি পুরা সেট ব্রিটানিকা আছে’ বলিবার সুখ উধাও হইল। কিন্তু কোষগ্রন্থ এই যুগে কেন ঢাউস খণ্ডে বিস্তর কাগজ তথা বৃক্ষের অপচয় করিয়া মুদ্রিত হইবে? কেনই বা স্থলে-জলে-অন্তরীক্ষে বিস্তর হ্যাপা পোহাইয়া তাহার বিক্রিবাট্টা করিতে হইবে? সর্বোপরি, কম্পিউটারে খুঁজিবার এই ই-সুবিধার কালে কেন বিশল্যকরণীটির খোঁজে পাঠক হনুমান হইয়া গন্ধমাদন স্টক করিবেন? বরং ই-সংস্করণই ভাল, মধ্যবিত্ত বা উচ্চ-মধ্যবিত্তের এই খুপরি-জীবনে তেঁতুলপাতায় অন্তত আরও আটটি অন্য গ্রন্থ ধরিবে। বঙ্গীয় বইপাড়াতেও কোষগ্রন্থের অভাব নাই। তাহাদের নাড়াচাড়া করিতে বিস্তর ঘাম ঝরে বহু মানুষের, পাঠকের ঝোলাও তাহাদের ভারে মেদিনী স্পর্শ করিতে চায়। ভারতকোষ-এর ন্যায় বেশ কয়েকটি গ্রন্থ আজিও আদ্যিকালের বদ্যিবুড়ো হইয়া আছে। আশু তাহাদের নূতন সংশোধিত সংস্করণের প্রয়োজন। প্রয়োজন তাহাদের ই-সংস্করণেরও। তাহাতে বিশেষ খাটিতে হইবে না, বাংলা হরফও এখন ইউনিকোড হইয়াছে। অবিশ্যি ইহার অপকারিতাও আছে, কপি-অ্যান্ড-পেস্ট নীতিতে গ্রন্থের পরে গ্রন্থ লিখিয়া যান যে সকল বহুপ্রসবী জ্ঞানী লেখক তাঁহাদের গ্রন্থে ডাস্টবিন আরও উপচীয়মান হইবে। তা হউক, সশরীর কোষগ্রন্থগুলির জন্য কত বেচারা ইঁদুর-বিড়াল মরিত, সেই অপকারটিই বা কম কীসে! |
|
|
|
|
|