|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা
|
অমিল পরিবহণ |
যথা ইচ্ছা তথা না |
দীক্ষা ভুঁইয়া |
রিকশায় ভাড়া কুড়ি থেকে পঁচিশ টাকা, সাইকেল ভ্যানে পাঁচ টাকা। কিন্তু সকালবেলা তার জন্যও বেশ কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হয় ছাত্রছাত্রী-সহ সাধারণ মানুষকে। গ্রীষ্ম বা বর্ষায় মাথায় ছাতা ধরে যাতায়াতও করতে হয়। বাড়ি ফেরার সময়েও সেই এক দৃশ্য। এ ছবি কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের অর্থাৎ, ইস্টার্ন বাইপাসের ধারে রুবির ঠিক পাশের মাদুরদহ, মুন্ডাপাড়ার।
ইস্টার্ন বাইপাসের পাশেই কসবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট। আর এর পিছনেই কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাদুরদহ, মুন্ডাপাড়া, রয়েছে পঞ্চায়েত এলাকাও। |
|
কলকাতা এলাকার মধ্যে বেশ কিছু অঞ্চলে গত কয়েক বছরে গড়ে উঠছে নানা স্কুল, কলেজ ও আবাসন। কিন্তু নবনির্মিত এই এলাকায় পৌঁছতে ভরসা শুধু সাইকেল ভ্যান, মোটরচালিত ভ্যান কিংবা রিকশা। অথচ, এই এলাকায় গড়ে উঠেছে বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল ও কলেজ। বিগত কয়েক বছর আগে ওই কলেজ এবং স্কুল গড়ে উঠলেও আজ পর্যন্ত যাতায়াতের কোনও উন্নত পরিকাঠামোই গড়ে ওঠেনি।
ইস্টার্ন বাইপাস রোড থেকে মাত্র দু’কিলেমিটার দূরে এই মাদুরদহ, মুন্ডাপাড়া। এর পরে চৌবাগা এলাকা। যাতায়াতের জন্য বর্তমানে দু’টি রাস্তা রয়েছে। একটি রুবি হাসপাতালের পাশ দিয়ে, আর একটি সায়েন্স সিটির উল্টো দিক দিয়ে। কিন্তু মাদুরদহ কিংবা মুন্ডাপাড়া যাওয়ার জন্য শর্টকাট রাস্তা রুবির পাশ দিয়েই। এত দিন আনন্দপুর পর্যন্ত পাকা রাস্তা থাকলেও তার পরের এলাকাগুলিতে পৌঁছনোর জন্য আগে কোনও পাকা রাস্তা ছিল না। সম্প্রতি তিন-চার মাস আগে পাকা রাস্তা তৈরি হয়েছে। কিন্তু, কোনও বাসরুট নেই। একমাত্র আনন্দপুর পর্যন্ত তিনটি মাত্র বাস রয়েছে। কিন্তু সেটির একটি হাওড়া থেকে, আর বাকি দু’টির একটি শিয়ালদহ এবং আর একটি কলেজ স্ট্রিট থেকে আসে।
|
|
এই এলাকায় গত কয়েক বছরে গড়ে উঠেছে বেসরকারি স্কুল এবং মেঘনাদ সাহা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমএসআইটি)। কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাদুরদহে রয়েছে বেসরকারি এই স্কুল এবং মুন্ডাপাড়ায় এমএসআইটি। রাস্তা কিংবা পরিবহণের উন্নয়নের আগেই দু’টি ইনস্টিটিউট গড়ে ওঠায় সমস্যায় পড়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। বেসরকারি স্কুলের অনেক ছাত্রছাত্রী নিজস্ব গাড়ি করে এলেও আরও অনেকেই রয়েছেন যাঁরা রুবির মোড় পর্যন্ত এসে রিকশা ধরেন বা ভ্যানের জন্য অপেক্ষা করেন।
এমএসআইটি-র ছাত্রী ইপ্সিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রুবি পর্যন্ত এসে ভ্যান বা রিকশা কিছু না পেলে পায়ে হেঁটেই প্রায় দু’কিলোমিটার যেতে হয়। রাস্তায় যদি দেরি হয়ে যায়, তা হলে ক্লাস মিস হয়ে যায়। তাই রোজই হাতে বেশি সময় রেখে বেরোই।” আর এক ছাত্রী বললেন, “রোজ রিকশা ভাড়া করেও যাওয়া সম্ভব হয় না। এক বার যেতেই কুড়ি থেকে পঁচিশ টাকা লেগে যায়। আর মুন্ডাপাড়ার ভ্যানও সংখ্যায় কম থাকে।”
|
|
১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের পার্থ রায়চৌধুরী বললেন, “সম্প্রতি পুরসভার পক্ষ থেকে রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কলকাতা এলাকার মধ্যে রাস্তাটা কেএমসি করছে। বাকি রাস্তাটি চৌবাগা হয়ে বাসন্তী হাইওয়েতে গিয়ে মিশেছে। তবে পরিবহণের জন্য আরটিও-কে অনুরোধ করব।” কলকাতার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের (আরটিও) এক আধিকারিকের কথায়: “ওই এলাকার মানুষ যদি তাঁদের অসুবিধার কথা আমাদের লিখিত ভাবে জানান, তখন আমরা নতুন রুটের ব্যবস্থা করতে পারি।”
এ প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বর্তমানে কী অবস্থা রয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। তার পরে ওই এলাকার পরিকাঠামোর কী ভাবে উন্নত করা যায় তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।” |
|
|
|
|
|