পড়ুয়াদের জন্য সাংস্কৃতিক মঞ্চ গড়তে দান অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের
পন সংস্কৃতিকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালবাসার শিক্ষা পেয়েছিলেন মায়ের কাছে। কর্মজীবনে শিক্ষকতা করতে গিয়ে সেই শিক্ষাকেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছেন। কিন্তু তবু যেন কোথাও একটা অপূর্ণতা মনকে নাড়া দিত। আরও কিছু বোধহয় করা প্রয়োজন। মনের সেই তাগিদ থেকেই প্রায় ৪ লক্ষ টাকা খরচ করে নিজের স্কুলে সাংস্কৃতিক মঞ্চ গড়ে দিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অসীম মুখোপাধ্যায়। যে কাজে তাঁকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন স্ত্রীও। বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙায় শ্রীচৈতন্য বিদ্যালয়ে (উঃমাঃ) ওই সাংস্কৃতিক মঞ্চের উদ্বোধন হল।
অসীমবাবু।
গোবরডাঙা স্টেশন রোডের বাসিন্দা অসীমবাবু দীর্ঘ ৩৩ বছর শিক্ষকতা করার পরে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শ্রীচৈতন্য বিদ্যালয় (উঃমাঃ) থেকে অবসর নেন। এলাকায় গোপালবাবু হিসাবেই তাঁর অধিক পরিচিতি। সাংস্কৃতিক মঞ্চের জন্য নিজের এই দানকে অবশ্য ‘দান’ বলতে রাজি নন অসীমবাবু। বরং নিজেকে সংস্কৃতির একজন সাধারণ অনুরাগী বলতেই সচ্ছন্দ তিনি। জানালেন, “স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে সংস্কৃতি চর্চার প্রতি আগ্রহ দেখেছিলাম। কিন্তু স্কুলে কোনও সাংস্কৃতিক মঞ্চ ছিল না। এলাকার অন্য স্কুলগুলিতেও নেই কোনও সাংস্কৃতিক মঞ্চ। তা ছাড়া গোবরডাঙা টাউন হলেরও খুবই দূরবস্থা। এ সব ঘটনার মধ্যে থেকেই সাংস্কৃতিক মঞ্চের জন্য এগিয়ে আসি। আজ সেই স্বপ্ন সার্থক হওয়ায় আনন্দ হচ্ছে।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল কর্তৃপক্ষকে অসীমবাবু অনুরোধ করেছিলেন তিনি একটি সাংস্কৃতিক মঞ্চ গড়ে দিতে চান। সে জন্য জমি লাগবে। শেষ পর্যন্ত ২ কাঠা জমির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। সেই জমিতেই তৈরি হয়েছে ৩৬ ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট চওড়া সাংস্কৃতিক মঞ্চ। তবে কাজ শেষ হতে এখনও কিছুটা বাকি।
উদ্বোধন হল সাংস্কৃতিক মঞ্চ।
ইতিমধ্যেই এ জন্য তিন লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছেন অসীমবাবু। বাকি কাজের টাকাও তিনি দেবেন বলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। অসীমবাবুর অনুরোধেই সাংস্কৃতিক মঞ্চের নামকরণ করা হয়েছে তাঁর মা বীণাপাণি দেবীর নামে। মায়ের নামে করার প্রসঙ্গে অসীমবাবুর বক্তব্য, “মা সংস্কৃতি চর্চা করতে খুব ভালবাসতেন। সেই কারণেই তাঁকে এটি উৎসর্গ করেছি।”
আর কি বলছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবানন্দ বিশ্বাস?
দেবানন্দবাবুর কথায়, “উনি যে ভাবে সাংস্কৃতিক মঞ্চ গড়ার কাজে এগিয়ে এসেছেন তা ভাবা যায় না। শুধু এই কাজই নয়, স্কুল থেকে প্রতিবছর গরিব ছাত্রদের আমরা বইপত্র, শীতবস্ত্র কিনে দিই। অসীমবাবু ছিলেন সেই কাজের মূল উদ্যোক্তা।” গোবরডাঙা পুরসভার চেয়ারম্যান সুভাষ দত্ত অসীমবাবুর এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “শুধু সংস্কৃতির জন্য নিবেদিত প্রাণ নয়, অসীমবাবু হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসাবেও বিনা পয়সায় মানুষের সেবা করেন। ওঁর মতো মানুষ সমাজের কাছে গর্বের।”
যদিও এ ব্যাপারে অসীমবাবুর মন্তব্য, “সুযোগ পেলে নিজের সামান্য হোমিওপ্যাথ জ্ঞান নিয়ে মানুষের সেবা করার চেষ্টা করি। তার বেশি কিছু নয়।”
ছবি: পার্থসারথি নন্দী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.