ব্যস্ত রাজপথে গুলিবিদ্ধ যুবক, উদ্বেগ সদর শহরে
কালের ব্যস্ততম সময়ে, জেলার সদর-শহরের মধ্যেই দু’দল দুষ্কৃতীর বচসা এবং গুলি চালানোর ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল মেদিনীপুরে। গুলিবিদ্ধ হলেন প্রদীপ দাস নামে এক যুবক। যাঁর বাড়ি ঝাড়খণ্ডের আদিত্যপুরে। আর্থিক ‘লেনদেন’ সংক্রান্ত বিবাদ থেকেই দু’দল দুষ্কৃতীর মধ্যে এই ঘটনা বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে পুলিশ। বিবাদের পিছনে রেলের ছাঁট লোহার কারবারের যোগ রয়েছে বলেও পুলিশের ধারণা। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
মেদিনীপুর শহরের অন্যতম ‘ব্যস্ত’ এলাকা কেরানিতলা। বুধবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ এখানেই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রের খবর, শুরুতে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। হঠাৎই এক জন পকেট থেকে পিস্তল বের করে গুলি চালিয়ে দেয়। তার পরেই আরেক জনের সঙ্গে গাড়িতে এলাকা ছেড়ে পালায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, যে ব্যক্তি গুলি ছোড়ে, তার নাম রাধেশ্যাম সিংহ। প্রদীপের শরীর লক্ষ করেই গুলি ছোড়া হয়েছিল। গুলি এসে লাগে ওই যুবকের বাঁ-হাতের কনুইয়ের নীচে। সঙ্গে সঙ্গে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়রাই তাকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
নিজস্ব চিত্র।
ঠিক কী কারণে এই ঘটনা? পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা থেকে অনুমান, ছাঁট-লোহার কারবারে যুক্ত ছিল দু’পক্ষই। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিবাদ থেকেই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবারই দু’পক্ষ নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য কেরানিতলা এলাকাটিকে বেছেছিল। কারণ, এই এলাকায় সে ভাবে নজরদারি থাকে না। চার দিকে বড় রাস্তা চলে গিয়েছে। দু’পাশে একের পর এক দোকান। পুলিশের ওই সূত্রই জানাচ্ছে, প্রদীপের সঙ্গে আরও এক জন বুধবার সকালে কেরানিতলায় এসেছিল। তার নাম প্রশান্ত ঘোষ। ঘটনার পর থেকে প্রশান্ত-রও কোনও খোঁজ নেই। পুলিশের দাবি, এই ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া গেলে তদন্ত আরও এগোবে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রদীপও পুলিশকে জানিয়েছে, প্রশান্তই তাকে নিয়ে এসেছিল। জানিয়েছিল, যার সঙ্গে লেনদেন হবে সে কেরানিতলায় অপেক্ষা করবে। যে গুলি ছুড়েছে, সেই রাধেশ্যামের সঙ্গেও আরও এক জন ছিল। তদন্তে নেমে তার নাম জানারও চেষ্টা করছে পুলিশ।
তবে, দু’পক্ষ কী ভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছল, সে নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। স্থানীয় মানুষের একাংশের বক্তব্য, গুলি চালানোর পরে রাধেশ্যামরা দু’জন মোটরবাইকে কেরানিতলা থেকে জজকোর্ট রোড ধরে পালিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ জানাচ্ছেন, পালানোর সময়ে ওই দু’জন একটি চার-চাকার গাড়ি ব্যবহার করেছিল। প্রদীপ পুলিশকে জানিয়েছে, প্রশান্তকে নিয়ে সে এ দিন সকালেই খড়্গপুর থেকে বাসে মেদিনীপুরে পৌঁছয়। প্রদীপ পুলিশকে আরও জানিয়েছে, তার সঙ্গে একটি ব্যাগ ছিল। সেই ব্যাগে দু’লক্ষ টাকাও ছিল। ঘটনার পর রাধেশ্যামরাই ওই ব্যাগ নিয়ে পালায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, রাধেশ্যামের সঙ্গে প্রদীপের আগেও যোগাযোগ ছিল। মাঝে কোনও কারণে যোগাযোগ নষ্ট হয়। দু’জনের মধ্যে শত্রুতাও তৈরি হয়। তার জেরেই এ দিনের ঘটনা।
ঘটনাস্থলের অদূরেই চায়ের দোকান রয়েছে আজিজুল রহমানের। আজিজুল বলেন, “রাস্তার এক পাশে দু’পক্ষের বচসা হচ্ছিল। হঠাৎই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। কিছু বোঝার আগেই ওরা পালায়।” ঘটনার পর শহরে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চললেও বুধবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.