গুজরাত দাঙ্গা
আদালত অবমাননার প্রশ্নে নোটিস, অস্বস্তিতে মোদী
গুজরাত দাঙ্গা পিছু ছাড়ছে না নরেন্দ্র মোদীর।
সম্প্রতি গুজরাত দাঙ্গার একটি তদন্তে নরেন্দ্র মোদীর ‘ক্লিনচিট’ পাওয়ার ইঙ্গিত দেখেই বিজেপি নেতৃত্ব যখন তাঁকে উত্তরপ্রদেশে প্রচারে নামাতে তৎপর, তখনই নতুন অস্বস্তি। দাঙ্গায় ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালত অবমাননার অভিযোগে মোদী প্রশাসনকে আজ নোটিস পাঠিয়েছে গুজরাত হাইকোর্ট। আগামী সপ্তাহে ফের গুলবার্গ সোসাইটি হত্যাকাণ্ড মামলার শুনানি রয়েছে। ওই মামলায় বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) কাছে মোদীর বিরুদ্ধে মামলা চালানোর জন্য সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই বলে বিজেপি দাবি করছে ঠিকই। তবু মামলার গতিপ্রকৃতি কোন দিকে এগোয় তা নিয়ে কিছুটা চিন্তায় বিজেপি শিবির। ফলে দলের মধ্যেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে মোদীকে প্রচারে পাঠানো যুক্তিসঙ্গত হবে কি না।
দিন কয়েক আগেই দাঙ্গা মোকাবিলায় নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে ভর্ৎসনা করে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ৫৫টি ধর্মীয় স্থান গড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে গুজরাত হাইকোর্ট। তারপর আজ এই নোটিস। আদালতের ওই রায় নিয়ে প্রকাশ্যে বিজেপি নেতারা মুখ খুলতে না চাইলেও, দল মনে করছে, আদালত অবমাননার মামলায় প্রশাসনিক ব্যর্থতা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আরও সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করলেই এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো যেত। সে ক্ষেত্রে সামগ্রিক ভাবে মোদী সরকারের নাম জড়িয়ে যেত না। উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন চলাকালীন কংগ্রেসের আক্রমণের মুখে পড়তে হত না বিজেপি শিবিরকেও।
গুজরাত দাঙ্গায় আমদাবাদ শহরের রাখিয়াল এলাকায় দোকান হারানো ৫৬ জন ব্যক্তি ক্ষতিপূরণের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান। গুজরাত হাইকোর্টও ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এঁদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু জেলা প্রশাসন ক্ষতিপূরণের আবেদন খারিজ করে দেয়। যুক্তি হিসাবে বলা হয়, আদালতের নির্দেশ আসার আগেই ওই ব্যক্তিদের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এর পরেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে ওই ব্যক্তিরা হাইকোর্টে অভিযোগে জানান, সব কাগজপত্র খতিয়ে না দেখেই আবেদন খারিজ করা হয়েছে। এবং আর্থিক সাহায্য না দিয়ে জেলা প্রশাসন আদালতের নির্দেশ অবমাননা করেছে। আজ আকিল কুরেশি এবং সি এল সোনির ডিভিশন বেঞ্চ জেলা প্রশাসনের কাছে জানতে চেয়েছে, কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমানননার মামলা শুরু করা হবে না? ১৪ মার্চের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে হবে।
এ দিন গুলবার্গ সোসাইটির গণহত্যাসংক্রান্ত মামলাও ছিল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে। ওই ঘটনার তদন্ত-রিপোর্টের কপি চেয়ে করা যাবতীয় আবেদনের নিষ্পত্তি এ দিন স্থগিত রেখেছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের গঠিত সিট-কে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, যে সব নথিপত্রের ভিত্তিতে তারা রিপোর্ট তৈরি করেছে, তা এক মাসের মধ্যে জমা দিতে হবে। তারপরেই রিপোর্ট আবেদনকারীদের দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনের মধ্যে সব মহলেরই নজর রয়েছে গুলবার্গ সোসাইটি মামলার দিকে। কারণ, ওই মামলায় সরাসরি নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গায় আমদাবাদ শহরের গুলবার্গ সোসাইটির আবাসনে ৬৯ জনকে পুড়িয়ে মেরেছিল জনতা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরি। স্ত্রী জাকিয়ার অভিযোগ, তাঁর স্বামী সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে ফোন করলেও সাহায্য আসেনি। সিট গত সপ্তাহেই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে জমা দেয়। সংবাদমাধ্যমের একাংশে দাবি করা হয়, রিপোর্টে মোদীকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
তার পরেই এই রিপোর্টের কপি চেয়ে আবেদন করেন জাকিয়া, সমাজসেবী তিস্তা শেতলবাড় এবং আইনজীবী মুকুল সিংহ। রিপোর্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র জমা দেয়নি সিট। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সব নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ইতিমধ্যে জাকিয়ার আইনজীবী ফের আর্জি জানান, রিপোর্টটি আদালতেই খুলে পড়ে শোনানো হোক। অন্তত তাঁকে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পড়তে দেওয়া হোক। ২৯ ফেব্রুয়ারি এ ব্যাপারে শুনানি হবে। তবে বিজেপি-র এক নেতার কথায়, “সুপ্রিম কোর্ট ওই মামলার নিয়মিত নজরদারি থেকে সরে আসায় দলের অনুমান, মোদীর বিরুদ্ধে মামলা চালানোর মতো সাক্ষ্যপ্রমাণ সিট পায়নি।” কংগ্রেস অবশ্য রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়া না পর্যন্ত বিষয়টি ছেড়ে দিতে রাজি নয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.