এলপিজি সঙ্কট কাছাড়-সহ উত্তর পূর্বে

রান্নার গ্যাসের সঙ্কট তীব্র চেহারা নিয়েছে বরাক উপত্যকা, ত্রিপুরা ও মিজোরামে। ইন্ডিয়ান অয়েল কর্তারা গুয়াহাটি পরিশোধনাগারের অগ্নিকাণ্ডকে এই সঙ্কটের কারণ বলে জানিয়েছেন। তবে তাঁরা আশাবাদী, আগামী ক’দিনে সঙ্কট কেটে যাবে। কিন্তু গ্যাস-ডিলারদের বক্তব্য, অন্তত পনেরো দিন দ্বিগুণ সরবরাহ না-হলে উদ্ভুত সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা যাবে না।
বড় দিন বলে মিজোরামে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহেও গ্যাসের গাড়ি নিয়মিত পাঠানো হয়। ফলে সেখানে এল পি জি সঙ্কটের শুরু জানুয়ারিতে। ত্রিপুরা ও বরাক উপত্যকায় এর আগেই তা চরম রূপ নেয়। কালোবাজারে একটি গ্যাস সিলিন্ডার এক-দেড় হাজার টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। নভেম্বরে বুকিং করা গ্যাস এখনও হাতে পাননি গ্রাহকরা। বাড়িতে গ্যাস পৌঁছনোর আশা ছেড়ে অনেকে রাত পোহাতেই খালি সিলিন্ডার নিয়ে ডিলারের দোকানে লাইন দিচ্ছেন। কোনও দিন বেলা ১২টা বা ১টায় গাড়ি আসছে। তাও লাইনে দাঁড়ানো মানুষের অর্ধেককেও দিতে দিতেই তা ফুরিয়ে যাচ্ছে। আবার, বহু দিন গাড়ি আসেনি বলে বেলা দুটোর পরে খালি সিলিন্ডার নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এই সুযোগে কালোবাজারিরা চড়া দাম হাঁকছে। মানুষ বাধ্য হয়েই নির্ধারিত দামের তিন চার গুণ বেশি দিচ্ছেন।
ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের এরিয়া ম্যানেজার কমলেশ দেবনাথ জানিয়েছেন, কাছাড় জেলার বড়খোলা বটলিং প্ল্যান্ট থেকে গ্যাসভর্তি সিলিন্ডার যায় বরাক উপত্যকা, ত্রিপুরা ও মিজোরামে। এখানে কোনও সমস্যা নেই। গুয়াহাটি শোধনাগারে প্রথমে মেরামতির জন্য এবং পরে আচমকা আগুন লেগে যাওয়ায় পনেরো দিন গ্যাসবাহী কোনও ট্যাঙ্কার বড়খোলায় আসেনি। অন্য সময় এই ধরনের সঙ্কটে হলদিয়া থেকে গ্যাস এনে গুয়াহাটির গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়। কিন্তু এ বার হলদিয়ার গ্যাসও মেলেনি। শোধনাগারের কাজকর্ম স্বাভাবিক হতেই গুয়াহাটি-সহ অসমের বড় শহরগুলির চাহিদা মেটানোর দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হয়। কমলেশবাবুর কথায়, বড়খোলা প্ল্যান্টে মাসে ৩ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গ্যাসের প্রয়োজন। জানুয়ারিতে এসেছে ২ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। তবে এখন দৈনিক চাহিদার অতিরিক্ত আসা শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান। তাই তাঁর আশা, দিন পনেরোর মধ্যেই সর্বত্র গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
কিন্তু এত দিন অপেক্ষা করতে নারাজ কাছাড় গ্রাহক সুরক্ষা সমিতি। সাধারণ সম্পাদক বিপ্লবকুমার গোস্বামী বলেন, ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁরা অপেক্ষা করবেন। এর মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক না-হলে পথে নামবেন। এই হুমকির পরেই নড়াচড়া শুরু হয়েছে জেলা প্রশাসনে। কাল সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে খাদ্য ও গণবণ্টন দফতরের সহকারী অধিকর্তা মনোজ বরা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এলপিজি নিয়ে সমস্ত ধরনের অনিয়ম রুখতে আজ থেকে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই বাড়ি-ঘরে সরবরাহের গ্যাস বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য মোট ৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৯টি গ্যাস সিলিন্ডার।
একই ভাবে গ্যাস নিয়ে রাজ্যের মানুষের অসন্তোষের কথা জানিয়েছে মিজোরাম ও ত্রিপুরা সরকার। ত্রিপুরার খাদ্য ও গণবণ্টন দফতর জানিয়েছে, গত মাসে তাদের চাহিদার অর্ধেকেরও কম সিলিন্ডার পাঠানো হয়েছে।
কমলেশবাবু বলেন, এই অঞ্চলে চার লেনের রাস্তা থাকলে এ ধরনের সঙ্কটে বড় বুলেট ট্যাঙ্কার এনে দ্রুত সমাধান করা যেত। এখানে তাও সম্ভব নয়। ফলে অপেক্ষার কোনও বিকল্প নেই। এর মধ্যে গোদের উপর বিষফোড়ার মতো গ্যাস ট্যাঙ্কারের চালক, সহকারী চালকরা রাস্তা সংস্কার, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিভিন্ন দাবিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট ডেকেছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.