পুলিশকে এসএমএসে ‘হুমকি’ দিলেন তৃণমূল নেতা
বিবাহিতা আত্মীয়াকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল আগেই। সেই মামলা প্রত্যাহারের জন্য পুলিশ আধিকারিককে এসএমএস-এ ‘হুমকি’ দিয়ে আরও ‘বিতর্কে’ জড়ালেন হিলির তৃণমূল নেতা জয়ন্ত সরকার।
দলে ‘ডাকাবুকো’ নেতা হিসাবেই ‘পরিচিত’ জয়ন্ত। ২০১০ সালে হিলি ব্লক অফিসে এক সরকারি আধিকারিককে মারধরের ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে তাঁর নাম। আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তিনি। মামলাটি এখনও বিচারাধীন। বছর তিনেক আগে আট বছরের ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান জয়ন্তবাবুর স্ত্রী। গত ১৫ ডিসেম্বর এক আত্মীয়া ও তাঁর সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে বেপাত্তা হয়ে যান বছর ছাব্বিশের জয়ন্ত। থানায় অপহরণ ও গয়না চুরির অভিযোগ দায়ের করেন মহিলার শ্বশুর। পুলিশ জানায়, জয়ন্ত পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে।
ইতিমধ্যে গত ১০ জানুয়ারি হিলি থানার ওসি সৌম্যজিত রায়ের মোবাইলে জয়ন্তবাবুর নামে একটি এসএমএস আসে। তাতে হুমকি দেওয়া হয়, অপহরণের মামলায় তাঁকে ‘বিরক্ত’ করা হলে এবং সে সবের জেরে তাঁর ‘মৃত্যু ঘটলে’ দায়ী থাকবেন ওসি এবং ওই থানারই পুলিশ অফিসার দেবাশিস মণ্ডল, তালিমুল হক, বিশ্বজিৎ সরকার। একই ভাবে ‘দায়ী’ থাকবেন ওই মহিলার স্বামী-শ্বশুর। ওসি বলেন, “বধূ অপহরণের মামলার তদন্ত থেকে সরে যেতে চাপ সৃষ্টি করতেই ওই মেসেজ পাঠানো হয়েছে।” জয়ন্তবাবুর নামে পাঠানো হলেও ফোন নম্বরটি তাঁরই কিনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এসএমএস পেয়ে সৌম্যজিৎবাবু যোগাযোগ করেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। হুমকি, চাপ সৃষ্টি, তদন্তে বাধার অভিযোগ এনে শনিবার ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে বালুরঘাটের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলা দায়ের করেন ওসি। মোবাইলে ‘হুমকি এসএমএস’ আসায় ইনফরমেশন ও টেকনোলজি আইনের ৬৭ ধারাতেও মামলা করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, জেলায় এই ধারায় মামলা প্রথম। এর ফলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠনে সুবিধা হবে। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার চিরন্তন নাথ বলেন, “এসএমএসে হুমকি দেওয়ায় পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে।”
জয়ন্তবাবুর পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বোনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ‘অপহৃতা’ মহিলার ভাসুরের। দু’বাড়িতে যাতায়াতও ছিল। জয়ন্তের বৌদি প্রতিমা বলেন, “ভাবতেই পারছি না, ও এমনটা করবে। লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে।” অন্য দিকে, ‘অপহৃতা’ মহিলার স্বামী বলেন, “ছেলেকে স্কুলে দেওয়া-নেওয়ার সময় জয়ন্তর সঙ্গে দেখা হত স্ত্রীর। বাড়িতেও যাতায়াত ছিল। কিন্তু এমন ঘটনা হবে, ভাবতেও পারিনি।”
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা যায়নি। ফোন বেজে গিয়েছে। এলাকায় নানা সময়ে ‘হুজ্জতির’ অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। স্থানীয় মানুষও জয়ন্তবাবুর আচরণে তিতিবিরক্ত। যদিও দলের একাংশ তাঁর পাশেই থেকেছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি রীতা রায় অবশ্য বলেন, “পরস্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠায় গত ১৮ ডিসেম্বর ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় জয়ন্তবাবুকে। উনি যদি পুলিশকে ফোনে হুমকি দিয়ে থাকেন, তবে অন্যায় করেছেন। ফোনে ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।” জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা হরিরামপুরের বিধায়ক বিপ্লব মিত্রও বলেন, “ঘটনার কথা জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি। তবে অভিযোগ সত্যি হলে ওই নেতার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.