পশ্চিমী ঝঞ্ঝার বাউন্সারে ফের জব্দ শীত
স্ট্রেলিয়ার পার্থে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মতো হুড়মুড়িয়ে হয়তো ভেঙে পড়ছে না। তবে তেমন দীর্ঘস্থায়ীও হচ্ছে না শীতের দ্বিতীয় ইনিংস। এবং এ বারেও উত্তর ভারতের পশ্চিমী ঝঞ্ঝার ঝাঁঝালো বোলিংই খলনায়ক। তার দাপটে শীতের বাড়বাড়ন্ত শেষ। কামড় জোরদার করার বদলে নিজের মধ্যেই নিজেকে গুটিয়ে নিতে চলেছে সে। ঠিক যে-ভাবে অন্য এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝার ঝাপটায় শীতের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গিয়েছিল বড়দিনের পরেই।
দক্ষিণের সঙ্গে সঙ্গে উত্তরবঙ্গেরও শীত-ভাগ্য খারাপ হতে চলেছে। সেখানে সকালে ঘন কুয়াশা হবে এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যাবে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর। উত্তরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অনেক কম থাকার সম্ভাবনা। ফলে দিনের বেলায় মানুষ শীতে কুঁকড়ে থাকবেন। রাতে কিন্তু সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আর তেমন নামবে না বলেই মনে করছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
অথচ বৃহস্পতিবার থেকে কড়া উত্তুরে হাওয়ার হাত ধরে গোটা বাংলায় শীতের দ্বিতীয় ইনিংসের গোড়াপত্তনটা ভালই হয়েছিল। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা লাফিয়ে লাফিয়ে নেমেছে। কলকাতায় রবিবার তা পৌঁছেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ দিনও হুগলি, বীরভূম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়া এবং বর্ধমানের শিল্পাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ ছিল। আকাশ যে-ভাবে পরিষ্কার হয়ে আসছিল, তাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তাতে বাদ সাধতে চলেছে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। আবহবিদেরা বলছেন, আজ সোমবার থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় উত্তুরে হাওয়ার তীব্রতা কমবে। কমবে শীত। বাড়তে থাকবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
যদিও রবিবার রাত পর্যন্ত আবহাওয়ার তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। তবে আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, উত্তর ভারত থেকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা যত বেশি পূর্ব ভারতের দিকে সরে আসবে, দক্ষিণবঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে পাল্লা দিয়ে। তবে ঝাড়খণ্ড ও বিহার সংলগ্ন দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে সোমবারেও কমবেশি শৈত্যপ্রবাহ থেকে যেতে পারে বলে আশা করছেন আবহবিদেরা।
পশ্চিমী ঝঞ্ঝার ঝাপটায় তা হলে কি কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে এ বারের মতো শেষ হয়ে যাচ্ছে শীত?
আবহবিদেরা বলছেন, দক্ষিণবঙ্গে সাধারণ ভাবে চার দফায় শীত থাকে। ডিসেম্বরে এক দফা, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় দফা, দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় সপ্তাহে আরও এক দফা এবং জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে শেষ দফা। এ বার ডিসেম্বরে শীতটা ছিল খুব সংক্ষিপ্ত। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শীত ছিলই না। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের অনেক উপরে। তারও মূলে ছিল একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। পশ্চিমী ঝঞ্ধা দুর্বল হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার শীতের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে। আবার অন্য একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জন্য সেই শীতটা এখন যেতে বসেছে।
তবে পুরোপুরি হতাশ হওয়ার কারণ নেই বলেই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। কেননা দক্ষিণবঙ্গে এখনও শীতের ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে। এবং তার ফেরায় পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করতে পারে পশ্চিমী ঝঞ্ঝাই। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, উত্তর ভারতে এখন যে-পশ্চিমী ঝঞ্ঝা রয়েছে, সেটি খুবই শক্তিশালী। তার জন্য কাশ্মীরে প্রবল তুষারপাত হচ্ছে। বরফ পড়ছে হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডেও। উত্তর-পশ্চিম ভারতের কোথাও কোথাও ঝড়বৃষ্টির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। হাওয়া দফতরের অধিকর্তা বলছেন, “ওই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা একই শক্তি নিয়ে পূর্ব ভারতে পৌঁছে গেলে আর এক দফা জোরদার শীত পাওয়া গেলেও যেতে পারে।”
কী ভাবে সেটা হতে পারে?
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা বঙ্গোপসাগরে ফের উচ্চচাপ বলয় তৈরি করতে পারে। তা থেকে আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কাও থাকছে। তবে সেই উচ্চচাপ বলয় কেটে গেলে শীত তৃতীয় ইনিংস শুরু করতে পারে। কিন্তু পূর্ব ভারতে না-ঢুকে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা গতিপথ পরিবর্তন করলে কড়া শীতের আর যে কোনও আশাই থাকবে না, সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রাখছেন আবহবিদেরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.