হস্তশিল্প মেলায় ঘোষণা মানসের
ক্ষুদ্র কুটিরশিল্পের বাজার বাড়াতে স্থায়ী হাট রাজ্যে
ক্ষুদ্র, কুটিরশিল্পের বাজার বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। এই লক্ষ্যে রাজ্যের ৪ টি জায়গায় স্থায়ী হাট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যেখানে গোটা বছরই শিল্পীরা তাঁদের পসরা সাজিয়ে বসতে পারবেন। আপাতত শিলিগুড়ি, শান্তিনিকেতন, সল্টলেক ও দুর্গাপুরে এই হাট তৈরি হবে। এর মধ্যে দুর্গাপুরে স্থায়ী হাট তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও ধীরে ধীরে এই ধরনের হাট তৈরি হবে। মেদিনীপুরে রাজ্য হস্তশিল্প মেলার উদ্বোধনে এমনটাই জানালেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তাঁর কথায়, “আমরা ক্ষুদ্র কুটিরশিল্প বিপণনের ব্যবস্থা করছি। শিল্পীদের বেদনা দূর করে মর্যাদা দিতে হবে। বাজারের ক্ষেত্র বাড়লে সকলেই উপকৃত হবেন।” শুধু শহরে নয়, গ্রামেও স্থায়ী হাট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ বার মেদিনীপুরে বসেছে রাজ্য হস্তশিল্প মেলার আসর। শনিবার সন্ধ্যায় মেলার উদ্বোধন হয়েছে। চলবে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। মন্ত্রী ছাড়াও উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিমন্ত্রী মনোজ চক্রবর্তী, অতিরিক্ত জেলাশাসক অনুপ চন্দ্র প্রমুখ। মেলা প্রাঙ্গণে সব মিলিয়ে ৩১টি স্টল রয়েছে। প্রতি জেলার জন্য আলাদা স্টল তৈরি করা হয়েছে। স্টলগুলিতেই পসরা সাজিয়ে বসেছেন সংশ্লিষ্ট জেলার হস্তশিল্পীরা। আগে কলকাতায় রাজ্য হস্তশিল্প মেলার আসর বসত। পরে শিলিগুড়িতে এই মেলা শুরু হয়। মেদিনীপুরের মতো শহরে এ ধরনের মেলা এই প্রথম। স্বাভাবিক ভাবে তাই মেলা ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়েছে। মন্ত্রী অবশ্য বলেন, “আমি শুধু ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলাম। দফতরের আধিকারিকদের ধন্যবাদ। তাঁরা মেদিনীপুরের মতো শহরে হস্তশিল্প মেলার বন্দোবস্ত করেছেন।” মন্ত্রী আরও বলেন, “নামে ক্ষুদ্র শিল্প হলেও এই দফতরের গুরুত্ব অনেক। এই শিল্পই দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের ৬ কোটি মানুষ ক্ষুদ্রশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। উৎপাদিত পণ্যের ৪০ শতাংশই এই ক্ষুদ্রশিল্পের আওতায় পড়ে।”
এত কিছুর পরেও দেশে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পীদের দুর্দশার শেষ নেই। সেই কথা মেনে মন্ত্রী বলেন, “শিল্পীরা তাঁদের হাতে তৈরি পসরা নিয়ে বিভিন্ন মেলায় যান। কোথাও ভাল বিক্রি হয়। কোথাও হয় না। তবে, শিল্পী-মন ঠিক বেঁচে থাকে। আমরা সব রকম ভাবে বাজার বাড়ানোর চেষ্টা করছি। রাজ্যের শিল্পীরা যাতে বিভিন্ন রাজ্যের মেলাতে, এমনকী বিভিন্ন দেশের মেলাতে যোগ দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
মন্ত্রী এ দিন জানান, রাজ্য সরকার প্রতিটি শিল্পীকে পরিচয়পত্র দেবে। স্বাস্থ্যবিমা কার্ড দেবে। শিল্পীরা ক্রেডিট কার্ডও পাবেন। এই কার্ড দেখিয়েই ব্যাঙ্ক থেকে ৫ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে। ব্যাঙ্কগুলি অধিকাংশ সময়ই ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ। মানসবাবুর আশ্বাস, “এমন কিছু হলে আমাদের জানাবেন। আমরাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।” তাঁর কথায়, “ক্ষুদ্র কুটির শিল্প আমাদের গর্বের। এই গর্বের শিল্পকে আরও প্রসারিত করতে হবে। মুর্শিদাবাদ, মালদহের সিল্ককে আরও উঁচু স্থানে তুলে ধরতে হবে। মাদুর শিল্পকে আরও প্রসারিত করতে হবে। মুর্শিদাবাদে মেগা টেক্সটাইল পার্ক হবে। মালদহে সিল্ক পার্ক হবে। এ সব নতুন রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতি পূরণ করবই।”
প্রথম দিন থেকেই মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় জমতে শুরু করেছে। শীত উপেক্ষা করে নানা জেলার হস্তশিল্পের কারুকার্য দেখতে শহরের কলেজ মাঠে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মেলা প্রাঙ্গণের এই চেহারা দেখে খুশি কর্তৃপক্ষও। জেলা শিল্প কেন্দ্রের এক আধিকারিকের কথায়, “আমাদের আশা, ভিড় আরও বাড়বে। এ ধরনের মেলা মেদিনীপুরে প্রথম। তাই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই প্রচুর মানুষ আসবেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও থাকছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.