বিরোধে বন্ধ কারখানা
শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে বিরোধের জেরে রেল লাইনের স্লিপার তৈরি একটি বেসরকারি কারখানা ইনটাক সমর্থকেরা বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মালদহের চামাগ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। কারখানা মালিক সব্যসাচী মুন্সির অভিযোগ, স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের একাংশের দাবি মেনে ১০ জন শ্রমিককে নিয়োগ করতে তিনি রাজি হননি। তার পরেই কারখানায় পতাকা টাঙিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়ে কারখানা খোলানোর ব্যাপারে সাহায্য পাননি বলে দাবি করেছেন সব্যসাচীবাবু। সোমবার তিনি গোটা বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন। মালদহের সহকারী শ্রম কমিশনার দেবু কর বলেন, “কারখানা খোলার ব্যাপারে ২৩ ডিসেম্বর কারখানার মালিক ও আন্দোলনকারীদের নিয়ে বৈঠকে বসা হয়েছিল। আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবিতে অনড় থাকায় বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। ফের ৫ জানুয়ারি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছে।” কারখানা বন্ধ করার বিষয়টি সমর্থন করেননি মালদহ জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী। তিনি বলেন, “কারাখানা বন্ধের বিষয়টি জানি না। আমরা কারখানা বন্ধ করার পক্ষপাতি নই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।” তবে জেলা কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, ওই কারখানা মালিক সিপিএমের সমর্থক কংগ্রেসের কারও কোনও অনুরোধ রাখেন না। সাংসদের বক্তব্য, “দীর্ঘদিন আমি ওই এলাকার বিধায়ক ছিলাম। এখন সাংসদ। কারখানায় কংগ্রেস মনোভাবাপন্ন শ্রমিকদের নেওয়ার জন্য আমি নিজে ওই মালিকের বাড়িতে ৩-৪ বার গিয়েছি। কারখানার মালিক আমাদের একটা লোক নেননি। উল্টে আমাদের লোককে কারখানা থেকে ছাড়িয়ে দিচ্ছেন।” সাংসদের অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন সব্যসাচীবাবু। তিনি বলেন, “সাংসদ কখনও আমার বাড়িতে আসেননি। একজনকে পাঠিয়েছিলেন। যিনি আগে কাজ করতেন। তাঁকে ফের কারখানায় নেওয়ার ্নুরোধ করেছিলেন। সেটা সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া, আমি সিপিএম করলে এর আগে সিটু কারখানা বন্ধ রেখেছিল কেন?” প্রসঙ্গত, বাম সরকারের আমলেও সিটুর আন্দোলনের জেরে ওই কারখানা একবার বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কারখানা খোলে। সরকার পরিবতর্নের পর এ বার শাসক জোটের শরিক দলের আন্দোলনের জেরে কারখানা বন্ধ হয়েছে। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ মালদহ মাচের্ন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু। তিনি বলেন, “দুভার্গ্যজনক ঘটনা। এটা কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না। জেলা প্রশাসন কারখানা খুলতে উদ্যোগী না-হলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার চামাগ্রাম স্টেশন লাগোয়া রেলের কংক্রিটের স্লিপার তৈরির কারাখানা চলছে ২০ বছরের বেশিদিন ধরে। এখন ওই কারখানায় ২০০ জন স্থায়ী, ৫০ জন চুক্তির ভিত্তিতে এবং ৫০ ক্যাজুয়াল শ্রমিক কাজ করছেন চার শিফটে। প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৪৭০ টি স্লিপার তৈরি হয় ওই কারখানায়। ওই কারখানার মালিক জানিয়েছেন, এই কারখানা থেকে বছরে ২ লক্ষ স্লিপার রেলকে সরবরাহ করা হয়। পূর্ব রেলের মালদহ ডিভিশনের ডিআরএম হর্ষ কুমার বলেন, “চামাগ্রাম কারখানা থেকে বেশির ভাগ স্লিপার পূর্ব রেলে সরবরাহ করা হয়। কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে স্লিপার সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার ফলে লাইন মেরামতের কাজ কিছুটা ব্যাহত হবে। যদি কারখানা না খোলে তবে রাজ্যের বাইরের কোনও কারখানা থেকে স্লিপার এনে কাজ চালাতে হবে।” মালদহের জেলাশাসক শ্রীমতি অর্চনা কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “৪ দিন ধরে কারখানা বন্ধ এটা তো আমি জানি না। কারা, কেন কারখানা বন্ধ করেছে, তা দেখছি।” মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল জানান, সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.